ফিচার
মূত্র জমিয়ে স্বর্ণের খোঁজ !
ছাপোষা কেরানি পরেশচন্দ্র দত্তর হাতে আচমকাই পাথরটা এসে পড়েছিল। কাচের গুলি ভেবে প্রথমে সেটিকে হেলাফেলা করলেও পরে বুঝতে পারেন, এটি আসলে একটি পরশপাথর। যার ছোঁয়ার যে কোনও ধাতু স্বর্ণে রূপান্তিরিত হয়। রাতারাতি সুদিন ফিরেছিল পরেশের। তবে সে তো পরশুরামের গল্পে!
পরশুরামের গল্পের ভিত্তিতে গড়া সত্যজিৎ রায়ের ‘পরশপাথর’ কাল্পনিক হলেও সাড়ে তিনশো বছরেরও আরও আগে ‘পরশপাথর’-এর খোঁজে নেমেছিলেন বহু অ্যালকেমিস্ট। তাদেরই এক জন জার্মানির হেনিগ ব্র্যান্ড।
হেনিগ এমন এক অজানা উপাদানের খোঁজ শুরু করেছিলেন যার ছোঁয়ায় সীসা বা তামার মতো সাধারণ ধাতুও পরিণত হবে স্বর্ণে । সেই সঙ্গে যে উপাদান কাজ করবে সমস্ত রোগের প্রতিরোধক হিসেবে। অর্থাৎ দীর্ঘজীবন লাভের রাস্তা খুলে গেলো পাকাপোক্তভাবে! পশ্চিমা দেশগুলি একে ‘ফিলোসফার’স স্টোন’-এর তকমা দিয়েছে।
ওই অজানা উপাদানের খোঁজ করেছেন বহু অ্যালকেমিস্ট। হেনিগও ব্যতিক্রম নন। তার ধারণা ছিল যে মানুষের মূত্র থেকে ওই অজানা উপাদান তৈরি করা যায়। যার ছোঁয়ায় স্বর্ণ মেলে। অর্থাৎ মূত্রেই রয়েছে স্বর্ণ।
হেনিগের সম্পর্কে জানা যায়নি বিশেষ কিছু। তবে অনেকের মতে, তার জন্ম ১৬৩০ সালে। তার মৃত্যু নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। হতে পারে সেটা ১৬৯২ সাল কিংবা ১৭১০ সাল! জার্মানির হামবুর্গের বাসিন্দা হেনিগ কর্মরত ছিলেন সেনাবাহিনীতে। আবার জুনিয়র অফিসার হিসাবে যুদ্ধেও নাকি গিয়েছিলেন তিনি!
অনেকের দাবি, মধ্যবিত্ত পরিবারের হেনিগের প্রথাগত পড়াশোনা বেশি দূর পর্যন্ত না হলেও আজীবন নানা গবেষণায় মগ্ন ছিলেন হেনিগ। এমনও শোনা যায়, গবেষণার অর্থ জোটাতে মোটা অঙ্কের পণ নিয়ে বিয়ে করেছিলেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর আবার বিয়ে করেন। এ বার একজন বিত্তশালী বিধবাকে।
গবেষণাই ছিল হেনিগের জীবন। তবে স্বর্ণ পাওয়ার লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ মূত্র কোথায় পাওয়া যায়? অনেকের দাবি, পানশালার মালিকের সঙ্গে রফা করে মূত্র জোগাড় করার কাজে নেমেছিলেন হেনিগ।
স্বর্ণ তৈরিতে কী কী উপাদান প্রয়োজন বলে মনে করেছিলেন জার্মান অ্যালকেমিস্ট? এ ক্ষেত্রে এফ টি কেসলারের লেখা বইয়ের একটি রেসিপি হেনিগের চোখে পড়েছিল বলে দাবি করা হয়। তাতে ফটকিরি, পটাশিয়াম নাইট্রেট এবং মূত্রের মিশ্রণের কথা লেখা রয়েছে। যার মাধ্যমে ধাতুকে রুপোয় পরিণত করা যায় বলে দাবি করা হয়েছিল। যদিও ওই ফর্মূলা কাজ করেনি।
নিজেই গবেষণাগারে স্বর্ণ তৈরির কাজে নেমেছিলেন হেনিগ। গবেষণার জন্য ওই পানশালা থেকে বিয়ারখেকো লোকজনের তাজা মূত্র সংগ্রহ করতে শুরু করেন। এর পর তা বাড়ির বেসমেন্টে জমা করতেন। এক-আধ লিটার নয়, দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবে নাকি দেড় হাজার গ্যালন মূত্র জমা করেছিলেন তিনি।
একবার ভাবুন তো, হেনিগের এই মূত্রাধারের জেরে তার বাড়ির আশপাশে কেমন ‘সুবাস’ ছড়াত! তবে সে যুগে নাকি এমন উদ্ভট শখ অনেকেরই ছিল। সে সময় সার তৈরির কাজে, চামড়া নরম করতে মূত্রের ব্যবহার করা হত। এমনকি, দাঁত পরিষ্কারের জন্য মূত্র ব্যবহার করতেন অনেকে।
তবে হেনিগের লক্ষ্য ছিল অন্য। ১৬৬৯ সাল নাগাদ থেকে মূত্রের থেকে এক উপাদান খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি।
অনেকের দাবি, তাজা মূত্রের সংগ্রহের পর তা বেশ কয়েক দিন রেখে দিতেন তিনি। তা থেকে তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ বের হতে থাকলে সেই মূত্র ফুটানো শুরু করতেন। এক সময় তা ঘন সিরাপের মতো হয়ে এলে ফুটানো বন্ধ করতেন।
ওই ঘন থকথকে মূত্রকে এর পর গরম করতে শুরু করতেন হেনিগ। লালচে তেলের মতো হয়ে এলে তা ছেঁকে বের করে নিতেন। ঠান্ডা হয়ে এলে তার উপরের অংশ কালো রঙের স্পঞ্জের মতো হত। নীচের দিকটা দেখাত অনেকটা জমানো লবনের মতো। এর পর লবনের অংশটি বাদ দিয়ে উপরের কালো অংশের সঙ্গে লাল তেল মিশিয়ে আবারও ফুটানো হত। এ বার ওই মিশ্রণটি টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে কড়া আঁচে গরম করতেন তিনি।
এ ভাবেই পুরো প্রক্রিয়ার পর সাদাটে ধোঁয়া বার হতে থাকলে তেল আলাদা হয়ে যেত। এ বার যে উপাদানটি বের হয়ে আসত, সেটি পানির সংস্পর্শে এসে চকচকে একটি কঠিন আকার নিতো। ওই পদার্থ নিয়েই এককালে হামলে পরেছিল পুরো পৃথিবী।
কী সেই পদার্থ? হেনিগ তার নাম দিয়েছিলেন ‘ফসফরাস’। গ্রিক ভাষায় যার অর্থ আলো বহনকারী। ওই চকচকে অংশটি অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসামাত্রই জ্বলে উঠত। এমনকি, অন্ধকারেও তা জ্বলজ্বল করত।
স্বর্ণ তৈরিতে ব্যর্থ হলেও পুরো দুনিয়া তাকে চেনে ফসফরাসের আবিষ্কর্তা হিসাবে। বিস্ফোরক তৈরিতে এই অতি শক্তিশালী উপাদান কাজে লাগানো হয়।
এরপরও স্বর্ণ তৈরির চেষ্টা বন্ধ করেননি হেনিগ। আচমকাই ওই আবিষ্কারের পর তা নিয়ে মাতামাতির বদলে গোপন রেখেছিলেন হেনিগ। পরে জার্মানির ড্রেসডেনের এক ব্যক্তিকে তা চড়া মূল্যে বিক্রি করে দেন। তবে বহু যুগ পরে হেনিগের ওই আবিষ্কারই পরিণত হয় অমূল্য রতনে!
অনন্যা চৈতী
ফিচার
সীমার মাঝে অসীম ‘মা’
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ঠিকই লিখেছিলেন ‘যেখানেতে দেখি যাহা, মা-এর মতন আহা। মার বড়ো কেউ নাই –কেউ নাই কেউ নাই! নত করি বল সবে মা আমার! মা আমার!’ আর সেটাই তো মা ছাড়া আপন আর কে’ই বা আছে।
এক অক্ষরের একটি ছোট্ট শব্দ ‘মা’। অথচ ছোট্ট শব্দটির অর্থ কতোটা অসীম, অদ্বিতীয় তা প্রকাশের ভাষাও এখনো তৈরি হয়নি। যার সাথে কারোর তুলনা চলে না। সীমার মাঝে অসীম হলো ‘মা’। মা মানে মমতা, মা মানে ক্ষমতা, মা মানে নিরাপত্তা, মা মানে নিশ্চয়তা, মা মানে আশ্রয়দাতা, মা মানে সকল আশা, মা মানে এক বুক ভালোবাসা। মা এক বর্ণের এক বিশাল নাম। অস্তিত্বের নিরাপত্তার নাম। সন্তানের জন্য মা শাশ্বত।
আজ পৃথিবীর সকল মা’য়েদের জন্য একটি বিশেষ দিন। দিনটি হলো বিশ্ব মা দিবস। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস। এ হিসাব অনুযায়ী, আজ ১২ মে সারাবিশ্বে পালন করা হচ্ছে মা দিবসটি। দিনটিতে মাকে বিশেষভাবে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর দিন।
বিশেষ এই দিবসটি কীভাবে এলো তা হয়তো অনেকেরই অজানা। ইতিহাস বলছে, অনেক পথ পেরিয়ে এই দিবসটি নতুন রূপ পেয়েছে। ধারণা করা হয়, মা দিবসের সূচনা প্রাচীন গ্রিসের মাতৃরূপী দেবী সিবেলের এবং প্রাচীন রোমান দেবী জুনোর আরাধনা থেকে।
এছাড়া ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য অনেক আগে থেকেই মায়েদের এবং মাতৃত্বকে সম্মান জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট রোববারকে বেছে নিয়েছিলেন। ষোড়শ শতকে এটি ইংল্যান্ডে মাদারিং সানডে বলে পরিচিতি লাভ করে। অনেকেই ক্যাথলিক পঞ্জিকা অনুযায়ী এটিকে লেতারে সানডে যা লেন্টের সময়ে চতুর্থ রোববারে পালন করতে শুরু করে।
তবে ইতিহাস বিদদের মতে, জুলিয়া ওয়ার্ড হোই রচিত “মাদার্স ডে প্রক্লামেশন” বা “মা দিবসের ঘোষণাপত্র” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের গোড়ার দিকের প্রচেষ্টাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
১৮৭০ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পৈশাচিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়া একটি ঘোষণাপত্র লেখেন। এরপর যুদ্ধ শেষে পরিবারহীন অনাথদের সেবায় ও একত্রীকরণে নিয়োজিত হন মার্কিন সমাজকর্মী আনা রিভিজ জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মেরি জার্ভিস।
এ সময় তারা জুলিয়া ওয়ার্ড ঘোষিত মা দিবস পালন করতে শুরু করেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আনা রিভিজ জার্ভিস ১৯০৫ সালের ৫ মে মারা যান।
মায়ের মৃত্যুর পর আনা মেরি জার্ভিস মায়ের শান্তি কামনায় ও তার সম্মানে সরকারিভাবে মা দিবস পালনের জন্য প্রচারণা চালান। তিন বছর পর ১৯০৮ সালের ১০ মে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার আন্দ্রেউজ মেথডিস্ট এপিসকোপাল চার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম মা দিবস পালন হয়।
এরপর ১৯১২ সালে এই দিবসটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচার শুরু হয়। এই প্রচার ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কানাডা, মেক্সিকো, চীন, জাপান, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকায়।
এ প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১৪ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস ও জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই প্রতিটি দেশে মায়েদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এই দিনটি উৎসর্গ করা হয়। দেশে দেশে পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস।
টিআর/
ফিচার
প্রিয় মানুষের আলিঙ্গনে বাড়ে আত্মবিশ্বাস
বলিউডের ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ চলচ্চিত্রের কথা মনে আছে কি? যেখানে জনপ্রিয় অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ‘জাদু কি ঝাপ্পি’ বলে জড়িয়ে ধরেন সামনের মানুষটিকে। মুন্না ভাই বিশ্বাস করেন এই আলিঙ্গন এনে দেয় প্রশান্তি, বাড়িয়ে দেয় নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস।
এ তো গেলো চলচ্চিত্রের কথা। বিভিন্ন গবেষণাতেও দেখা গেছে, প্রীতিপূর্ণ আলিঙ্গন মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। এর মাধ্যমে নির্গত হয় অক্সিটোসিন হরমোন, যার ফলে মানসিক অবসাদ কমে গিয়ে মনে আনন্দের অনুভূতি তৈরি হয়। দুশ্চিন্তা কমে গিয়ে স্বস্তি আসে। শুধু তাই নয় আন্তরিক আলিঙ্গন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। কমায় রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি, সেই সঙ্গে দূর করে নানা শারীরিক ব্যথাও।
আজ ৬ জানুয়ারি, আলিঙ্গন দিবস। আমেরিকায় দিনটি উদযাপিত হয়। অবশ্য কবে কীভাবে এই দিবসের চল হয়েছিল তা জানা যায় না। তবে আলিঙ্গন বলতে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীর রোমান্টিক আলিঙ্গনকে বোঝাচ্ছে না।
আত্মীয় বা বন্ধুর সঙ্গে আলিঙ্গনেও বাড়ে আন্তরিকতা। সম্পর্কগুলো আরও গভীর হয়, মজবুত হয়। সাধারণত, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনকে শুভেচ্ছা জানানোর সময়, বিদায় জানানোর সময় বা কাউকে অভিনন্দন জানানোর সময় আমরা আলিঙ্গন করি। কাউকে সান্ত্বনা দিতে বা সহানুভূতি জানাতেও আমরা আলিঙ্গন করি।
তীব্র শীত মৌসুমে একটুখানি উষ্ণতার অভাবে কষ্ট পাচ্ছে কত অসহায় মানুষ। সেসব শীতার্ত মানুষের মধ্যে আলিঙ্গনের উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে এ দিবসের যাত্রা শুরু। আজকের দিনটি কিন্তু পালন করতে পারেন নিজের যতটুকু সাধ্য আছে তা নিয়েই শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে চাঁদা তুলে কিনতে পারেন কিছু লেপ-কম্বল। যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছে, তাদের বিলিয়ে দিতে পারেন। এভাবেই ছড়িয়ে দিতে পারেন আলিঙ্গনের উষ্ণতা।
ফিচার
শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করেও ঠেকানো যায়নি যে নির্বাচন (ভিডিও)
৮ম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর। এই হিসেবে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ছিল ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল অনেক। আন্তর্জাতিক মহলেও ছিল ব্যাপক আগ্রহ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দিন আহমদের অধীনে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ৩৮টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। এতে আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসন পায়। অন্যদিকে বিএনপি পায় মাত্র ৩০টি আসন। প্রাপ্ত ভোটের ক্ষেত্রেও ছিল বিশাল ব্যবধান। আওয়ামী লীগ পায় ৪৮ দশমিক শূন্য ৪ভাগ ভোট এবং বিএনপি ৩২ দশমিক পাঁচ শূন্য ভাগ ভোট।
নির্বাচনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭টি আসন। সবচেয়ে বেশি ভরাডুবি হয়েছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর। ৩৯টি আসনে লড়াই করে মাত্র দুটি আসন পায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের শরীক এই দলটি।
নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ পায় ৩টি আসন ।বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ ২টি করে আসন এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি একটি করে আসন পায়।০৪টি আসন পায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বিতীবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সংসদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর।
নির্বাচনের আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে সংবিধানে একটি বড় সংশোধনী আনে বিএনপি সরকার।আওয়ামী লীগের অভিযোগ ছিল-নিজেদের পছন্দের প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে রেখে নির্বাচনের সময় সুবিধা আদায়ের জন্য বিএনপি এটি করেছে। তাই বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে আওয়ামী লীগ।
এই আন্দোলনের মাঝেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতার জন্য একাধিক বৈঠক করেছেন ঢাকার নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।কূটনৈতিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত পেট্রেসিয়া বিউটেনিস।
তবে সমঝোতা না হওয়ায় সংঘাতময় এক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী।যেটি ওয়ান-ইলেভেন নামে বহুল পরিচিত।জারি করা হয় জরুরী অবস্থা।এই জরুরি অবস্থার মধ্যেই সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ত্ত্ত্বাবধায়ক সরকার।
৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের সরকার প্রশংসিত হলেও তাদের রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল।অভিযোগ রয়েছে,মাইনাস-টু ফর্মূলা কার্যকর করতে অর্থাৎ শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতির বাইরে রেখে নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাদের গ্রেপ্তার করার পরও ওই চেষ্টা সফল হয়নি।
এরপর মূল নেতৃত্বের বাইরে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে আরেকটি অংশ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলে।যারা ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। পরবর্তীতে সবদলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিএনপি-আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসে সফল হন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে পারেনি বিএনপি।দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়।অন্যদিকে আওয়ামী লীগে তখন উল্লাস আর উচ্ছ্বাস।
ওই সংসদ নির্বাচনকে বেশ দ্রুততার সাথে স্বীকৃতি দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি নির্বাচনকে ‘বিশ্বাসযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন’ বলে বর্ণনা করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট -এনডিআই।
- এশিয়া2 days ago
দুর্ঘটনায় উল্টে গেলো গাড়ি, রাস্তায় ছড়িয়ে পড়লো কোটি কোটি টাকা
- টুকিটাকি2 days ago
মাকে গুলি, স্ত্রীকে হাতুড়ি আর ৩ সন্তানকে ছাদ থেকে ফেলে খুন
- জাতীয়6 days ago
১০০ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি করবে টিসিবি
- আন্তর্জাতিক5 days ago
স্বামীর গোপনাঙ্গ পুড়িয়ে নির্যাতন
- ঢাকা6 days ago
হেলে পড়েছে ৬ তলা ভবন, দুর্ঘটনার আশঙ্কা
- বলিউড6 days ago
ভাই-বোনেরা গাঁজা একদম ছুবে না: হানি সিং
- বলিউড2 days ago
আরবাজ-সোহেলের পর বিয়ে ভাঙছে সালমানের বোন অর্পিতার?
- ঢালিউড3 days ago
মেয়ের মা হলেন পরীমণি