সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ফের অবরোধ দিলো বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো। পঞ্চমদফার অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, বিরোধী দলের ভয়ে ভীত হয়ে সরকার পালানোর পথ খুঁজছে। সরকার দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরোধীদলের ওপর চড়াও হওয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচনে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অতীতের মতো আবারও অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করছে।
ক্ষমতা হারানোর ভয়েই আওয়ামী লীগ অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনে ভয় পাচ্ছে। ঢালাওভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের মহাযজ্ঞ চলছে।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে সেই সমাবেশ থেকে ২৯ অক্টোবর হরতাল ডাকে দলটি।
একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর সারা দেশে অবরোধ করে তারা। আলাদা কর্মসূচি দিয়ে সঙ্গে যোগ দেয় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলও একই কর্মসূচি দেয়। সেই অবরোধ শেষে গত ৫ নভেম্বর নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকা হয়।
গেলো ৬ নভেম্বর তৃতীয় দফায় টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ঘোষণা দেয় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এরপর শনিবার চতুর্থ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ দেয় বিএনপি ও সমমনারা।
২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন থেকে অবরোধ কর্মসূচির শুরুর পর থেকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন সড়কে বাস, ট্রাক, অটোরিকশায় আগুন দেওয়ার এবং ভাঙচুর করার খবর এসেছে।
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করার পর ২০১৫ সালে ওই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ পালন করে বিএনপি-জাসায়াত জোট।
তিন মাসের অবরোধে নাশকতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। বহু গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারা হয়। সরকার হঠাতে না পেরে ২০১৮ সালে তারা নির্বাচনে অংশ নেয়। এবার সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আবারও তারা আন্দোলন করছে।