জাতীয়
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশন থেকে একযোগে সম্প্রচারিত হয়।
জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পূর্ণ বিবরণ নীচে দেয়া হল-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় দেশবাসী,
আসসালামু আলাইকুম।
বছর ঘুরে আবার এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ’ – জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী এই গান গেয়ে আমরা স্বাগত জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরকে। আমি বাংলাদেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ঈদ মোবারক।
এ পবিত্র দিন উপলক্ষে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জাতীয় চার নেতার প্রতি। স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। শ্রদ্ধা জানাই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
আমি স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কাল্রাতে ঘাতকদের হাতে নিহত আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ভাই-মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও দশ বছরের ছোট্ট শেখ রাসেলকে- কামাল ও জামালের নবপরিণীতা বধু-সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরসহ সকল শহিদকে।
প্রিয় দেশবাসী,
বিগত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ব এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ নামক এক মরণঘাতী ব্যাধি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ভাইরাস একদিকে যেমন অগণিত মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতিসাধন করছে মানুষের জীবন-জীবিকার। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতির উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এই ভাইরাস।
গত বছরের শেষদিকে যখন বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ অনেকটা কমতে শুরু করেছিল, তখন সকলের সঙ্গে আমরাও আশান্বিত হয়েছিলাম যে বিশ্ববাসী বুঝি এই মরণঘাতী ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। কিন্তু মার্চের মাঝামাঝি থেকে দ্বিতীয় ঢেউ আমাদের সকল পরিকল্পনা ও প্রত্যাশাকে নৎস্যাৎ করে দেয়।
মানুষের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। কাজেই জনসমাগম এড়াতে না পারলে এ রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়। এ কারণে কষ্ট হবে জেনেও আমরা বাধ্য হয়েছি মানুষের স্বাভাবিক চলাচলের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে। দোকান-পাট, শপিং মলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখতে হচ্ছে। একই কারণে গণপরিবহন চলাচলের উপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এমনি এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে এবারও আমাদের ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হচ্ছে। আমরা ঈদ উদযাপন করবো, তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। কোনভাবেই এই ঈদ উদযাপন যাতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির উপলক্ষ হয়ে না উঠে, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। জনগণের প্রতি অনুরোধ: আপনারা আবেগের বশবর্তী হয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে যাবেন না। অনেকের কোন বাহ্যিক লক্ষণ না থাকায় আপনি বুঝতে পারবেন না আপনার পাশের ব্যক্তিটিই করোনাভাইরাস বহন করছে। এরফলে আপনি যেমন করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে পড়বেন, তেমনি আপনার নিকটাত্মীয় বা পাড়াপ্রতিবেশীকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন। মনে রাখবেন, সবার উপরে মানুষের জীবন। বেঁচে থাকলে আসছে বছর আবার আমরা আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবো।
এই ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে গত বছরের মত এ বছরও ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।
আসুন, আমরা সবাই যে যেখানে আছি সেখান থেকেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করি। বিত্তবান যাঁরা আছেন বা যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁদের প্রতি অনুরোধ, এই দুঃসময়ে আপনার দরিদ্র প্রতিবেশি, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান। তাঁদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আপনার সাহায্য হয়তো একটি পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবে। দেখবেন, তাঁদের হাসিমুখ আপনার হৃদয়মনকেও পরিপূর্ণ করে তুলবে ঈদের আনন্দে। মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে বড় কর্তব্য। আমরা যেন এই কর্তব্যকর্ম ভুলে না যাই। এই বাংলার এক কবি বলেছেন:
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসেনি কেউ অবনী ’পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।
প্রিয় দেশবাসী,
ডাক্তার, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ কয়েকটি পেশার কর্মীগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সামনে থেকে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যগণ এবং কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ লকডাউন বা চলাচলের বিধিনিষেধ বলবৎ করতে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ সরকারের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
সংবাদকর্মীগণ সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে সংবাদ পরিবেশনের কাজ করে যাচ্ছেন। সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বহু স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন সংস্থার কর্মকতা-কর্মচারি প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া, গত এক বছরে আমরা আমাদের অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছি। আমি সকলের রুহের মাগফিরাত ও আত্মার শান্তি কামনা করছি। শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা যেমন সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছি, তেমনি আক্রান্তদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা চিকিৎসা সক্ষমতা অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছি। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাসপাতালকেও আমরা করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সম্পৃক্ত করেছি। গত মাসে মহাখালী ডিএনসিসি মার্কেটে ২ হাজার শয্যার কোভিড-১৯ হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। গত বছর মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ১৬৬ জন ডাক্তার, ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স এবং প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেলা হাসপাতালগুলোসহ দেশের ১৩০টি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রিয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের ব্যবহার অত্যন্ত ফলপ্রসু বলে প্রমাণিত হয়েছে। কাজেই বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন। পাশাপাশি যথাসম্ভব ঘনঘন সাবানপানি দিয়ে হাত ধুইয়ে নিন অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবানুমুক্ত করুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সেই সাথে সাথে আপনারা নিজেরা গরম পানির ভাপ নিতে পারেন।
প্রিয় দেশবাসী,
সবচেয়ে কার্যকর এবং পরীক্ষিত অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকা’র টিকা দিয়েই আমরা গণটিকাকরণ কার্যক্রম শুরু করেছি। আপনারা জেনেছেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ টিকা রপ্তানির উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এমতাবস্থায়, আমরা বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে রাশিয়া এবং চিনের টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। উপহার হিসেবে চীনের কাছ থেকে টিকা ইতোমধ্যেই আমরা পেয়েছি। আমরা টিকা পাওয়ার জন্য আমেরিকার কাছেও অনুরোধ জানিয়েছি। বিশ্ব টিকাকরণ সংস্থা কোভ্যাক্সের কাছ থেকেও আমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টিকা পাবো। বিভিন্ন উৎস থেকে আমরা এক কোটি টিকা ক্রয়ের ব্যবস্থা নিয়েছি। খুব শিগগিরই দেশে টিকা আসতে শুরু করবে। তাছাড়া, দেশেই যাতে টিকা উৎপাদন করতে পারি সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। নিজেদের টিকা তৈরিতে কয়েক মাস সময় লাগবে। আমরা দেশের সকল নাগরিককে টিকার আওতায় নিয়ে আসবো, ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় দেশবাসী,
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শুধু মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে না, এই ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। সংক্রমণ এড়াতে লক-ডাউন বা সাধারণ ছুটি বলবৎ করতে হয়েছে।
আমরা গত বছর একটানা দুই মাসেরও বেশি সাধারণ ছুটি বলবৎ করেছিলাম। দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর গত মাসের ৫ তারিখ থেকে পর্যায়ক্রমে লক-ডাউন কার্যকর করা হয়েছে। এরফলে অগণিত মানুষের রুটি-রুজির উপর আঘাত এসেছে। কিন্তু এই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া বিকল্প কোন উপায় ছিল না। কারণ, আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, প্রতিটি দেশেরই স্বাস্থ্য অবকাঠামোর একটি নির্দিষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। হঠাৎ করে দ্রুতগতিতে রোগী বাড়তে থাকলে তখন সেবা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। আপনারা দেখেছেন, উন্নত দেশগুলো পর্যন্ত করোনা রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেজন্য আমাদের কোনোভাবেই রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেওয়া যাবে না।
তবে আমরা জীবন ও জীবিকার মধ্যে একটা সামঞ্জস্য বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, তাঁদের সহায়তার জন্য সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
গত বছর করোনাভাইরাস আঘাত হানার পর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত সর্বমোট এক লাখ ঊনত্রিশ হাজার ছয়শত তের কোটি টাকার সহায়তা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ২১টি খাতে সর্বমোট ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর অনুদান বাবদ ৮ হাজার ২৬০ কোটিরও বেশি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
গত বছর সাময়িক কর্মহীন ৩৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে আড়াই হাজার টাকা করে মোট ৯১২ কোটি ৫০ লাখ দেওয়া হয়েছে। এ বছরও সমসংখ্যক মানুষকে একই হারে ৯১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৬০৭ কোটি টাকা বিতরণ করেছে।
দিনমজুর, পরিবহন শ্রমিক, সাধারণ শ্রমিক, নি¤œআয়ের মানুষ, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন, অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সেবকগণ, বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-ইত্যাদি পেশার মানুষজন এ সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এসেছেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ১ম পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৬৫,৬৫৪ টি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩,৪৩৪ টি গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে। এ নিয়ে মোট গৃহের সংখ্যা দাঁড়াবে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৮। বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় এ পর্যৗল্প আমরা সাড়ে তিন লাখ পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছি।
করোসাভাইরাস মহামারির সময়েও সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাধীন বিভিন্ন ভাতা, খাদ্য কর্মসূচি, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি-উপবৃত্তি প্রদানসহ আমরা সকল ধরনের সরকারি সহায়তা কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। এসব কর্মসূচির সুবিধাভোগী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ৭৮ লাখ। এরমধ্যে বিভিন্ন ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৭ লাখ, খাদ্য নিরাপত্তার আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১৮ লাখ এবং বৃত্তি-উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ কোটি ৫৩ লাখ।
প্রিয় দেশবাসী,
জনগণের সহযোগিতায় এবং আমাদের সরকারের সময়োচিত কার্যক্রম গ্রহণের ফলে আমরা বিগত এক বছর করোনাভাইরাস মহামারিজনিত আর্থিক অভিঘাত খুব ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছি।
আমরা যখন প্রথম ঢেউ সামলিয়ে অর্থনীতিকে সাবেক অবস্থার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসার পর্যায়ে, তখনই মার্চ মাসে দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে। এতে করে আমাদের প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধিতে হয়তো খানিকটা ভাটা পড়বে।
তবে আমাদের অভ্যন্তরীণ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসেবে এবারও আমরা আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হবো। গত সপ্তাহে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে।
চলতি বোরো মওসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশির ভাগ ধান ইতোমধ্যেই চাষীভাইদের ঘরে উঠেছে। সুষ্ঠুভাবে ধান কাটা-মাড়াইয়ের জন্য আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে হারভেস্টার বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের-ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় কৃষকদের ধান কাটতে সহায়তা করছে। পবিত্র রমজান মাসে আমাদের দলের কর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ইফতার এবং সেহরি বিতরণ করেছে।
চাষী ভাইয়েরা যাতে তাঁদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পান, সেজন্য এবার চালের সংগ্রহ মূল্য কেজি প্রতি ৪০ টাকা এবং ধানের মূল্য ২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রিয় দেশবাসী,
ঈদের দিন আনন্দের দিন। মনের সব কালিমা দূর করে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের সঙ্গে মিলিয়ে যাওয়ার মধ্যেই ঈদের আনন্দ। আজকের দিনে আমরা হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা, লোভ, অহমিকা, ক্রোধ, অহঙ্কার ইত্যাদি যাবতীয় কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেদের মুক্ত করে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার শপথ নেবো।
আবারও কাজী নজরুল ইসলামের কয়েকটি পংক্তি উদ্ধৃত করে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি:
পথে পথে আজ হাঁকিব, বন্ধু, ঈদ মোবারক! আসসালাম!
ঠোঁটে ঠোঁটে আজ বিলাব শিরনী ফুল-কালাম!
বিলিয়ে দেওয়ার আজিকে ঈদ!
আমার দানের অনুরাগে-রাঙা ঈদগা’রে!
সকলের হাতে দিয়ে দিয়ে আজ আপনারে-
দেহ নয়, দিল হবে শহিদ।।
আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আবারও সবাইকে ঈদ মোবারক।
খোদা হাফেজ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
জাতীয়
পেনশন স্কিমে যোগ দিলে ভাতার আশায় বসে থাকতে হবে না : প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রচেষ্টা ছিলো দেশের মানুষ ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত হবে। পেনশন স্কিমে যোগ দিলে দেশের মানুষকে আর ভাতার আশায় বসে থাকতে হবে না। সারা দেশে সমবায়ের ধারণা ছড়িয়ে দিতে হবে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে সমবায় ছড়িয়ে দিতে হবে, খাদ্যের নিশ্চয়তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। সরকারে আসার পর থেকেই প্রচেষ্টা ছিল দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখা যাবে না। সারা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে যৌথভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চাই। দেশটাকে স্বাবলম্বী করতে চাই। যুব সমাজ যেন চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসা করতে পারে সেজন্য বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করেছে সরকার।
তিনি বলেন, নতুন আরেকটি আধুনিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। আজকের শিশু-কিশোর যুবক তারাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে দেশকে বাঁচাতে প্রত্যেকে যেন দুই-তিনটা করে গাছ লাগায়।
আজ শুক্রবার (১০ মে) টুঙ্গিপাড়ায় ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ কর্মসূচির আওতায় দাঁড়িয়ারকুল সমবায় সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এরআগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে সড়ক পথে যাত্রা করেন শেখ হাসিনা। সকাল পৌনে ১০টার দিকে গোপালগঞ্জে পৌঁছান তিনি। পরে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার ছোট বোন শেখ রেহানা, ভাই শেখ হেলালসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জেএইচ
জাতীয়
বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরআগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে সড়ক পথে যাত্রা করেন শেখ হাসিনা। সকাল পৌনে ১০টার দিকে গোপালগঞ্জে পৌঁছান তিনি।
এরপর প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পাশাপাশি ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার ছোট বোন শেখ রেহানা, ভাই শেখ হেলালসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সফরে তিনি কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ কর্মসূচির আওতায় দাঁড়িয়ারকুল সমবায় সমিতির সদস্যদের মধ্যে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কৃষি উপকরণ ও নগদ সহায়তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সভাপতি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন। এরপর বিকালে ঢাকায় ফিরে আসবেন শেখ হাসিনা।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলাজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেএইচ
জাতীয়
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন যিনি
বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলকে মনোনীত করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সিনেটে এই মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে ঢাকাস্থ দূতাবাসে পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি। ডেভিড স্লেটন মিল বর্তমানে চীনে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশনের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে বাংলাদেশে ডেপুটি মিশন প্রধান ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলর নাম ঘোষণা করেন।
জানা যায়, ডেভিড মিল বেইজিংয়ে দায়িত্ব পালনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ইকোনমিক ব্যুরোর ট্রেড পলিসি অ্যান্ড নেগোসিয়েশন বিভাগের উপ-সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নীতি ও বাস্তবায়ন বিভাগের পরিচালক ছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মিনিস্টার কাউন্সিলর হিসেবে ১৯৯২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন ডেভিড মিল।
আই/এ
- জাতীয়4 days ago
১০০ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি করবে টিসিবি
- বলিউড5 days ago
সিনেমায় চুমু প্রতি স্ত্রীকে দিতে হতো একটি ব্যাগ: ইমরান হাশমি
- আন্তর্জাতিক2 days ago
স্বামীর গোপনাঙ্গ পুড়িয়ে নির্যাতন
- বাংলাদেশ6 days ago
স্কুলে দেরিতে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
- ঢাকা4 days ago
হেলে পড়েছে ৬ তলা ভবন, দুর্ঘটনার আশঙ্কা
- জাতীয়6 days ago
তিনদিন ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ থাকবে ফ্লাইট ওঠানামা
- খুলনা7 days ago
রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় পুলিশ কর্মকর্তা নিহত
- চট্টগ্রাম1 day ago
বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের ১ পাইলট নিহত