বিএনপির সঙ্গে বসলে পোড়া মানুষের গন্ধ পাওয়া যায়

বিএনপির সঙ্গে আর আলোচনার টেবিলে বসতে ইচ্ছে করে না। বিএনপির সঙ্গে বসলে পোড়া মানুষের গন্ধ পাওয়া যায়। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১ মে) ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগ যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাৎকার নেয় । এ সময় তিনি এ কথা বলেন।

সাক্ষাৎকারে বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়া।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে, এই দাবি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একে তো সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তারপর আবার আমার বাবা-মা-ভাই-বোনদের খুনি… তার পরও দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য কিন্তু আমি অনেক অনেক উদারতা দেখিয়েছি। তবে এখন আর তাদের (বিএনপি) সাথে কথা বলার মতো কিছু নাই।’

র‌্যাবের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার পরামর্শেই কিন্তু র‍্যাবের সৃষ্টি। জঙ্গিবাদ নির্মূলসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে র‍্যাব গঠন করা হয়েছে। যখন একটি গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায়, আমরা সবকিছু ঠিকমতোই চালাচ্ছি, তখন হঠাৎ করে র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বোধগম্য নয়।এ বাহিনীর প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সবকিছুই আমেরিকা করেছে বলে, যোগ করেন তিনি।

র‍্যাবের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকার কী কী সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে? ভয়েস অব আমেরিকার এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, র‍্যাবের কোনো সদস্য অপরাধ করলে তার বিচার হয়। র‍্যাবের কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসি। যেটা অন্য কোনো দেশে নেই, এমনকি আমেরিকাতেও নেই। এই আইনের শাসনটা আমাদের দেশে আছে।

উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমাদের একজন প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের জামাই র‍্যাবের সদস্য থাকা অবস্থায় একটি অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল। তাকেও সঙ্গে সঙ্গেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সে শাস্তিও পেয়েছে। বিষয়টিকে আমরা এভাবেই দেখছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে র‍্যাবের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে জঙ্গিরা আবার উৎসাহিত হয়ে গেল বলে মনে হয়। এটাই হলো বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আইনের শাসন বলবৎ রয়েছে। আমরা সবকিছু আইনের দৃষ্টিতে দেখি। আবার বিনা অপরাধে কেউ যাতে শাস্তি না পায় এটাও আমরা দেখি।

পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যকার সম্পর্কের টানাপড়েন ও তা অতিক্রম করে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পঞ্চাশ বছরের অংশীদারিত্বের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেন তিনি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবাদিকদের হয়রানির প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে এ আইন করা হয়নি, বরং যিনি অপরাধ করেন, তাকেই এর আওতায় আনা হয়।

সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা ইস্যু, স্মার্ট বাংলাদেশ প্রসঙ্গও উঠে আসে।

Recommended For You

Leave a Reply