Connect with us

ক্যাম্পাস

অবন্তিকার আত্মহত্যা : যে ব্যাখ্যা দিলেন অভিযুক্ত শিক্ষক

Avatar of author

Published

on

শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা। এ ঘটনায় উত্তাল জবি। এবার অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁর ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন।

শনিবার (১৬ মার্চ) একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিযুক্ত শিক্ষক দ্বীন ইসলাম এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

মৃত্যুর পূর্বে ফেসবুকে দেয়া অবন্তিকার স্ট্যাটাস এর প্রেক্ষিতে দ্বীন ইসলাম বলেন,

১. প্রথমত আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ,আম্মানকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ ঘটনা নিষ্পত্তি হয় ১৬.০৮.২০২২ সালে। এরপর এ বিষয়ে আর কারো সাথে কোনো আলোচনা হয়নি কখনোই।

২. প্রক্টর অফিসে অবন্তিকা ও তার মাকে একবারই ডাকা হয়েছিল। সেই সময় প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার, সহকারী প্রক্টর গৌতম সাহা স্যার এবং অভিযোগকারী তার বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। একাধিকবার ডেকে হেনস্তা করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কারণ বিষয়টি ওইদিনই মীমাংসা হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

৩. সুইসাইড নোটে প্রক্টর অফিসে আম্মানের বিরুদ্ধে আনিত যৌন হয়রানি ও ভয়ভীতির অভিযোগের বিচার না পাওয়ার বিষয়টি তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার ভালো বলতে পারবেন। এ অভিযোগ সম্পর্কে আমি অবগত নই।

৪. সুইসাইড নোটে আনিত অভিযোগ অবন্তিকাকে বহিষ্কার করার বিষয়ে পরবর্তীতে আমি কখনো কিছুই বলিনি। কারণ বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার পর বিগত দেড় বছরে একবারের জন্যও অবন্তিকা বা তার পরিবারের সাথে আমার কোনো কথা বা যোগাযোগ হয়নি।

অভিযুক্ত শিক্ষক দ্বীন ইসলামের দাবি

১. একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা এবং তাদের জন্য কাজ করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। দীর্ঘ ১১ বছরের শিক্ষকতার জীবনে আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম, ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকব।

২. শুধু  স্ট্যাটাসের ওপর ভিত্তি করে কাউকে ভুল না ভাবার অনুরোধ রইল।

Advertisement

৩. এ অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য আমি সবিনয়ে প্রস্তুত।

অবন্তিকার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে দ্বীন ইসলাম তাঁর নিম্নোক্ত বক্তব্যে দাবি করেন,

ঘটনা প্রায় দেড় বছর আগের। অবন্তিকার ব্যাচমেটরা কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে, সেখানে অবন্তিকাও উপস্থিত ছিল। জিডিতে উল্লেখ করা হয় যে, কেউ একজন ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের হয়রানি করে। পুলিশ তখন উচ্চতর তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আইডিটা কে চালায় সেটা বের করে দেব। এ কথা শুনে অবন্তিকা থানা থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসে আসার পথেই তার বন্ধুদের কাছে স্বীকার করে যে আইডিগুলো (ফেক অ্যাকাউন্টগুলো) সে নিজেই চালায়। তখন তার বন্ধুরা তাকেসহ প্রক্টর অফিসে নিয়ে অবন্তিকার বিরুদ্ধে গত ০৮.০৮.২০২২ইং তারিখে একটা লিখিত অভিযোগ দেয়।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার আমাকে ও সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহা (গণিত বিভাগ) স্যারকে গত ১১.০৮.২০২২ইং তারিখে তদন্তের দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে গত ১৬.০৮.২০২২ইং তারিখে প্রক্টর স্যারের উপস্থিতিতে আমি ও সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহা অবন্তিকা ও অবন্তিকার অভিভাবকদের প্রক্টর অফিসে আসার জন্য আহ্বান করি। পরে অবন্তিকার মা মিটিংয়ে আসে এবং এখানে অবন্তিকার ক্লাসমেটসহ (অভিযোগকারীরা) সবাই উপস্থিত ছিল। তখন অবন্তিকার মা তার ব্যাচমেট (যারা অভিযোগ করেছে) তাদের কাছে ঘটনার সত্যতা শুনে বলে যে আমার মেয়ে যা করেছে ভুল করেছে। ঘটনার জন্য তিনি অভিযোগকারী সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে তার মেয়ে আর এ ধরনের কাজ করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন এবং বলেন, যদি করে তার দায় আমরা নেব। এবারের মতো বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ জানান এবং বলেন, আমার মেয়ে ভালো শিক্ষার্থী কিন্তু সে কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ও ওষুধ খাচ্ছে।

তখন তার ব্যাচমেটরা বিষয়টা মানবিক ও ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন। এভাবে বিষয়টা প্রাথমিকভাবে মীমাংসা করা হয়। মীমাংসার পর অবন্তিকার মা জিডিটা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযোগকারীদের বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিযোগকারীরা জিডি তুলে নিতে অসম্মতি জানায়, কারণ তাদের ধারণা অবন্তিকা ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ আবারও করতে পারে।

Advertisement

তখন আর জিডিটা সাথে সাথেই তোলা সম্ভব হয়নি। অভিযোগকারীরা বলেন, আমরা তাকে আগামী ৩ মাস পর্যবেক্ষণ করব এবং যদি অবন্তিকা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে তাহলে আমরা ৩ মাস পরে জিডিটা তুলে নেব। ঝামেলা এখানেই প্রাথমিকভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। এর কিছুদিন পরে অবন্তিকা ও তার মা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং আমাকে প্রক্টর অফিসে না পেয়ে আমার বিভাগে আসেন, যেহেতু আমার এলাকার আমি তাদের আমার সাধ্যমতো আপ্যায়ন করি। যেহেতু তিনি আমার এলাকার এবং তিনি একজন অভিভাবক, আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটুকু দিয়ে আপ্যায়ন করি। ওইদিন অবন্তিকার মা আমাকে জানান অবন্তিকার হলের বন্ধুরা ওর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে না। এতে অবন্তিকা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। তখন আমি তাদের প্রক্টর অফিসে লিখিতভাবে অভিযোগ করার পরামর্শ দিই। তখন অবন্তিকার মা বলেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে এখন আর এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চাইছি না এবং বলেন, আমি আমার মেয়েকে হলে রাখব না। এতে করে তার পড়াশোনা খারাপ হয়ে যাবে এবং সে মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়বে। তখন আমি তাকে বলি, আপনি অভিভাবক যা ভালো মনে করেন সেটাই করেন। যেকোনো প্রয়োজনে আমার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ৩ মাসেরও কিছুদিন পরে অবন্তিকা এবং তার বাবা-মা প্রক্টর অফিসে জিডি তোলার জন্য আসেন কিন্তু তার ব্যাচমেটরা জিডি তুলতে অসম্মতি জানান। তখন অবন্তিকার মা-বাবা এবং অবন্তিকা আবার আমাকে ফোন করে আমার বিভাগে দেখা করতে আসে।

আমি তখন ক্লাস নিচ্ছিলাম এবং পরে ক্লাস থেকে বের তাদের আমার রুমে নিয়ে আমার সাধ্যমতো আপ্যায়ন করি। তখন তারা জিডি তোলার বিষয়ে আমাকে অনুরোধ করেন। আমি তখন তাদের বিষয়টা বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি যে বিষয়টা আমার হাতে নেই। আমাদের কাজ তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করা এবং আমরা তাই করি। জিডির বিষয়ে  প্রক্টর স্যার ও অভিযোগকারীদের সাথে আলাপ করে নিষ্পত্তি করার পরামর্শ দিই।

তৎক্ষণাৎ অবন্তিকার মা কিছুটা হতাশার ভাষায় বলেন, আমি দুজন (অবন্তিকা ও ওর বাবা)  ডিপ্রেশনের রোগীকে নিয়ে এত বছর সংসার করে আসছি। আমি নিজেও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ছি। এবং বলেন, আমার মেয়েটা মারাত্মক ডিপ্রেশনে পড়ে গেছে। এরপর অবন্তিকা ও তার পরিবারের কারো সঙ্গে এ বিষয়ে আজ পর্যন্ত আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।

প্রসঙ্গত,গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে সহকারী প্রক্টর ও আম্মান সিদ্দিকী নামে এক সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নেন ফাইরুজ অবন্তিকা নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক ছাত্রী।

 

Advertisement
Advertisement

ক্যাম্পাস

‘শিক্ষকদের গায়ে হাত দিয়ে প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের সুযোগ দেয়া হবে না’

Published

on

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আসাদুজ্জামান এর নেতৃত্বে অছাত্র ও বহিরাগত কর্তৃক শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উভয়ের পদত্যাগের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কুবি শিক্ষক সমিতি।

বুধবার (৮ মে) দুপুর ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

কর্মসূচির বিষয়ে শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সদস্য মাহমুদুল হাসান বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আমাদের আজকের অবস্থান কর্মসূচি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি চলবে৷

এবিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, উপাচার্য শিক্ষকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করেন৷ এবং সিন্ডিকেটে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে দিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘুরে এডিটিং ভিডিও দেখিয়ে শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ভুল তথ্য দিচ্ছেন৷ গুরুতর অভিযোগ পাশ কাটিয়ে তিনি বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। শিক্ষকদের গায়ে হাত দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ নাই। ওনি মনে করছেন পুনরায় ফিরে আসবেন। কিন্তু একজন শিক্ষকও তাকে গ্রহণ করবে না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে প্রতিহত করবে। দাবি আদায় না হলে আমাদের আন্দোলন আরো তীব্র হবে।

উল্লেখ্য, গোলো ২৮ এপ্রিল দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর হামলার সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন ও ট্রেজারার ড. মোঃ আসাদুজ্জামানের সাথে উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী, সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত, আবু ওবায়দা রাহিদ ও জাহিদ হাসান, স্বপন চন্দ্র মজুমদার, আসাদুজ্জামান শিকদার, জিল্লুর রহমান, এবং আইকিউএসির পরিচালক ড. রশিদুল ইসলাম শেখসহ ২০-৩০ জন বহিরাগত শিক্ষার্থী।

Advertisement

এএম/

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

ক্যাম্পাস

ডিন পদ ফিরে পাচ্ছেন ঢাবি অধ্যাপক রহমত উল্লাহ

Published

on

ডিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ডিন পদ ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তাকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে পুন:বহাল করার জন্য আদালতের আদেশ আছে। এটা হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছে। সেই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে, অর্থাৎ তাকে পুনরায় ডিন পদে বহাল করা হবে।

এর আগে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অভিযোগে, অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে হাইকোর্ট। ফলে রহমত উল্লাহ সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে পুনরায় অংশ নেন।

কেএস/

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

অপরাধ

‘কোন পায়ে গুলি করবো’ ছাত্রদল কর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

Published

on

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। ফাইল ছবি

তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার নির্দেশে একই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক কর্মী ও তার বন্ধুকে তুলে তার কক্ষে আনা হয়। তারপর ওই কক্ষে আসেন শাখা ছাত্রলীগের ওই সাধারণ সম্পাদক। তারপর ছাত্রদলের ওই দু্ই কর্মীকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুসি মারতে থাকেন।  তিন ঘণ্টা ধরে এভাবে নির্যাতনের পর শাখা ছাত্রলীগের ওই সাধারণ সম্পাদক একটা পিস্তল দেখিয়ে ছাত্রদলের ওই কর্মীকে জিজ্ঞেস করেন, তার কোন পায়ে সে গুলি করবে। পরে রাত একটার দিকে হলের সহকারী প্রক্টরদের হাতে ছাত্রদলের ওই কর্মীকে তুলে দেওয়া হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে। সোমবার(৬ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে বলে  গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। ফাইল ছবি

ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতার নাম নাফিউল ইসলাম জীবন। তিনি রাজশাহী শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক। তার সঙ্গে ছিলেন বন্ধু ইউনুস খান। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (৭ মে) ভুক্তভোগী নাফিউল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাতে আমি ও আমার বন্ধু মিলে তাপসী রাবেয়া হলের সামনে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের তিন নেতা শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম সাদিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ আমাদের ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথরোধ করে তাদের বাইকে আমাকে  ও আমার বন্ধুকে তুলে মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়।’

Advertisement

ভুক্তভোগী নাফিউল আরও বলেন, ‘  কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ওই কক্ষে এসে দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে আমাকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও মাথার ওপর কিল-ঘুসি মারেন। এরপর একটা পিস্তল বের করে গুলি লোড-আনলোড করতে করতে আমাকে বলেন, ‘তোর কোন পায়ে গুলি করব, ডান পায়ে না বাম পায়ে।’ এমন করতে করতে একবার শুট করেন। তবে গুলি তখন আনলোড করা ছিল। এছাড়া তারা জোরপূর্বক আমার মোবাইল চেক করেন। পরে রাত ১টার দিকে তারা আমাকে সহকারী প্রক্টরদের হাতে তুলে দেন।’

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছাত্রদল কর্মীকে নির্যাতন করে সন্ত্রাসীদের সংগঠন ছাত্রলীগ কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগ প্রকাশ্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল সহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত আহত ও নির্যাতন করছে।’ রাবি প্রশাসন ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি প্রক্টরের পদত্যাগও দাবি করেন।

তবে এসব অভিযোগ পুরোপুরি ‘ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’ বলে জানিয়েছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। তিনি গণমাধ্যমকে  বলেন, ‘ওই ছেলেকে কোনো ধরনের মারধর, হুমকি কিংবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এর আগে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা লাগিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করে। আমরা সন্দেহজনকভাবে তাকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করি।’

গুলি করার হুমকি প্রসঙ্গে রাবি শাখা ছাত্রলীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কারণ অস্ত্রের রাজনীতি ছাত্রদল করে, ছাত্রলীগ করে না। ছাত্রলীগের হাতে কলম থাকবে, অস্ত্র নয়।’

এবিষয়ে সাংবাদিকেদের এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘ফোন পেয়ে আমি ওই হলে দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠাই। তারা সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে বিনোদপুরে পৌঁছে দেন।”

Advertisement

অভিযোগের ব্যাপারে কোনো অ্যাকশন নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে রাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রক্টর জানান, মারধর বা নির্যাতন করা হয়েছে কিনা জানি না। তাছাড়া মারধর কিংবা নির্যাতনের কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। মারধরের প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এমআর//

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত