অ্যাডিনোভাইরাস রোধে শিশুকে যত্নে রাখবেন যেভাবে
অদৃশ্য শত্রুর নাম অ্যাডিনোভাইরাস। এমন অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণে দিশেহারা শিশুর পরিবার। কোলে ছোট্ট শিশুটিকে নিয়ে, চোখে পানি নিয়ে মা-বাবা ছুটে আসছেন শহরের হাসপাতালে। যত দিন যাচ্ছে ততই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে শিশুদের মধ্যে। এরইমধ্যে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কলকাতা শহরের একটি হাসপাতালে আড়াই বছরের এক শিশুকন্যার মৃত্যু হয় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। তারপর থেকে আরও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চিকিৎসকরাও এ ভাইরাসের বিষয়ে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। বাড়ির শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যত্নে রাখার কথা বলছেন।
কলকাতা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার হাসপাতালগুলিতে ইতিমধ্যেই বেড়েছে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা। জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে ভর্তি হচ্ছে অধিকাংশ। কারও কারও ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক হচ্ছে যে, তাদের ‘ভেন্টিলেশন’-এর সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হচ্ছে। বায়ুবাহিত এ ভাইরাসটি মূলত শ্বাসযন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র এবং মূত্রনালির ক্ষতি করে।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে বাচ্চা বা বয়স্কদের সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি হওয়া নতুন নয়। কিন্তু কোভিড পরবর্তী সময়ে হঠাৎ এ ভাইরাসের হানায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ২০১৮ সালের পর এ ভাইরাস নতুন করে ফিরে এসেছে। এবারের ভয়াবহতা বছর তিনেক আগের পরিস্থিতিকেও ছাপিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা। তার একটি কারণ অবশ্যই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় ঘাটতি। কোভিডের কারণে ঘরবন্দি শিশুরা দীর্ঘ সময়ে মেলামেশা থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছে প্রায় বছর দুয়েক। ফলে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে। পাশাপাশি, মাস্ক পরা বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা নিয়ে এখন তেমন কড়াকড়ি না থাকায়, মাস্ক পরাও বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে। নাক থেকে পানি পড়া, জ্বর, সর্দি-কাশি, চোখ থেকে পানি পড়া এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বড়রাও। তাই তাদের ক্ষেত্রেও একই রকম সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
অ্যাডিনোভাইরাসের আক্রমণ থেকে সন্তানকে সুরক্ষিত রাখবেন যেভাবে-
জনবহুল এলাকায় গেলে ভিড়ের থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন শিশুকে।
প্রয়োজন হলে আবার মাস্ক ব্যবহারে জোর দিন।
খাওয়ার আগে এবং পরে ভাল করে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান।
মল-মূত্রত্যাগ করার পরে ভাল করে পরিষ্কার করছে কি না, খেয়াল রাখুন।
জ্বর-সর্দি হলে অন্যদের থেকে আলাদা রাখার চেষ্টা করুন।
আক্রান্ত শিশুদের ব্যবহারের জিনিসপত্রও আলাদা করে রাখুন।
এ রোগ কিন্তু ছোঁয়াচে, তাই যত দিন না পর্যন্ত সুস্থ হচ্ছে, তত দিন বাড়ির বাইরে বেরোতে দেবেন না শিশুকে।