পাগলা মহিষের গুতোয় মারা গেলেন আহত কৃষক
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় ক্ষেতে কাজ করা কালীন সময় ক্ষেপাটে মহিষের শিংয়ের গুঁতোয় আহত কৃষক গোলাপ মিয়া (৭০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
গেলো সোমবার (২৯ মে) আহত হওয়ার পর দিবাগত রাত ১০ টার দিকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। গোলাপ মিয়া উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের মৃত চিতাব আলীর ছেলে।
এর আগে গেলো সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের ফুলদির চক এলাকায় মহিষের শিংয়ের গুতায় গোলাপ মিয়া (৭০) ও তাঁর স্ত্রী শিরিয়া বেগম (৬০) গুরুতর আহত হন। মহিষের শিংয়ের আঘাতে গোলাপের পেটের ভুঁড়ি বের হয়ে যায় ও শিরিয়ার নিতম্বে জখম হয়। ওই দম্পতিকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে নেয়া হয়েছিল। স্থানীয় কৃষক ও নিহতের স্বজনরা জানান, গতকাল সকালে গোলাপ ও শিরিয়া তাদের কৃষিজমিতে কাজ করছিলেন। সকাল ১০টার দিকে একটি মহিষ সেখানে এসে কাঁকরোল, ঝিঙেসহ নানা ফসলের খেত নষ্ট করতে শুরু করে। এ সময় মহিষটি শিরিয়াকে শিং দিয়ে আঘাত করে। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে গোলাপ মিয়ার পেটে শিং ঢুকিয়ে দেয় মহিষটি। এরপরই মহিষটি দৌড়ে অন্যত্র চলে যায়। মহিষটি এলাকার পণ্ডিত মিয়া নামের এক কসাইয়ের বলে জানা গেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় কৃষকেরা তাঁদের দুজনকে দ্রুত উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নরসিংদীতে স্থানান্তর করেন। পরে স্বজনরা নরসিংদীর সরকারী দুই হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে গোলাপ মিয়ার পেটে অস্ত্রোপাচার করা হয়। রাত ১০টায় অস্ত্রোপাচার কক্ষ থেকে বের করার পরপরই তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এছাড়া শিরিয়া বেগম হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানতে চাইলে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন খান মো. জাহাঙ্গীর বলেন, মহিষের শিংয়ের আঘাতে গোলাপ মিয়ার পেটের ভুঁড়ি বের হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহিষটি পণ্ডিত মিয়া জবাই করে বিক্রির উদ্দেশ্যে কিনে এনেছিলেন। সকালে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মহিষটিকে নিয়ে মাঠে যান তিনি। একপর্যায়ে এটি দৌড়াতে শুরু করে এবং অন্তত ১০ জনকে আহত করে।
রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহবুব তাঁর মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মহিষের শিংয়ের গুতায় পেটের ভুরি বের হয়ে যাওয়া কৃষক গোলাপ মিয়া মারা গেছেন। তাঁর লাশ আজ সকালেই বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। এই ঘটনায় অপর আহত তাঁর স্ত্রী এখন কিছুটা সুস্থ আছেন, কথাবার্তা বলছেন। উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, পাগলা মহিষটির আক্রমণে মারা যাওয়া গোলাপ মিয়ার জানাজা বেলা ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।