আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় পাকো গেন্তো আর নেই!

দারুণ শারীরিক গঠনের সঙ্গে অবিশ্বাস্য গতি মিলে গেন্তো ছিলেন বিশ্বের সেরা লেফট উইঙ্গারদের একজন। আলফ্রেডো দি স্টেফানোর সঙ্গে মিলে রিয়ালকে তিনি নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়।

বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ছয়টি ইউরোপিয়ান কাপ জয়ী, রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের একজন পাকো গেন্তো আর নেই। ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন সাবেক এই স্প্যানিশ উইঙ্গার। ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি নিজেদের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে গেন্তোর মৃত্যুর খবর জানায়।

গেন্তো ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু করেন রেসিং সান্তানদেরের হয়ে। ১৯৫৩ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত ১৮ বছর তিনি খেলেন রিয়ালে। মাদ্রিদের দলটির জার্সিতে ৬০০ ম্যাচ খেলে গোল করেন ১৮২টি। ছয়টি ইউরোপিয়ান কাপের সঙ্গে ১২টি লিগ, দুটি কোপা দেল রে, একটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপসহ রিয়ালের হয়ে তিনি জেতেন মোট ২৪টি শিরোপা। তার শিরোপা জয়ের রেকর্ডটি টিকে ছিল ৫০ বছরের বেশি সময়। গত রোববার স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে রেকর্ডটি স্পর্শ করেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্সেলো।

গেন্তোর মতো ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমেই রিয়ালে যোগ দেন দি স্তেফানো। প্রথম মৌসুমেই তারা জেতেন লিগ শিরোপা। সেখান থেকে সূচনা হয় মাদ্রিদের দলটির সোনালী এক যুগের। এক্তর রিয়াল, দি স্তেফানো, ফেরেঙ্ক পুসকাস ও গেন্তো মিলে রিয়ালের ফরোয়ার্ড লাইনকে সর্বকালের সেরা হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।

ইউরোপিয়ান কাপের সূচনা ১৯৫৫ সালে। প্রতিযোগিতাটিতে ১৯৫৬ থেকে রিয়ালের টানা পাঁচটি শিরোপা জয়ী অপ্রতিরোধ্য দলটার অংশ ছিলেন গেন্তো। ১৯৬৬ সালের আসরে দলের অধিনায়কত্বও করেন তিনি। রিয়ালের প্রথম ছয়টি ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে গেন্তো ছিলেন শুরুর একাদশে, এর দুটিতে করেন গোল। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে হওয়া ফাইনালে ফিওরেন্তিনার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়ে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। পরের মৌসুমে এসি মিলানের বিপক্ষে ফাইনালে তার অতিরিক্ত সময়ের গোলই গড়ে দেয় ব্যবধান, ৩-২ গোলের জয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে রিয়াল।

লম্বা ক্যারিয়ারে গেন্তো আরও দুটি ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে খেলেন। তার আট ফাইনালে খেলা পাওলো মালদিনির সঙ্গে ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতাটিতে যৌথ রেকর্ড। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে বেনফিকা ও ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ফাইনালে হেরে যায় রিয়াল। প্রতিযোগিতাটিতে ৮৮ ম্যাচে গেন্তোর গোল ৩১টি।

রিয়াল মাদ্রিদে তার অবদানের জন্য ২০১৬ সালে তাকে ক্লাবের সম্মানসূচক সভাপতি করা হয়েছিল। গেন্তোর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে রিয়াল বিবৃতিতে লিখেছে, ‘মাদ্রিদিস্তা (মাদ্রিদ সমর্থকদের নাম) ও সকল ফুটবলপ্রেমী সবসময় সেরাদের একজন হিসেবে স্মরণ করবে তাকে।’

জাতীয় দল স্পেনের হয়ে তিনি খেলেন ৪৩ ম্যাচ। অংশ নেন ১৯৬২ ও ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন