এবার শিক্ষকরা দিলেন আমরণ অনশনের ঘোষণা
আগামীকাল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেলে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
রবিবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, আমরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা ২০ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা পাঁচ মিনিটের জন্য সাক্ষাৎ করতে চাই। সেই পাঁচ মিনিটের সাক্ষাৎ যদি আমরা আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে না পাই– আমাদের নির্দেশনা দিয়ে শ্রেণিকক্ষে ফেরত না নিলে আগামী ১ আগস্ট থেকে কাফনের কাপড় পরে প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন করবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন পালন করে যাবো।
তিনি বলেন, ওই দিন সকাল ৯টায় আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আমাদের কর্মসূচি শুরু করবো।
কাউসার আহমেদ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ছাড়া আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাবো না। যত দিন যাক আমরা এখানে থাকবো।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে ২০তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা। গত ১১ জুলাই থেকে তারা এই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এর আগে, বিটিএ’র সভাপতি মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেছিলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস একই অ্যাকাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়নও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। তাছাড়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে দেওয়া হয়। সহকারি প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেয়ার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে বছরের পর বছর উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতীকী অনশন, অবস্থান ধর্মঘট, কর্মবিরতিসহ প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বারবার স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
এদিকে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শত শত শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচির কারণে সকাল থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে একপাশের রাস্তায় যান চলচল বন্ধ রয়েছে।