যে সব গাড়ি নিজে থেকেই দুর্ঘটনা এড়াতে পারে!
বাজারে বছর কয়েক হল এমন অনেক গাড়ি এসেছে, যে গুলিতে ‘এড্যাস’ প্রযুক্তি (অ্যাডভান্স ড্রাইভের অ্যাসিসট্যান্স সিস্টেম) রয়েছে। যার অনেক গুলি সাধারণ বাজেটের গাড়ি, যেমন মহিন্দ্রা এক্সইউভি ৭০০, হোন্ডা সিটি, হুনডেই ভারনা, এমজি অ্যাস্টর বা টাটা হ্যারিয়র-এ এড্যাস রয়েছে।
এড্যাস হল এমন এক প্রযুক্তি যেটা গাড়ি চালানোর সময় চালককে গাড়ি চালতে সহায়তা করবে, দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমবে। আসলে এড্যাস হল বেশ কয়েকটা প্রযুক্তির মিশ্রণ। গাড়িতে লাগানো ক্যামেরার দ্বারা কম্পিউটারের মাধ্যমে গাড়ির আসে পাশের নানা জিনিসকে সনাক্ত করতে পারে।
একে বলে ‘সেন্সর ফিউশন’। মানুষের মস্তিষ্ক যে ভাবে কোনও ছবি দেখে বস্তু চিনতে পারে সেন্সর ফিউশনও তেমনই ইমেজ রিকগনিশন সফ্টওয়্যার, আল্ট্রাসাউন্ড সেন্সর, লাইডার এবং রাডারের সাহায্যে সেটাই করতে পারে। বলা হয়, এই প্রযুক্তি মানুষের চেয়ে দ্রুত সাড়া দিতে পারে। এড্যাস-এর কয়েকটা ব্যবহার হল:
১. ক্রুজ কন্ট্রোল: এর মাধ্যমে রাস্তায় বিশেষ করে হাইওয়েতে, যেখানে চালকে অনেক সময় ধরে গাড়ি চলতে হয়, সেখানে বিশেষ উপযোগী। এর ফলে গাড়ি অন্য গাড়ির গতি-প্রকৃতি বুঝে নিজে থেকেই গতি বাড়ানো কমানো করতে পারে এমনকি হঠাৎ করে সামনে কোনও বস্তু এসে পরলে গাড়ি তাৎক্ষণিক ভাবে থামতেও পারে।
২. হেড লাইট নিয়ন্ত্রণ: এই ব্যবস্থায় গাড়ি সামনে থেকে আসা গাড়ি বুঝে নিয়ে, নিজে থেকেই হেড লাইট নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে সামনের গাড়ির চালকের অসুবিধা হয় না। সেন্সরের মাধ্যমে গাড়ির হেডলাইটকে বাইরের আলোর সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। গাড়ির অবস্থান এবং পরিবেশের আলোর উপর নির্ভর করে হেডলাইটের শক্তি এমনকি দিকও পরিবর্তন করে।
৩. স্বয়ংক্রিয় পার্কিং: কলকাতা বা যে কোনও বড় শহরে পার্কিং এক সমস্যা। সেই সমস্যার সমাধান করে দেয় স্বয়ংক্রিয় পার্কিং। গাড়িতে লাগানো ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরার স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে ফাকা জায়গায় গাড়ি দাঁড় করতে সক্ষম হয়।
৪. নাইট ভিশন: নাইট ভিশন ব্যবস্থা চালককে এমন জিনিস দেখতে সাহায্য় করে, যা রাতে দেখা কঠিন বা অসম্ভব। নাইট ভিশনের দুটি দিক রয়েছে: অ্যাক্টিভ নাইট ভিশন সিস্টেম যা ইনফ্রারেড আলো ফেলে বস্তুকে দেখে। আর একটা প্যাসিভ সিস্টেম যা গাড়ি, প্রাণী এবং অন্যান্য বস্তু থেকে আসা উত্তাপকে বুঝে বস্তুকে সনাক্ত করে।
৫. স্বয়ংক্রিয় জরুরি ব্রেকিং: এড্যাস-এর অন্যতম ব্যবহার হল স্বয়ংক্রিয় জরুরি ব্রেকিং। এটা সেন্সর ব্যবহার করে করে জেনে নেয় যে চালক অন্য যানবাহন বা রাস্তার অন্যান্য বস্তুতে আঘাত করছে কিনা। হঠাৎ করে ব্রেক ছাপার সঙ্গে সঙ্গে সিট বেল্ট শক্তও করে দেয়।
৬. চালকের ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয়া: এটা চালকের চোখ বুজে আসছে কি না, সেটা বুঝে সতর্ক করে দেয়। ড্রাইভারের মনোযোগ কমছে কি না তা নির্ধারণ করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যেমন কোনও সেন্সর চালকের মাথার অবস্থা এবং হৃদস্পন্দনের গতিবিধি বিশ্লেষণ করতে পারে। আরেকটি উপায় হল গাড়ির ভেতরে লাগানো ক্যামেরা বিশ্লেষণ করতে পারে যে চালকের চোখ রাস্তার দিকে আছে নাকি অন্য দিকে বা বন্ধ হয়ে আসছে। ড্রাইভার মনিটরিং সিস্টেম সেটা বুঝে আওয়াজ করে এমনকি স্টিয়ারিং কাপিয়ে চালককে সতর্ক করতে পারে। তাতেও চালক সাড়া না দিলে, গাড়ি নিজে থেকেই সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেয়।
৭. এ ধরনের গাড়ি নাম ও দাম: হোন্ডা সিটি দাম: ১৮ লাখ টাকা, হুন্ডাই ভার্না দাম: ১৭ লাখ টাকা, এমজি অ্যাস্টর দাম: ১৮ লাখ টাকা, মহিন্দ্রা এক্সইউভি ৭০০ দাম: ২৫ লাখ টাকা, এমজি হেক্টর দাম: ২২ লাখ টাকা, টাটা হ্যারিয়ার দাম: ২৩ লাখ টাকা, টাটা সাফারি দাম: ২৪ লাখ টাকা, টয়োটা ইনোভা হাইক্রস দাম: ৩০ লাখ টাকা, হুন্ডাই টাকসন দাম: ৩৩ লাখ টাকা।