আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বাংলাদেশে আসছে বিশ্বকাপ ট্রফি, ফুটবল উন্মাদনায় ‘গলি গ্রাফিটি’

ফুটবলের প্রতি আবেগ প্রকাশে বাংলাদেশের ফুটবলভক্তরা অতুলনীয়। বাংলাদেশ কখনো কোনো ফুটবল বিশ্বকাপে অংশ নেয়নি কিন্তু ভবিষ্যতে আশাবাদী। বিশ্বকাপ ঘিরে উন্মাদনার প্রকাশেও এদেশের ফুটবলভক্তরা কখনোই পিছিয়ে থাকেন না। বরং, অনেক সময় বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশেই এই উন্মাদনার মাত্রা অনেক বেশি থাকে। 

৮ জুন কোকা-কোলার উদ্যোগে বাংলাদেশে আয়োজিত হতে যাচ্ছে ‘ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২ ট্রফি ট্যুর।’ ফুটবলের প্রতি সেই আবেগ, সেই উন্মাদনা আবার জাগিয়ে তোলার জন্য আকা হচ্ছে গলি গ্রাফিটি।

২০১৮ বিশ্বকাপের সময় লিওনেল মেসি একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন, যেখানে বাংলাদেশি ভক্তদের আর্জেন্টিনা ও মেসির প্রতি সমর্থন জানাতে দেখা যায়। বাংলাদেশের ফুটবলভক্তদের এই আবেগের কথা তুলে ধরেছে ফিফা-ও। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিক পর্যন্ত বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলকেও দর্শকদের এমন আবেগ ও সমর্থন দেখা যেত।

প্রতিটি বিশ্বকাপের সময় সারা বাংলাদেশ, বিশেষত ঢাকা শহরের মানুষেরা উৎসবে মেতে ওঠেন। আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে দেশের মানুষের মনে ফুটবলের প্রতি প্রেমকে আবার চাঙ্গা করে তুলতে চায় কোকা-কোলা। 

এ জন্য তারা বেছে নিয়েছে শিল্পীর রং-তুলি। এক দল দেশীয় চিত্রশিল্পীদের নিয়ে ‘গলি গ্রাফিটি’ নামের স্ট্রিট আর্ট ওয়ার্ক ক্যাম্পেইনটি এই লক্ষ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। 

বাংলাদেশি ফুটবলপ্রেমীদের ফুটবলের প্রতি আবেগ, ভালোবাসা ও ফুটবলকে ঘিরে তাদের উদযাপনের কথা এই আর্ট ওয়ার্কের মাধ্যমে তুলে ধরবেন শিল্পীরা। গ্রাফিতিগুলোতে আরও ফুটিয়ে তোলা হবে ফুটবলের প্রতীক, মহাতারকা ও ভক্তদের। এছাড়া, দেশীয় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রিকশাচিত্রের মতো দেশীয় মোটিফের ব্যবহারও থাকছে। 

বনানী ১১ ও গুলশান সংযোগ সেতুর পাশে অবস্থিত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসার্স কোয়াটার্সের ১২০০০ স্কয়ার ফিট দেয়ালে বর্তমানে প্রথম গ্রাফিটির কাজ চলছে। আমরা আশা করবো, রং-তুলির মাধ্যমে আবেগ প্রকাশের এই উদ্যোগে অন্য শিল্পীরাও স্বত:স্ফূর্তভাবে যোগ দেবেন। এই উদ্যোগের পরিকল্পনা, ডিজাইন ও বাস্তবায়নের কাজটি করছে কোকা-কোলার পিআর এবং কমিউনিকেশনস পার্টনার বেঞ্চমার্ক পিআর। আর ক্যাম্পেইনের পেইন্ট পার্টনার হিসেবে আছে এশিয়ান পেইন্টস।   
আর্ট ওয়ার্কের পরিকল্পনা ও ডিজাইনের দায়িত্বে আছেন মেহেদী হাসান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্নাতক মেহেদী তার স্টাইলের প্রকাশ ঘটান মিনিমালিস্ট কৌশলের সাথে রং ও ফর্মের বৈচিত্র্যের মাধ্যমে। আর আর্ট ওয়ার্কের কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছেন একদল শিল্পী।

প্রাচীনকাল থেকেই যোগাযোগ ও অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে চিত্রশিল্পকে ব্যবহার করে এসেছে মানুষ। গ্রাফিটিও এমন এক ধরনের চিত্রশিল্প। স্ট্রিট গ্রাফিতি হচ্ছে আবেগ আর অনুভূতি প্রকাশ করার একটা চমৎকার উপায়। সময়ের সাথে সাথে গ্রাফিতি হয়ে উঠেছে মানুষের বিশ্বাস, উদ্দীপনা ও আবেগ প্রকাশের একটি মাধ্যম।

বাংলাদেশিরা ফুটবল ভালোবাসে, এটা আমরা সবাই জানি। এই খেলা আমাদের দেশের ইতিহাসের একটা অংশ। ফিফা বিশ্বকাপের সময় আমাদের এই পাগলামো আর উৎসব এক অন্য মাত্রায় গিয়ে পৌঁছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পতাকা দিয়ে আমাদের ছাদগুলো সব ভরে ওঠে। বাচ্চা থেকে বুড়ো-এই পাগলামিতে সামিল হয় সবাই। 

এ কাজে আমাদের সাহায্য করার জন্য কোকা-কোলা, ওয়াপদা এবং এশিয়ান পেইন্টসকে ধন্যবাদ। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এই আর্ট ওয়ার্ক ফুটবলপাগল এই দেশের মানুষদের ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা সফলভাবে তুলে ধরবে।  ভক্তদের নিজেদের প্রিয় দলের প্রতি সমর্থন ও ফুটবলের প্রতি তাদের আবেগ প্রকাশই হলো ফিফা বিশ্বকাপের আসল জাদু। 

ফিফা’র সাথে কোকা-কোলার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের শুরু ১৯৭৬ সালে। পাশাপাশি, ১৯৭৮ সাল থেকে কোম্পানিটি ফিফা বিশ্বকাপ এর অফিশিয়াল স্পন্সর। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে একটি সতেজ ও নতুন পৃথিবী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কোকা-কোলা।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন