লাইফস্টাইল

চুলের খুশকি দূর করতে যা করবেন

শীতকালে ত্বকে যেমন নানা সমস্যা বাড়ে, আবার চুলেও সমস্যা দেখা দেয়। চুল এই সময়ে খুবই রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে থাকে। এছাড়াও, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকায় স্ক্যাল্পও রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে ওঠে। ফলে কম বেশি সবার মাথাতেই খুশকির সমস্যা শুরু হয়।

যারা সারা বছরই প্রায় খুশকির সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য় এই সময়টা আরও কঠিন হয়ে ওঠে। যাই হোক, এই শীতে আপনার ত্বকের পাশাপাশি চুলেরও প্রয়োজন বিশেষ যত্ন। চুলে নিয়মিত যত্ন নিলে অনেক সমস্যাই সমাধান হবে।

একইভাবে স্ক্যাল্প তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও আর্দ্রতা পেলে, ভালো থাকে। খুশকিও নিয়ন্ত্রণে থাকে। আসলে ঘরোয়া উপায়েও খুশকির সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। জেনে নিন, কোন ঘরোয়া টোটকা কাজে লাগালে তা সম্ভব হবে?

খুশকি কেন হয়?

  • স্ক্যাল্প শুষ্ক হলে খুশকি বাড়তে পারে। শীতকালে অনেকেই শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় ভোগেন। যাদের ত্বকের ধরন শুষ্ক, তাদের এই সময়ে সমস্যা আরও বাড়ে। তাই স্ক্যাল্পে ও শরীরের অন্যান্য অংশে আর্দ্রতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
  • স্ক্যাল্প অপরিষ্কার রয়েছে। খুশকির অন্যতম কারণ হতে পারে এটি। নিয়মিত শ্যাম্পু করে স্ক্যাল্প পরিষ্কার না রাখলে খুশকি বাড়বে।
  • Malassezia নামের একটি ফাঙ্গাসের কারণে খুশকি হয়। এছাড়াও স্ক্যাল্পে কোনও গুরুতর সমস্যা থাকতে পারে। এরকম হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোনও ঘরোয়া টোটকার উপর ভরসা করবেন না।

নিম কীভাবে ব্যবহার করবেন?

নিমের মধ্য়ে আছে অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান যা ড্যানড্রফ সারিয়ে তোলে। এর অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদানও স্ক্যাল্প ভালো রাখে। খুশকি গোড়া থেকে নির্মূল করে। ‘ব্রাজিলিয়ান জার্নাল অফ মাইক্রোবায়লজি’-তেও নিমের এই অ্যান্টি ফাঙ্গাল গুণ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

১৫টা নিম পাতা নিন। একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল নিন। গ্রাইন্ডারে নিম পাতা ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এবার ওই দুই উপাদান ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। তা আপনার স্ক্যাল্পে ও চুলের গোড়ায় খুব ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

পেঁয়াজের রস

পেঁয়াজের রসে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান আছে। ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি৬-এ ঠাসা। ভিটামিন সি খুশকির সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

বড় একটি পেঁয়াজ নিন। প্রথমে খোসা ছাড়িয়ে নিন। পেঁয়াজটি টুকরো টুকরো করে কেটে গ্রাইন্ডারে পেস্ট বানিয়ে নিন। সেই পেস্ট থেকে রস ছেঁকে বের করে নিন। তা আঙুলের সাহায্য়ে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। এতে স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। চুলের গোড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছায়। পাশাপাশি খুশকির সমস্যাও কমে। আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে ১-২বার এই পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন।

পাতি লেবু

খুশকির সমস্যায় পাতি লেবু ব্যবহার ঘরোয়া রূপটানে বেশ জনপ্রিয়। এর মধ্য়ে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি থাকে। এই উপাদান চুলের গোড়া খুশকি মুক্ত করে। তবে লেবুর রস কখনও সরাসরি চুলে ব্যবহার করবেন না। এর অ্যাসিডিক উপাদান আপনার চুলের ও স্ক্যাল্পের ক্ষতি করতে পারে। হেয়ার প্যাকে পাতিলেবু ব্যবহার করুন।

আপেল সাইডার ভিনিগার

আপেল সাইডার ভিনিগারও খুশকি নিরাময় করতে বেশ কাজে আসে। কিন্তু এটিও সরাসরি স্ক্যাল্পে ব্যবহার করবেন না। এতে স্ক্যাল্প ও চুলের ক্ষতি হতে পারে।

আধ কাপ আপেল সাইডার ভিনিগার নিন। এর সঙ্গে আধ কাপ জল নিন। দুটি ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার সেই মিশ্রণ স্ক্যাল্পে ভালো করে লাগিয়ে নিন। চুলেও লাগাতে পারেন। এবার কিছুক্ষণ মাসাজ করুন। ১৫ - ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। আপেল সাইডার ভিনিগার লাগিয়ে বেশিক্ষণ রাখবেন না। এতেও চুলের ক্ষতি হতে পারে। এবার শ্যাম্পু করে নিন।

স্ক্যাল্পের চিকিৎসা চললে বা কোনও সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘরোয়া টোটকা কাজে লাগাবেন না।

কেএস/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন