বিনোদন

এ আর রহমানের পরকীয়ার গুঞ্জনে মুখ খুললেন স্ত্রী সায়রা

শিল্পী এ আর রহমান ও সায়রা বানু ছবি: সংগৃহীত

স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে অস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক  এ আর রহমানের বিচ্ছেদ ঘটেছে। আর এই বিচ্ছেদের খবরে নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমসহ নেট দুনিয়া।  

একই দিনে ভারতীয় বেসবাদক মোহিনী দেরও বিচ্ছেদ হওয়ায়  নতুন রঙ পায় রহমানের বিচ্ছেদের খবর। দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানো শুরু করেন নেটিজেনদের অনেকে। ভারতের বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনামেও জায়গা নেয় বিষয়টি।

এঘটনায় বেশ চটে যান এ আর রহমান। মোহিনীর সঙ্গে পরকীয়ার গুঞ্জন গায়ে জ্বালা ধরিয়েছে তার। খবরগুলো সরাতে বলে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তিনি। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন। এবার এ আর রহমানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন স্ত্রী  সায়রা বানু। জানালেন,বিচ্ছেদের কারণ।

রোববার (২৪ নভেম্বর) এক ভয়েস নোট প্রকাশ্যে এনে সায়রা বানু বলেন, ‘আমি সায়রা রহমান। গত কয়েক মাস ধরেই মুম্বাই রয়েছি। আমি রহমানের থেকে একটু বিরতি নিতে চেয়েছিলাম। ইউটিউবার এবং সমস্ত মিডিয়াকর্মীদের কাছে আমার অনুরোধ, রহমানের নামে কোনো খারাপ কথা বলবেন না। ও দারুণ একজন মানুষ।

আমার দেখা সেরা মানুষ। আমি শুধুমাত্র আমার শারীরিক অসুস্থতার জন্যই চেন্নাই ছেড়েছি। আমি জানতাম, আমি চেন্নাইতে না থাকলেই লোকজন ভাববে, সায়রা কোথায় গেল? আসলে আমার চিকিৎসা চলছে। চেন্নাইতে রহমানের এত ব্যস্ত শিডিউল থাকে যে, ওখানে থাকলে এটা সম্ভব হতো না।’

সায়রা বানু আরও বলেন,  ‘আমি আর রহমান এখনও একে-অপরকে ভালোবাসি। আর এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তটা একশো শতাংশ মিউচুয়াল। খুব ভালো মানুষ ও। তাই সকলের কাছে আমার অনুরোধ রহমান যেমন আছে, ওকে তেমনটাই থাকতে দিন।

আমার নিজের জীবন দিয়ে ওকে বিশ্বাস করি। এতটাই ভালোবাসি আমি ওকে। রহমানও তাই। তাই সবার কাছে একটাই আর্জি, রটনা রটানো বন্ধ করুন। আমাদেরকে একটু একা থাকতে দিন। আমরা তো অফিশিয়ালি কারণ নিয়ে কিছু বলিনি এখনও। তাই ওর নামে কুৎসা রটাবেন না।’

গিটারিস্ট মোহিনি দে’র সঙ্গে রহমানের সম্পর্কের গুজব নিয়ে সায়রা বলেন, ‘এ আর রহমান কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত নন। আমি তাকে সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করি এবং খুব ভালোবাসি। কোনো নতুন সম্পর্কের জন্য আমাদের সম্পর্কে প্রভাব পড়েনি। এ বিষয়টা অন্যরকম। তিনি আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন, এখনো করেন। তাই অনুগ্রহ করে তার সম্পর্কে মিথ্যা গুজব ছড়াবেন না। ঈশ্বর তার মঙ্গল করুন।’ 

এর আগে, গেলো ২০ নভেম্বর সায়রা বানু নিজের আইনজীবী বন্দনা শাহর মাধ্যমে একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে বলা হয়, বিয়ের বহু বছর পর স্বামী এ আর রহমানের সঙ্গে বিচ্ছেদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সায়রা বানু।

মানসিক চাপের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। একে অপরের প্রতি গভীর ভালবাসা সত্ত্বেও, নিজেদের মধ্যে তৈরিকৃত ব্যবধান দূরত্ব ঘোচাতে পারছিলেন না তারা। সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মিসেস সায়রা জোর দিয়ে বলেছেন, ব্যথা এবং যন্ত্রণা থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে তিনি তার জীবনের এই কঠিন অধ্যায়টি পার করার সময় সবার কাছ থেকে গোপনীয়তা এবং তাদের ব্যাপারটি বোঝার অনুরোধ করেছেন।; এরপর এ আর রহমানও একটি পোস্টের মাধ্যমে বিচ্ছেদের বিষয়টি জানান।

এর কয়েক ঘণ্টা পর এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে  সুরকার স্বামী মার্ক হার্টসাচের সঙ্গে সংসারে ইতি টানার ঘোষণা দেন মোহিনী দে।

কে এই মোহিনী?

২০ জুলাই, ১৯৯৬ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন মোহিনী দে। সঙ্গীতের গভীরভাবে নিমগ্ন এক পরিবারে বেড়ে ওঠা মোহিনীর বাবা, সুজয় দে, একজন বিখ্যাত সেশন মিউজিশিয়ান।

অল্প বয়সেই মোহিনীর প্রতিভার স্বীকৃতি দিয়েছিলেন তিনি। তার নির্দেশনা এবং সমর্থনে, মোহিনী দে বেস গিটার বাজানো শুরু করেন। সঙ্গীত জগতে তার যাত্রা শুরু ১১ বছর বয়সে।  

মোহিনী দে-র বয়স মাত্র ২৯। জনপ্রিয় বেসিস্ট হিসেবে কলকাতায় বহুদিন আগে থেকেই পরিচিত। তাঁর নিজেরও একটি ব্যান্ড রয়েছে।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘গান বাংলা’র ‘গান বাংলা এস উইন্ড অফ চেঞ্জ-এ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।

এ  অর রহমানের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ টি শোতে পারফর্ম করেছেন। তার প্রতিভা জ্যাজ উস্তাদ লুই ব্যাঙ্কসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।

তারপরেই আন্তর্জাতিক স্তরে যাত্রা শুরু মোহিনীর।

স্টিভ ভাই, জাকির হুসেন, ভিনি কোলাইউটা ও পপ তারকা উইলো স্মিথের মতো কিংবদন্তির সঙ্গে কাজ করেছেন মোহিনী দে।

এমটিভি আনপ্লাগড, কোক স্টুডিও এবং দ্য টুনাইট শো উইথ জিমি ফ্যালনের মতো প্ল্যাটফর্মে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছেন বাঙালি এই  ললনা।

২০২৩ সালে তিনি তাঁর প্রথম অ্যালবাম রিলিজ করেন। তাঁর প্রথম সেই অ্যালবামের নাম ফ্রি স্পিরিট। কখনও ঝাঁকড়া চুল, কখনও আবার জটা...বারবার ছক ভেঙেছেন বেসিস্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যাও প্রচুর। 

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন