গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে ১৭ বছর পর মুক্তি পেলেন আব্দুল মালিক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন কেনিয়ার নাগরিক মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি গুয়ানতানামো কারাগারে বন্দি ছিলেন। ইতোমধ্যে তিনি নিজ দেশে ফিরেছেন। আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তির পর এখন ওই কারাগারে ২৯ জন বন্দি আছেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন থেকে মঙ্গলবার আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তি ঘোষণা দেয়। গেলো মাসে বাজাবুর কেনিয়ায় প্রত্যাবাসনের বিষয়টি প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মার্কিন কংগ্রেসকে অবহিত করেছেন।
আবদুল মালিক বাজাবু বিরুদ্ধে আল-কায়েদার পূর্ব আফ্রিকার শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। যার কারণে কেনিয়ার মোম্বাসায় ২০০৭ সালে দেশটির কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেপ্তার করে। কয়েক সপ্তাহ পর তাকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দিদের থাকা না–থাকা সংক্রান্ত পর্যালোচনা পরিষদ ২০২১ সালে নির্ধারণ করে যে আবদুল মালিক বাজাবু যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আর উল্লেখযোগ্য হুমকি নন। কাজেই তার হুমকি থেকে রক্ষারও আর প্রয়োজন নেই।
‘রিপ্রাইভ ইউএস’ নামের একটি সংগঠন আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল । বাজাবুর মুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, বাজাবু কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর হাতে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন।
আবদুল মালিক বাজাবুর আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, নিরীহ একজন ব্যক্তিকে তার জীবনের সেরা সময়টায় বন্দি রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাকে এমন একটা সময়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল, যখন তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাইন–ইলেভেনের হামলার পর ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ চলার সময় ২০০২ সালে গুয়ানতানামো বে কারাগার চালু হয়। কিউবার পার্শ্ববর্তী এক মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে এই কারাগার অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কমিশনের এক আইনি ব্যবস্থায় এটি পরিচালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত আদালতে যে-সব সুযোগ–সুবিধা থাকে, সেখানে সেগুলো নেই। তীব্র সমালোচনার মুখে পরবর্তী সময় গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা । তবে আইনি জটিলতা আর অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চাপে ওবামার এ উদ্যোগ সফল হতে পারেনি।
জেডএস/