স্ত্রী-তালাক ইস্যুতে হিরো আলমকে একহাত নিলেন তসলিমা

বাবার মৃত্যুতে শোকাহত হিরো আলম ও তার পরিবার। তবে সেই শোকের মধ্যেই নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছেন এই আলোচিত-সমালোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর। সম্প্রতি স্ত্রী রিয়া মনির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে তাকে তালাক দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার হিরো আলমকে কটাক্ষ করলেন প্রবাসী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। নিজের সামাজিক মাধ্যমে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি হিরো আলমের এই পদক্ষেপকে 'পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ' হিসেবে আখ্যা দেন।
তসলিমার মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা। বাবার মৃত্যু, দাম্পত্য কলহ ও তসলিমার সমালোচনা- সব মিলিয়ে ফের সংবাদের শিরোনামে হিরো আলম।
সোমবার (২১ এপ্রিল) এক পোস্টে তসলিমা নাসরিন লেখেন, ‘মাঝে মাঝে ভাবি রিয়া মনির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমের মতো একটা লোককে বিয়ে করেছিল! হিরো আলমের টাকা আছে বলে? ভেবেছিলাম অন্য কোনো গুণ না থাকলেও একটি গুণ হিরো আলমের হয়তো আছে, মেয়েদের হয়তো ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করে সে। প্রচুর মানুষের সঙ্গে মিশেছে সে, তার নাম হয়েছে, তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘হয়তো জীবন সম্পর্কে ধারণা এখন আগের চেয়ে স্পষ্ট হয়েছে, হয়তো যতটা উদার ছিল, সংবেদনশীল ছিল, তার চেয়ে আরো বেশি হয়েছে।’
স্ত্রীর প্রতি আলমের আচরণকে কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমি ভুল ভেবেছিলাম। রিয়া মনির বিরুদ্ধে যেভাবে সে নোংরা ভাষায় কথা বলছে। যেভাবে তাকে হেয় করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। যেভাবে তাকে হিংস্র আক্রমণ করছে। কট্টর পুরুষতান্ত্রিক না হলে করা যায় না।’
নারীদের সামাজিক অবস্থা ও তাদের পরিণতি কথাও তুলে ধরেছেন। নারীবিদ্বেষী চরিত্রের লোকদের সবাই বাহবা দেবে। তিনি লিখেছেন, ‘রিয়া মনি যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে গিয়েছে, যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে ভিডিও বানিয়েছে, যেহেতু হাসপাতালে গিয়ে স্বামীর বাবার সেবাযত্ন করেনি, যেহেতু তার বাবার পাশে বসে থাকেনি রাত-দিন, যেহেতু বাবার মৃত্যু হলে শিয়রে বসে অঝোরে কাঁদেনি, সেহেতু হিরো আলম জানিয়ে দিয়েছে রিয়া মনির মতো স্ত্রী সে চায় না। এমন চরম নারীবিদ্বেষী চরিত্রকে লোকে বাহবা দেবে।’
তসলিমা আরও লিখেছেন, ‘সমাজের মানুষ তার কাছে শিখবে স্ত্রী মানেই চাকরানী, স্ত্রী মানেই দাসী। শিখবে, স্ত্রীর দায়িত্ব স্বামী এবং স্বামীর আত্মীয়স্বজনকে সেবা করা। স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে না বেরোনো। নিজের ইচ্ছে ছুড়ে ফেলা, নিজের কাজ পণ্ড করা, নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া।
হিরো আলম ওপর অভিযোগ করেন প্রবাসী লেখিকা। তার ভাষ্য, ‘জনগণকে হিরো আলম শেখাচ্ছেন , স্বামী পরকীয়া করলেও স্ত্রীকে পতিব্রতা স্ত্রী হিসেবে স্বামীর আদেশ নির্দেশ পালন করতে হবে, কারণ স্বামী হলো প্রভু! আর স্ত্রী জিনিসটি শুধু দাসী নয়, ক্রীতদাসী।’
সবশেষ তিনি লিখেছেন, ‘রিয়া মনি, আমার বিশ্বাস, এই নোংরা নারীবিদ্বেষী সমাজে পাছে লোকে কিছু বলের তোয়াক্কা না করে নিজের পরিচয় নিয়ে, নিজের যোগ্যতায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’
এসি//