আর্কাইভ থেকে লাইফস্টাইল

অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের কিছু উপসর্গ

অগ্ন্যাশয় হচ্ছে দেহের ইনস্যুলিন ক্ষরণের প্রধান কেন্দ্র। আর শরীরের এই গ্রন্থিতেই বাসা বাধতে পারে মরণঘাতী ক্যান্সার। সাধারণত এই ক্যান্সার মধ্যবয়সিদের মাঝে বেশি হয়ে থাকে। আর নারীদের তুলনায় এটি পুরুষদের মধ্যে বেশি হতে দেখা যায়।

ক্যানসারের চিকিৎসা কতটা কার্যকর হবে, তার অনেকটাই নির্ভর করে কখন রোগ ধরা পড়ছে তার উপর। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এমন সময়ে এই মারণরোগ ধরা পড়ে যে, চিকিৎসকদের আর কিছু করার থাকে না। অগ্ন্যাশয় ক্যানসারও তার ব্যতিক্রম নয়। অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার সহজে চিহ্নিত করা যায় না। কিন্তু অগ্ন্যাশয়ের পরীক্ষা করানোর চল খুব বেশি নেই। ফলে যখন ধরা পড়ে, অনেকটাই ছড়িয়ে যায় ক্যানসার। ছড়ায় মূলত ফুসফুস আর যকৃতে।

ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, ‘স্থূলতা, ডায়াবিটিসের সমস্যা, ধূমপান এই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।’

মারাত্মক এই ক্যানসার সম্পর্কে আগে থেকেই সচেতন হতে হবে। জেনে রাখতে হবে অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের প্রধান কিছু লক্ষণ- বদহজম খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম হলে কমবেশি সকলেই বদহজমের সমস্যায় ভোগেন। তবে এই সমস্যা সাময়িক। যদি দেখেন ওষুধ খাওয়ার পরেও কিছুতেই পেটখারাপ কমছে না, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

খিদে চলে যাওয়া বদহজমের সঙ্গে সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার ইচ্ছা চলে যাওয়াও প্যানক্রিয়াসের ক্যানসারের লক্ষণ। বমিভাব সারাক্ষণ বমি বমি ভাবও প্যানক্রিয়াসের সমস্যার লক্ষণ। পেটে ব্যথা ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, ‘যাদের এই ক্যানসার ধরা পড়ে, তাদের বেশির ভাগই চিকিৎসকের কাছে যান পেটব্যথার সমস্যা নিয়ে। অসহ্য পেটে যন্ত্রণা এই ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ।’ পিঠে ব্যথা কিছু খেলে কিংবা শুয়ে থাকলে এই যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে যন্ত্রণা পেট থেকে পিঠের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে।

উপসর্গ জন্ডিস বার বার জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়া খুবই খারাপ ইঙ্গিত। প্যানক্রিয়াসের ক্যানসারে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পর্যায় অনেকেই জন্ডিসে আক্রান্ত হন। ডায়রিয়া আজেবাজে কিছু না খেয়েও ঘন ঘন ডায়রিয়া হলে সাবধান হতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য মলত্যাগের অভ্যাসে আচমকা বদল আসাও প্যানক্রিয়াসের ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। তাই হঠাৎ কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান। জ্বর জ্বরের সঙ্গে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের সব সময়ে যোগ না থাকলেও দীর্ঘদিন জ্বর থাকা মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের থেকে তৈরি হওয়া জটিলতা থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্লান্তি যে কোনও ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেই ক্লান্তিবোধ অন্যতম লক্ষণ। এটি অঅগ্ন্যাশয় ক্যানসারেরও লক্ষণ হতে পারে।

উপসর্গ মানসিক অবসাদ কোনও কারণ ছাড়াই মন খারাপ লাগছে? চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার থেকেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক কেন এমন হয় তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত নন কেউ। রক্ত জমাট বাঁধা খুব বিরল হলেও কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে পা ফোলা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ডায়াবেটিস খুব অল্প সংখ্যক মানুষের এমন হয়। তবে আচমকা ডায়াবিটিস দেখা দেয়ায় অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবিটিসের সঙ্গে যদি ওজন কমে যাওয়ার সমস্যা যুক্ত হয়, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা জরুরি।

এগুলোর বাইরেও অনেক সময় অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে, অথবা সেগুলো চিহ্নিত করা কঠিন হতে পারে। তবে এ ক্যান্সারের এ ধরনের লক্ষণ শরীরে দেখা দিতে পারে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন