ইঁদুর বিক্রি করে লাখ লাখ আয় করেন মামুন
ইঁদুর বিক্রি করেই আয়! এ যেনো সেই রূপকথার গল্প। গল্পের নায়ক মরা ইঁদুর বিক্রি করেই প্রথম উপার্জন করেন। তারপরে বুদ্ধিবলের যোগে প্রচুর সম্পত্তির মালিক হন। এটাও অনেকটা সেই রকমই। রাজশাহী এলাকার বাসিন্দা সালহউদ্দিন মামুন। বছর কয়েক আগে নিতান্তই শখের বশে ইঁদুর পালন শুরু করেন। সেটাই তার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্রি হচ্ছে সেই ইঁদুর।
মামুনের দাবি, তিনি পালন করেন অ্যালবিনো প্রজাতির সাদা ইঁদুর। তার দাবি, এখন ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও তার কাছে ইঁদুর চেয়ে ফোন আসে। কিন্তু বিদেশে ইঁদুর রপ্তানির কোনও সুযোগ নেই। তাই তিনি চাইছেন ইঁদুর রপ্তানির সুযোগ দিক বাংলাদেশের সরকার। বিভিন্ন গবেষণার, বিশেষ করে চিকিৎসা এবং ওষুধ গবেষণার কাজে লাগে প্রচুর পরিমাণে ইঁদুর। রাজশাহীর কাটাখালীর সমসাদিপুরের বাসিন্দা সালহাউদ্দিন মামুন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ল্যাবরেটরিতে কাজ করেন।
মামুন জানান, এখন প্রতিমাসে ৪৫০ থেকে ৫০০টি সাদা, অ্যালবিনো প্রজাতির ইঁদুর বিক্রি করেন তিনি। সাধারণত ইঁদুরগুলির ওজন ২৫ গ্রাম করে। আগে এই ইঁদুর বিক্রি হত ৪০ টাকা করে। এখন সেটাই বিক্রি হয় ১২০টা দরে।
সালাউদ্দিন মামুন জানান, বছরে প্রায় ৮ লাখ টাকার ইঁদুর বিক্রি হয়। তিনি জানান, ২০১৭ সালের শেষ দিকে তিনি বসেছিলেন ল্যাবরেটরিতে। সেই সময়ে PHD-র এক গবেষক, চারটি সুস্থ ইঁদুর নিয়ে এসে সেগুলিকে ছেড়ে দিতে বলেন। ওই ইঁদুর দেখে মায়া লাগে তার। মামুনের মনে হয়, ইঁদুরগুলিকে ছেড়ে দিলে কোন প্রাণী তাদের মেরে ফেলবে। তাই ঘরে নিয়ে এসে সেগুলির সুশ্রষা করেন তিনি। এর মধ্যে বিড়াল খেয়ে নেয় একটি ইঁদুর। কিছুদিন পরে সেই ইঁদুরগুলি বাচ্চার জন্ম দেয়। তারপরেই শখ করে ইঁদুর পালন এবং যত্ন করতে শুরু করেন তিনি।
মামুন জানান, তিনি ল্যাবরেটরি এসে ইঁদুরের বাচ্চা জন্মানোর কথা বলেন। সেই সময়ে সেখানে ট্যাক্সিডর্মি নিয়ে কাজ করছিলেন জার্মানির এক গবেষক। তিনি গবেষণার কাজের জন্য তার কাছে ইঁদুর চান।
মামুন বলেন, আমি তাকে কুড়িটি ইঁদুর দিয়েছিলাম। তিনি এই জন্য আমাকে ১ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তার এই ইঁদুর পালন করার কথা জানতে পারেন অন্যরাও। কোভিডের সময়ে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করেন। তাদের দরকার ছিল ইঁদুর। গবেষণার কাজের জন্য তারা মামুনের কাছ থেকে নিয়ে যান ৫০টি ইঁদুর।
তিনি বলেন, এখন রাজশাহী এলাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও অনেকেই ইঁদুরের জন্য ফোন করেন। ইঁদুরের প্রচুর চাহিদা আছে। কিন্তু সেই চাহিদা মতন আমি ইঁদুর সরবরাহ করতে পারি না।