জ্বর,সর্দি-কাশি, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট! চেনা অসুখের নিচে এবার অচেনা ভাইরাস। শহর থেকে শহরতলি, মফস্সল থেকে গ্রাম, পরিশ্রান্ত এই ভাইরাসে। তার নাম অ্যাডিনোভাইরাস। শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী হচ্ছে এই ভাইরাস। বড়দের ততটা কাবু করতে না পারলেও, তাদের থেকেও এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে শিশুদের শরীরে। তাই জ্বর-সর্দি-কাশি হলে বড়দেরও সাবধানে থাকতে হবে। জ্বর হলেই যে আপনার শরীরে অ্যাডিনোভাইরাস বাসা বেঁধেছে, তা বুঝবেন কী করে?
অ্যাডিনোভাইরাসের পরীক্ষা পদ্ধতি কী? আসুন জেনে নেয়া যাক।
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বললেন, কোভিডে যেমন নাক ও গলা থেকে লালারস সংগ্রহ করে কোভিড পরীক্ষা করা হয়, অ্যাডিনোভাইরাসের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি মেনে চলা হয়। লালারসের নমুনার পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) পদ্ধতিতে ভাইরাসের উপস্থিতি যাচাই করা হয়। শহরের খুব বেশি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা করা হচ্ছে না এখনও।
শহরে এনআইসিইডি ও স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে অ্যাডিনোডিনোভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এই দুই কেন্দ্রেই রোগীর নমুনা পাঠিয়ে অ্যাডিনোভাইরাসে রোগী আক্রান্ত কি না, তা যাচাই করছে।
অ্যাডিনোভাইরাসের এমন প্রতিপত্তিতে শঙ্কায় সাধারণ মানুষ। ভাবনায় চিকিৎসকরাও। বছরের শুরু থেকেই এই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা এই ধরনের অসুখের শিকার হচ্ছেন বেশি। চিকিৎসকের মতে, কিছুটা সংক্রমণ ঠেকাতে উচ্চ মাত্রার কিছু অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। কিন্তু তা দিয়েও আয়ত্তে সব সময় আনা যায় না সংক্রমণ। এক সময় কেবল শ্বাসকষ্ট বা পেটের সমস্যা ঘটত জ্বরের সঙ্গে, সামাল দেয়া যেত। কিন্তু এ বার ভেন্টিলেশন পর্যন্ত গড়াচ্ছে। সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট ছাড়া কিছু কাজও করছে না। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ইত্যাদিও ভাইরাসের চরিত্র বদলের জন্য অনেকাংশেই দায়ী।
সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার দুই দিন থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। বায়ুবাহিত অ্যাডিনোভাইরাস সাধারণত চোখ, অন্ত্র, মূত্রনালি ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে। এই ভাইরাসের আক্রমণ ঘটলে একটুও সময় নষ্ট করা উচিত নয়। যত তাড়তাড়ি সম্ভব চিকিৎসা শুরু করার পক্ষপাতী বিশেষজ্ঞরা।