আর্কাইভ থেকে অপরাধ

ভাড়া গাড়ি বিক্রি করে কোটিপতি কাইয়ুম

ভাড়া গাড়ি বিক্রি করে কোটিপতি কাইয়ুম

গাড়ি ভাড়া নিয়ে তা মালিককে না জানিয়ে বিক্রি করে চার মাসের মধ্যে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন আব্দুল কাইয়ুম ছোটন ওরফে ইশতিয়াক ওরফে মেহেদী। প্রতারক এই ব্যক্তিকে তার সহযোগীসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে পুলিশের এই ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “আব্দুল কাইয়ুম ছোটন ওরফে ইশতিয়াক ওরফে মেহেদীর গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকায়। সেখানে প্রত্যাশা নামে একটি এনজিওতে কাজ করলেও প্রতারণার জন্য চাকরিচ্যুত হন। পরে ঢাকায় এসে গাজীপুর বোর্ডবাজার এলাকার শহীদ সিদ্দিক লেনের ৫৮৫ নম্বর চারতলা বাড়ির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে ‘একে ফ্যাশন’ নামে একটি পোশাক কারখানা চালু করেন। কারখানার মেশিন সব ভাড়া নেন। ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি ২১০ জন শ্রমিক নিয়ে পোশাক কারখানাটি চালু করেন। কারখানায় টি-শার্ট, পলো শার্ট, প্যান্ট ও জ্যাকেট তৈরি হতো।”

মুক্তা ধর বলেন, ‘বায়ারদের জন্য গাড়ি ভাড়া নেয়ার বিজ্ঞাপন দেন ছোটন। গাড়ির মালিকেরা তার সঙ্গে ভাড়া নিয়ে আলোচনাকালে মাসিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেন ছোটন। তবে তিনি গাড়ির মালিকদের শর্ত দেন, বায়ারদের নিয়ে যেহেতু রাতে চলাচল করতে হবে। তাই গাড়িতে তার নিজের চালক থাকতে হবে, গাড়ির মালিকের দেয়া চালক তিনি নেবেন না। ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি ধরলে আসল কাগজপত্র দেখাতে হবে, তাই গাড়ির সব আসল কাগজপত্র রেখে দেন তিনি। ছোটনের কথায় গাড়ির মালিকেরা সব শর্তে রাজি হন। এই সুযোগে গাড়িগুলো বিক্রি করে দিতেন।’

বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে ২০ থেকে ৩০টি গাড়ি ভাড়া নকল কাগজপত্র তৈরি করে কম দামে বিক্রি করে দিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে বিআরটিএ অফিস বন্ধ থাকায় ক্রেতারা এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে পারেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আলমগীর নামে একজন সহযোগী রয়েছেন ছোটনের। তিনি এসব গাড়ি বিক্রি করতে সহযোগিতা করতেন। এ ছাড়াও তুরাগ থানার নাজমুল অটোপার্টস সেন্টারও গাড়ি বিক্রি করে দিত। ১৯ লাখের গাড়ি ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকা বিক্রি করা হতো। এই প্রতারণা তারা মার্চ ও এপ্রিল মাসে বেশি করেন।’

গাড়ির বিক্রির সময় ছোটন ক্রেতাদের বলতেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে, তাই গাড়ি বিক্রি করে দেবেন। এভাবে চার মাসে তিনি ২৫ থেকে ৩০টি গাড়ি বিক্রি করেছেন। পরবর্তী সময়ে গাড়ি বিক্রির ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা নিয়ে আত্মগোপনে যান তিনি। ছোটনের সহযোগী আব্দুল হাই, আলমগীর, নাজমুল ও সানীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও চোরাই গাড়ি যারা ক্রয় করেছেন তাদের মধ্যে রানা ও শামীম নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট সাতটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ভাড়া | গাড়ি | বিক্রি | করে | কোটিপতি | কাইয়ুম