কুমিল্লার মুরাদনগরে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অভিযুক্তরা ইতোমধ্যে গ্রাম্য মাতব্বরদের মাধ্যমে পরিবারের লোকজনকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে।
এ ঘটনায় বিচারের নামে মাতব্বরদের মধ্যে ৭০ হাজার টাকা ভাগাভাগি করার অভিযোগও উঠেছে। অবশেষে ঘটনার ১৪ দিন পর ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে চার মাতব্বর ও ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছে।
গেল ১২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কেমতলী গ্রামে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় মায়ের সঙ্গে ছাগল লালন পালন করতো ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। প্রতিদিনের মতো ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে বাড়ির আঙিনায় যায় সে। ঘটনার দিন দুপুরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে সে ঘরে আসলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা অভিযুক্ত তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠে।
একপর্যায়ে ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে অভিযুক্ত দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে পাশের বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ছাত্রীর মা-বাবা স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে বিচার চায়। তারা ওই পরিবারটিকে কোন প্রকার সহযোগিতা না করে ‘টাকা খেয়ে’ উল্টো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে যাওয়ার পথে অভিযুক্তের ছেলে, স্থানীয় মাতব্বর হযরত আলী হর্জন, নুরুল ইসলাম ও মনির হোসেন ভূক্তভোগি পরিবারকে কিছু টাকা দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার কথা বলে। আর যদি বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়, তাহলে পুরো পরিবারকে গ্রাম থেকে বের করে দেয়া হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। বিচার না পেয়ে ও গ্রাম ছাড়া হওয়ার ভয়ে মুখ বন্ধ করে ওই পরিবারটি দিনাতিপাত করছিল।
বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতে পেরে বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গেলে প্রথমে ভয়ে সবকিছু বলতে রাজি হয়নি। এ সময় স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের অভয় দিলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। পরে, বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে বুধবার রাতেই ওই পরিবারটিকে সুরক্ষা দিয়ে থানায় নিয়ে আসে। রাতেই চার মাতব্বরসহ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা করেন।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত ও মাতব্বররা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মুক্তা মাহমুদ