আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ছেলের জন্য হুইল চেয়ারের আকুতি এক অসহায় মায়ের

ছেলের জন্য হুইল চেয়ারের আকুতি এক অসহায় মায়ের

চয়ন আলীর বয়স ১৪ বছর। জন্মের পর থেকেই দু’হাত, দু’ পা বাঁকা। সেই সাথে কথাও বলতে পারে না। প্রতিবন্ধী এই শিশুটি কোন ধরণে চলাফেলা বা হামাগুড়ি দিয়েও চলা-ফেরা করতেও পারে না। বর্তমানে চয়ন সারাটা দিন ভাঙ্গাচুরা-জরাজির্ণ ও জোড়াতালি হুইল চেয়ারে বসেই দিন পাড়। ওই হুইল চেয়ারটিতে বসেথাকাও তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবন্ধী চয়ন আলী বড়ই এতিম । তার বাবা ১০ বছর আগে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জে জীবন-জীবিকার জন্য গেলে সেখানেই তিনি গাছের ডালকাঁটতে গিয়ে প্রাণ হারান। দশ বছর ধরে চয়ন আলী (১৪) ও ছোট মুক্ত খাতুন (১২) দুই জনেই এখন এতিম। ছোট বোন মুক্তা ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে।

গত ১০ বছরধরে দুই ভাই-বোন ও মা চম্পা বেগমসহ তার দাদা মির হোসেনের বাড়ীতে থাকেন। আয় বলতে চয়ণের প্রতিবন্ধী ভাতা। দাদা মির হোসেনের বাড়ীতে থাকলেও চয়ণের চাচা কিছুটা সহযোগীতা করার তারা এখন তাদের বাড়ীতে থাকেন।

গত দুই বছর আগে ফুলবাড়ী উপজেলা সমাজ সেবা থেকে প্রতিবন্ধী চয়ন আলীকে একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেয়। বর্তমানে হুইল চেয়ারটি কয়েক জায়গায় ভাঙ্গা এবং একে বারেই জরাজির্ণ। এমনিতে দাদা ও চাচা সব কিছুই বহন করছেন। আর কতই বা তারাকরবেন। অনেক কিছুই দিয়েছেন বলে জানান চয়নের মা।

চয়নের বাড়ী ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুটিচন্দ্রখানা গ্রামে । সে েওই গ্রামের  মৃত বাবলু মিয়ার ছেলে।  চয়নের মা চম্পা বেগম অসহায় প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে একটি নতুন হুইল চেয়ারের আকুতি জানান।

সেই সাথে চয়নের মা চম্পা বেগম ছেলের হুইল চেয়ারের পাশাপাশি তিনি তার জন্য বিধবা ভাতার জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

প্রতিবন্ধী চয়নের দাদা মির হোসেন (৬০) জানান ,আমার দুই ছেলে। চয়নের বাবা ১০ বছর আগেই মারা যান। ছোট ছেলে ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী করেন। শুধুমাত্র দুই ছেলের বাড়ী চালার জমি ছাড়া আমাদের কোন আবাদি জমি-জমা নেই। বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর ছেলের বৌ , নাতি নাতনি নিয়ে আমরা সবাই ছোট ছেলের বাড়ীতে বসবাস করছি। বাবা হারানো একটা মাত্র নাতিটা খুবেই অসহায়।

প্রতিবন্ধী চয়ন আলীর জন্য একটি হুইল চেয়ার ও তার মায়ের জন্য বিধবা ভাতার বিষয়ে কথা হলে ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুণ-অর-রশিদ-হারুন আজকালের মধ্যেই নতুন একটি হুইল চেয়ার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সাথে তার মায়ের জন্য বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন চেয়ারম্যান।

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ছেলের | জন্য | হুইল | চেয়ারের | আকুতি | এক | অসহায় | মায়ের