সবার মধ্যে উৎকণ্ঠা। কখন বাজবে শেষ বাঁশি? রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ শিবিরে উল্লাস। মালেতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শক্তিশালী ভারতকে হারায়নি বটে বাংলাদেশ, ১-১ গোলে ড্র করেছে। তবে এই ড্রয়ের আনন্দ জয়ের সমান।
খেলোয়াড়রা বাংলাদেশি প্রবাসী দর্শকদের সামনে গিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া দর্শকদের পানি ছিটিয়ে অভিবাদন জানান। ভারতকে সমর্থন দিতে আসা সমর্থকরা অনেকটা নিরবে স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন।
র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে ৮২ ধাপ পেছনে। এর উপর এক গোলে পিছিয়ে থেকে দশ জনের দল ছিল বাংলাদেশ। সেই অবস্থা থেকে এক গোল পরিশোধ করে ম্যাচে ফেরা অত্যন্ত কৃতিত্বের। কোচ অস্কার ব্রুজনের সাফল্যও এটি।
মালে স্টেডিয়ামে আসা বাংলাদেশি প্রবাসীরাও যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত। ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে এক গোলের ড্র যে বড় অনুপ্রেরণা। দুই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশই এখন চার পয়েন্ট নিয়ে সাফের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। রাতের ম্যাচে নেপাল না জিতলে বাংলাদেশের যুগ্ম অথবা এককভাবে শীর্ষে থাকার সুযোগ রয়েছে।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয় ছিল ২০০৩ সালে ঢাকায়। আজ জয় না পেলেও এই ড্র জয়ের চেয়ে কোনো অংশে কম না। আজকের ড্রয়ে বাংলাদেশ ভালোভাবেই ফাইনালের পথে রয়েছে। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ৭ অক্টোবর স্বাগতিক মালদ্বীপের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ ২৬ মিনিটে ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর গোলে পিছিয়ে পড়ে। ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাতের খানিকটা ভুলে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ে। কাকতালীয়ভাবে সেই ইয়াসিন আরাফাতের গোলেই বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরে। ৭৩ মিনিটে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার কর্নার থেকে ইয়াসিন আরাফাত গোল করলে বাংলাদেশ স্বস্তিতে ফেরে।
দ্বিতীয় অর্ধের আট মিনিটের মাথায় বাংলাদেশ দশ জনের দলে পরিণত হয়। ভারতের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কোলাসো বাংলাদেশের গোল মুখে প্রবেশ করছিলেন। তাকে স্লাইডিং ট্যাকেল করে বাধা দেওয়ায় রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখান। দশ জন হওয়ার পরও বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছে।
কোচ অস্কার পিছিয়ে পড়া এবং দশ জন নিয়েও অ্যাটাকার বাড়িয়েছে। সোহেল রানা, সুফিল ও সুমন রেজাকে নামান। তিন ফরোয়ার্ড নামার পর আক্রমণের গতি বাড়ে। ৭৪ মিনিটে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। ম্যাচে সমতা আনার পর কোচ অস্কার এই ড্র বজায় রাখতে চেয়েছেন। অ্যাটাকার রাকিবের পরিবর্তে ডিফেন্ডার রহমত মিয়াকেব মাঠে নামান। ম্যাচের বাকি সময় দুই দলই গোলের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ১-১ গোলের স্কোরলাইনে ম্যাচ শেষ হয়।
ভারত বল পজেশন, আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ তাদের পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে দেয়নি। গুরুত্বপূর্ণ এক পয়েন্ট আদায় করে নিয়েছে। বাংলাদেশও ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে ম্যাচে। এ যেন অস্কার ব্রুজনের অধীনে নতুন এক বাংলাদেশ।