আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

নিজের বাল্যবিয়ে ভেঙে দেয়ায় সংবর্ধনা পেলো মোনালিসা

নিজের বাল্যবিয়ে ভেঙে দেয়ায় সংবর্ধনা পেলো মোনালিসা

সম্প্রতি সময়ে মোনালিসা নামের এক এসএসসি পরীক্ষা শিক্ষার্থী নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়ে ফুলবাড়ী উপজেলায় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নিজের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করায় ওই এসএসসি পরীক্ষার্থী মোনালিসা আক্তারকে ফুলের শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার ( ৭ অক্টোবর) উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (পাইলট) এর হলরুমে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পাওয়া বড়লই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোনালিসা আক্তারকে ফুলের শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা স্বারক তুলে দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস।

এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার গরীব অসহায় মোনালিসার বাবা দিন মজুর মফিজুল ইসলামকে তার মেয়ের পড়াশুনা বাবদ প্রতিমাসে ১ হাজার টাকা করে দেয়ার প্রতিশ্রতি দেন। 

নির্বাহী অফিসার সুমন দাসের সভাপতিত্বে ও উপজেলা মাধ্যমিক সুপাভাইজার আব্দুস ছালামের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান শেখ, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আব্দুল হাই, উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবর রহমান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলি আক্তার, ফুলবাড়ী থানার ওসি রাজীব কুমার রায়, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল আজিজ মজনু,বড়লই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিচুর রহমান আনছারী (আংগুর), সুপার ইসমাইল হোসেন, মোনালিসার মা মুক্তা বেগম ও সংবর্ধিত শিক্ষার্থী মোনালিসা আক্তার প্রমূখ।

সংবর্ধনা পেয়ে শিক্ষার্থী মোনালিসা জানা, চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর স্কুল থেকে বাড়ীতে গিয়ে মোনালিসা দেখতে পান তার বাড়ীতে দুইজন অতিথি এসেছে। সেই দিনও সে বুঝতে পারেনি তাকে বিয়ের জন্য বর পক্ষের লোক দেখতে এসেছে। পরে সে বুঝতে পারে বাবা -মা গোপনে তার বিয়ে চুক্তি করে ফেলেছে। বিষয়টি নিয়ে বাবা-মা তাকে বলেন দেখ আমরা গরীব মানুষ। ভাল বর পাওয়া গেছে তুমি বিয়েতে রাজি হও। যদি আমাদের মৃত্যু হয় তাহলে তোমাকে কে দেখবে। তখন সে বাবা -মাকে ছাফ জানিয়ে দেয় আমি বিয়ে করবো না। আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমি পড়াশুনা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবো না।

পরে সে বাল্যবিয়ে থেকে কিভাবে রক্ষা পাওয়া যায়-এনিয়ে তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে পরামর্শ করে বাবা মাকে বাল্যবিয়ের কু-ফল বুঝিয়ে দেয়ায় পরবর্তিতে বিয়ে ভেঙ্গে যায়। পুরো বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে ইউএনও সুমন দাস ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোনালিসাকে সংবর্ধনা প্রদান করেন।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন নিজের | বাল্যবিয়ে | ভেঙে | দেয়ায় | সংবর্ধনা | পেলো | মোনালিসা