টি-টোয়েন্টিসুলভ ইনিংস না খেলেই, ১৭ বলে ১৮ রান করে ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়েছিল জাকের আলীকে। বিরক্তিতে ভেঙে পড়েছিলেন, আশপাশের সবকিছুতে লাথি মেরে জাকের যখন হতাশ, তখন ফোর্থ আম্পায়ার তাকে ডেকে নিলেন। রানআউট হয়েছেন মূলত শামীম পাটোয়ারী, নতুন উদ্যমে যেন মাঠে ফেরার সুযোগ পেলেন জাকের।
মাঠে ফিরে জাকের আলী যা করলেন, তা দর্শকরা মন ভরে উপভোগ করেছে। ৩ টি চার ও ৬ টি ছক্কায় ৪১ বলে ৭২ রান করে অপরাজিত ছিলেন। কেবলমাত্র ইনিংসের শেষ ওভারেই ২৫ রান তুলেছেন তিনি। বাংলাদেশের ১৮৯ রানের বড় সংগ্রহে জাকেরের ব্যাট সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।
পুরো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর নিজের করে নিয়েছেন জাকের আলী। যতদিন ক্রিকেট খেলবেন, এই সফরের কথা আলাদাভাবে নিশ্চয়ই স্মরণ করবেন তিনি। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার মোট ৮ টি ম্যাচ খেলে ৩৩ টি চার ও ১৯ টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। কেবলমাত্র সিরিজসেরার পুরস্কার জেতা হয়নি, প্রতিটা ম্যাচে দলের প্রয়োজন মিটিয়ে গেছেন একাধিকবার।
টেস্ট দিয়ে শুরু হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ। প্রথম ম্যাচে পরাজিত হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পায় বাংলাদেশ। জয় পাওয়া ম্যাচে জাকের সবচেয়ে কার্যকরী ইনিংস খেললেন। ১০৬ বলে তার ৯১ রানের ইনিংস লাল-সবুজের দলকে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল। এছাড়াও প্রথম টেস্টে ৫৩ ও ৩১ রানের দুইটি ইনিংস খেলেছেন তিনি।
সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরে ওয়ানডে সিরিজ ছিল মন খারাপের। একে একে তিনটি ম্যাচ হেরে যায় বাংলাদেশ। দল হারলেও জাকের এখানেও ছিলেন উজ্জ্বল। দ্বিতীয় ম্যাচে কেবল রান পাননি, প্রথম ও তৃতীয় ওয়ানডেতে ৪৮ ও ৬২ রানের ইনিংস খেলেন। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশকে ভালো সংগ্রহ এনে দেয়ার জন্য জাকেরের ইনিংস ছিল মূল্যবান।
টি-টোয়েন্টি সিরিজটা দাপট দেখিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। জাকের এখানেও দলের প্রয়োজন বুঝেছেন। প্রথম ম্যাচে ২৭ বলে ২৭ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ২০ বলে ২১ রানের ইনিংস দেখে ঠিক টি-টোয়েন্টি মনে হয় না। তবে সেসময় দলকে যা দেয়ার দরকার ছিল, তার সবটুকু মিটিয়েছেন তিনি। আর শেষ ম্যাচে হয়তো বাকিটুকু জমিয়ে রেখেছিলেন। টি-টোয়েন্টিতে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করার দিনে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন জাকের আলী অনিক।
বাংলাদেশের দর্শকরা লাল-সবুজের এই দলের কাছে হয়তো এমন ক্রিকেটই আশা করে, যা প্রতিপক্ষকে সুযোগ দেয় না, নিজেরাই তৈরি করে নেয় নিজেদের জায়গা।
এম এইচ//