রাজশাহী-১ আসনের (তানোর-গোদাগাড়ী) এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে সরকারী চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া থিম ওমর প্লাজার প্রশাসনিকন কর্তকর্মা নাহিদুজ্জামান পাপ্পুর নামে মামলা হয়েছে। মামলায় আসামী করা হয়েছে তার স্ত্রী বাঁধনকেও।
গেলো মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে পাপ্পুর প্রতারণার শিকার ৮ জন যুবক বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন।
আজ বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জনরোষ থেকে পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। পরে রাতেই ভুক্তভোগি শালবাগান এলাকার ইমনসহ ৮জন বাদি হয়ে প্রতারণার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে পাপ্পু ও তার স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তিনি জানান, পাপ্পু কতজন যুবককে চাকরি দেয়ার নামে টাকা নিয়েছে সেটি জানার জন্য রিমাণ্ড আবেদন করা হবে।
এরআগে মঙ্গলবার বিকেলে প্রতারণার শিকার ৩০ থেকে ৪০ জন যুবক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী নগরীর বিসিক এলাকার ম্যাচ ফ্যাক্টারির সামনে পাপ্পুর বাসা ঘেরাও করে। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ গিয়ে পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে উদ্ধার করে।
নাহিদুজ্জামান পাপ্পু এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর শপিংমল থিম ওমর প্লাজার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করতেন। তার বাড়ি নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায়। তিনি নগরীর সুপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টারির সামনে ফ্লাট কিনে সেখানে বসবাস করেন।
ভুক্তভোগিরা জানান, পাপ্পু নিজেকে এমপি ওমর ফারুক চৌধুীর ভাতিজা পরিচয় দিতেন। তিনি এমপিকে দিয়ে চাকরি নিয়ে দেবেন এমন আশ্বাসও দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ জর যুবকের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি হাতিয়ে নিয়েছে। কাউকে রেলের চাকরি, কাউকে পুলিশের এসআইয়ের চাকরি আবার কাউকে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরির কথা বলে তিনি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
কিন্তু কাউকেই চাকরি দেয়নি। এরমধ্যে অনেককেই ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে হয়রানি করেছে। চাকরি প্রত্যাশিরা টাকা ফেরত চাইলে পাপ্পু উল্টা হুমকি ধামকি ও চাঁদাবাজির মামলার দিয়ে পুলিশে দেয়ার হুমকি-ধামকি দিত।
চাররি প্রত্যাশিরা জানান, কাউকে রেলের চাকরি দেয়ার নামে ৮ লাখ, পুলিশের এসআই পদে চাকরির জন্য ২০লাখ, স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরির জন্য ১৬ লাখ, প্রাইমারীতে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার জন্য ১১লাখ কওে মোট প্রায় ৪০জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হারিয়ে নেয় পাপ্পু। গত বছর তাকে রেলে চাকরি দেয়ার কথা ছিল।
চাকরি প্রত্যাশি ইমন বলেন, রেলে চাকরি দেয়ার কথা বলে আমিসহ আরও ১০ জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পাপ্পু। আমাদের ভুয়া নিয়োগপত্রও দেয়া হয়েছিল। আমরা ১০ জন নিয়োগপত্র পাওয়ার পর চট্টগ্রাম রেলের দপ্তরে গেলে জানতে পারি আমাদের নিয়োগপত্র ভুয়া। পরে তারা ফিরে এসে পাপ্পুকে বিষয়টি জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তারা টাকা ফেরত চাইলে গড়িমশি শুরু করেন পাপ্পু। এক পর্যায়ে টাকা ফেরত দিবে বলে দিন নেন। কিন্তু সময় গড়ালেও তিনি আর টাকা ফেরত দেননি। তিনি বলেন মামলা করার পর তার লোকজন আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।