নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করা দুই কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ রবিবার (১৯ মার্চ) সকালে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর বর্ডার এলাকা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত কিশোরীরা হলেন নরসিংদী জেলার মাদবদী থানার সন্তোশ দাসের মেয়ে শিলা রানী ও দিনাজপুর জেলা ও সদর উপজেলার বর্তমান ভুলতা এলাকার মনির মিয়ার বাড়ির ভারাটিয়া সকাল চন্দ্রের মেয়ে শ্যামলী রানী।
রূপগঞ্জ থানার ওসি/তদন্ত আতাউর রহমান বলেন, গত ১ জানুয়ারি শিলা রানী ও শ্যামলী রানীকে মানবপাচারকারীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে শ্যামলী রানীর মা মুক্তা রানী বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা ও ভুক্তভোগীদের হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলার সুত্র ধরে নবী মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। নবী মিয়ার জানানো মতে ঠিকানা থেকে পাচার হওয়া কিশোরী শিলা রানী ও শ্যামলী রানীকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া কিশোরীদের তাদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরী বলেন, আমরা রূপগঞ্জ উপজেলার আউখাব এলাকার এনজেড টেক্সটাইল নামের কারখানায় চাকরি করতাম। চাকরির সুবাদে রশিদ নামের যুবকের সাথে আমাদের পরিচয় হয়। গত ১ জানুয়ারি রশিদ আমাদেরকে বিউটি পার্লারে বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাকুরী দিয়া বিদেশে পাঠাবে বলে প্রথমে চিটাগাংরোডে নিয়ে যায়। পরে সেখানে থাকা নবী মিয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে তারা আমাদেরকে গুলিস্তান বাস স্টেশনে নিয়ে যান। এরপর তাদের আরেক সহযোগী শাকিলের সাথে পরিচয় করায়। পরে শাকিলসহ ঢাকার বাড্ডা এলাকায় কাগজপত্র করার কথা বলে নিয়ে যান। রাতে বাসে করে যশোর নিয়ে যান। পরে যশোর থেকে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর বর্ডার এলাকা দিয়ে ভারতে পাচার করে দেন। সেখানে গিয়ে জানতে পারি তারা আমাদেরকে খারাপ কাজের উদ্দেশ্যে ভারতের দুজন লোকের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে চলে যায়। আমরা তখন বুঝতে পারি যে আমাদেরকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে পাচার করে দেয়া হয়েছে। বহু কৌশলে তাদের হাত থেকে ভারতের বনগাঁ জেলার মৌসুমপুর বর্ডার এলাকার পরিতোষ এর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেই। আশ্রয়কৃতের মোবাইলে আমাদের পরিবারের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে পুলিশ আমাদেরকে ভারত থেকে বিভিন্ন কলাকৌশলে এনে বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর বর্ডার এলাকা থেকে উদ্ধার করেন।