আর্কাইভ থেকে রেসিপি

কাঁচা আমের শরবতের উপকারিতা

কাঁচা আমের শরবতের উপকারিতা
সারাদেশে চলছে মাঝারি থেকে তীব্র দাপদাহ। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাস অবস্থা। তৃষ্ণা মেটামে অনেকেই ঠাণ্ডা পানি পান করছে। এদিকে, চলছে আমের মৌসুম। বাজারে প্রচুর কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে। সহজেই গরমে কাঁচা আমের ঠাণ্ডা শরবত মনের পাশাপাশি ঠাণ্ডা করে পেটও। রোদ্দুর থেকে ফেরার পর যদি এক গ্লাস কাঁচা আমের শরবত কেউ হাতের সামনে এগিয়ে দেয় তাহলে, মন্দ হয় না। এখন ছোটখাটো অনেক দোকানেই পাওয়া যায় এই শরবত। যদি একেবারে ঘরোয়াভাবে ঘরেই এটি বানিয়ে নিতে চান! তাহলে এই কটি জিনিস রান্নাঘরে মজুত থাকলেই হবে। রইল কাঁচা আমের শরবত বানানোর পদ্ধতি। উপকরণ: ১. একটি কাঁচা আম, ২. এক চা চামচ বিটনুন অথবা সাধারণ লবণ, ৩. এক চা চামচের অর্ধেক ভাজা জিরে গুঁড়ো, ৪. ভাজা শুকনো মরিচ একটি, ৫. স্বাদমতো বা পরিমাণমতো কাঁচা মরিচ ৬. দুই টেবিল চামচ চিনি ৭. চার কাপ ঠাণ্ডা পানি ৮. পরিমাণমতো বরফের টুকরো পদ্ধতি: প্রথমে মিক্সির পাত্রে ভালো করে ছোট ছোট করে কেটে নেওয়া আম, লবণ, চিনি, মরিচ ও এক কাপ পানি নিয়ে নিতে হবে। এরপর সেটিকে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে মিক্সির মধ্যেই। এরপর সেই পাত্রের ঢাকনা খুলে তার মধ্যে আরো এক কাপ পানি দিয়ে নিয়ে আরও একবার ঘুরিয়ে নিতে হবে, যাতে খাওয়ার সময় মুখে আমের টুকরো না পড়ে। এবার সেই মিশ্রণ গ্লাসে ঢেলে নিলেই কেল্লাফতে। এবার সেই গ্লাসের মধ্যে বেশ কয়েক টুকরো বরফ দিয়েই পরিবেশন করুন ঠাণ্ডা কাঁচা আমের শরবত। উল্লেখ্য, এই শরবত পেট ঠাণ্ডা করার পাশাপাশি শরীরের একাধিক সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে থাকে। ১. ভিটামিন সি– কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বর্তমান থাকে। এটি সর্দি, জ্বর, হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে জল পড়ার সমস্যা মেটাতে কার্যকরী। এটি ত্বক ও চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে থাকে। পাশাপাশি কাঁচা আমের শরবতে উপস্থিত ভিটামিন সি নখের ভঙ্গুরতাও কমায়। ২. ভিটামিন এ– কাঁচা আমে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। এটি চোখের পুষ্টির জন্য ভীষণভাবে জরুরী। ৩. লবণ ও জল– কাঁচা আমের শরবতে কাঁচা আম ছাড়াও জল, চিনি ও নুন থাকে। জল শরীরের পরিশূন্যতা মেটায়। পাশাপাশি এটি রক্ত পরিষ্কার রাখতেও সহায়তা করে থাকে। নুন শরীরে লবণের ঘাটতি মিটিয়ে শরীরের দুর্বলতা দূর করে। বাড়িয়ে তোলে রোগ প্রতিরোধ শক্তিও। ৪. পলিফেনল– কাঁচা আমে পলিফেনল নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান বর্তমান থাকে। এটি ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে সক্রিয় কোষগুলিকে তুলনামূলক দুর্বল করে দেয়। পাশাপাশি এতে উপস্থিত জিংক শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে। বাড়ায় খিদেও। ৫. ম্যাংগিফেরিন– কাঁচা আমে উপস্থিত এই প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি রক্তে চর্বির পরিমাণ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ৬. কাঁচা আম– এটি রক্তনালীকে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি হৃদপিণ্ডকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও লিভারের চর্বি কমাতে যেকোনো টক ফল বিশেষ করে কাঁচা আম ভীষণভাবে কার্যকরী। উল্লেখ্য, কাঁচা আমে রয়েছে আঁশ জাতীয় উপাদান। এটি বদহজমের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি দীর্ঘসময় পেট ভর্তি রাখতেও সহায়তা করে থাকে। কাঁচা আমের রস রক্তে খাবার হজমের শক্তি বাড়ায়। বাড়ায় এনজাইমের মাত্রাও। দূর করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও। এতে ক্যালসিয়াম ও আয়রনও বর্তমান, যা গর্ভবতী মহিলা ও বয়স্ক মানুষদের জন্য ভীষণভাবে উপকারী। উল্লেখ্য, যাদের হজম শক্তি দুর্বল তাদের রাতের বেলা কাঁচা আমের শরবত কিংবা কাঁচা আম না খাওয়াই শ্রেয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কাঁচা | আমের | শরবতের | উপকারিতা