আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ

গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বহুল আলোচিত তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করছে সাঁওতালরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হাসানের বিচারিক আদালতে সাঁওতাল হত্যা মামলার নারাজি দরখাস্তের বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল। এর আগে শুনানি ৪ দফা পিছিয়ে গেলো ১৫ মার্চ ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হাসান এ দিন ধার্য করেন। আইনজীবি এ.এন.এম ফয়জুল আলম রণন বলেন, এ মামলার নারাজি ৪ দফা পিছিয়ে গত ১৫ মার্চ দীর্ঘ শুনানি শেষে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। কিন্তু আদেশ হতে উত্তোলনপূর্বক নারাজি দরখাস্ত অধিকতর শুনানির জন্য আবারো দিন ধার্য করেন। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সাত বছরেও মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে মামলার বাদী ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে সংকিত হয়ে পড়েছে। এদিকে, হত্যার বিচার, বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও তাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ সাতদফা বাস্তবায়নের দাবীতে  ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে থানামোড়ে সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ করে সাঁওতালরা। অবরোধকালে বক্তব্য রাখেন, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কে, সহসভাপতি সুফল হেমব্রম, সদস্য বৃটিশ সরেণ, ময়নুল ইসলাম, আদিবাসী প্রিসিলা মুরমু ও নেত্রী সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা। ওইদিন বিকাল তিনটা থেকে প্রায় ১ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এসময় সড়কের দুপাশে সকল যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন দুরপাল্লার যানবাহনসহ সাধারণ পথচারিরা। এর আগে সাঁওতাল-বাঙালির নারী-পুরুষের একটি মিছিল বাগদাফার্ম এলাকা থেকে এসে পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে থানাচৌমাথা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে সাঁওতালদের দাবীর বিষয়টি উচ্চ মহলে জানানোর আশ্বাস দিলে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেন। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন বলেন, রাস্তা অবরোধ করায় যাত্রী সাধরণের ভোগান্তির বিষয়টি অবরোধকারীদের বুঝানো হয়। পাশাপাশি তাদের দাবী-দাওয়ার বিষয়টি সমাধানে উচ্চ মহলে জানানোর আশ্বাস দিলে সাঁওতালরা অবরোধ তুলে নেয়। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কে বলেন, নারাজির ওপর ৪ দফা সময় শুনানি পিছানো হয়েছে। এতে আমরা ন্যায় বিচার নিয়ে শংকা প্রকাশ করছি। এভাবে কালক্ষেপন করা হলে এর থেকেও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, বিরোধপূর্ণ জমিতে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ পুলিশ সঙ্গে নিয়ে আখ কাটতে গেলে সাঁওতালরা বাপ-দাদার সম্পত্তি দাবী করে বাঁধা দেন। এতে পুলিশের গুলিতে শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টুডু নামে তিন সাঁওতাল মারা যান। পুলিশসহ উভয়পক্ষের আহত হন অন্তত ৩০জন।    

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন গোবিন্দগঞ্জে | সাঁওতাল | হত্যার | বিচারের | দাবীতে | মহাসড়ক | অবরোধ