দেশ ছাড়লেন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো এবং আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান।
বৃহস্পতিবার রাত ১টা ২১ মিনিট তাকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
বিমানবন্দর সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, রাত ১টা ২১ মিনিটে ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে ৮৫৮৫ ফ্লাইটে করে মুরাদ আপাতত দুবাই যাচ্ছেন। ফ্লাইটটি ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল ১১টা ২০ মিনিটে। তবে তিন দফা প্রথমে ১২টায় ও পরে সাড়ে ১২টায়, সবশেষে ১টায় ফ্লাইটের সময় নির্ধারণ করা হয়।
তিনি নাকি আপাতত দুবাই যাচ্ছেন এমন আভাসই মিলছে। এবং সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র অথবা কানাডায় যেতে পারেন। ইমিগ্রেশন সূত্র বলছে, ডা. মুরাদকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখা হয়েছিল। কর্মকর্তারা তাকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় শেষ পর্যন্ত কর্মকর্তারা তাকে ছেড়ে দেন।
রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন ডা. মুরাদ। সেখানে রজনীগন্ধা লাউঞ্জে অপেক্ষমাণ ছিলেন। পদ হারানোর পর থেকে দেশত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি গণমাধ্যম এড়িয়ে চলেছেন। তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় অভিযোগ থাকলেও মামলা হয়নি।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থী জুলিয়াস সিজার তালুকদার।। এতে তিনি মুরাদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তাচ্ছিল্য করা এবং ঢাবির নারী শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের অভিযোগ আনেন।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা তদন্ত করছি। বিশেষজ্ঞদের মতামত ও তদন্ত শেষে অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে গতকালই ডা. মুরাদ হাসানের বিদেশ যাত্রায় কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘তিনি বিদেশে থাকবেন নাকি স্বদেশে থাকবেন, এটি তার এখতিয়ারের ব্যাপার। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নাই।’
প্রসঙ্গক্রমে, দেশের বিভিন্ন টকশো ও অনুষ্ঠানে নানা বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য এবং ঢাকাই সিনেমার এক নায়িকার সঙ্গে অডিও ফাঁসের ঘটনায় ডা. মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি পদত্যাগ করেন। একইসঙ্গে জামালপুর আওয়ামী লীগের পদও হারান এই ডা. মুরাদ।
মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য। পেশায় চিকিৎসক এ রাজনীতিবিদ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর আওয়ামী লীগ সরকার তাকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।
পরে ২০১৯ সালের মে মাসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
মুক্তা মাহমুদ
