সিগারেটের ধোঁয়ায় ৭ হাজার ৩৬৫ রকমের রাসায়নিক থাকে। যার মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক কারসিনোজেনিক (মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে এমন) রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটি ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য এবং মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রফেসর ডা. অরূপ রতন চৌধুরী।
রোববার (২৮ মে) পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি। সেমিনারে সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।
‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে তামাক বিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত এ সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি অন্তরায় তামাক। তামাক ব্যবহারের জন্য দেশে তামাকজনিত অসংক্রামক রোগ এবং এর ফলে অপরিণত বয়সে মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামাক সেবনজনিত রোগের চিকিৎসা বাবদ একদিকে যেমন সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে তামাক চাষের ফলে উর্বর জমিতে খাদ্যশস্য চাষের সুযোগ কমে যাচ্ছে।
সম্মানীয় অতিথির বক্তব্যে ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি পাঠ্যপুস্তকে ধূমপানের ক্ষতিকারক দিকগুলো সম্পর্কে আরও বিশদভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং তামাকের ক্ষতিকর দিক মোকাবিলায় পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন গড়ে তোলার ব্যাপারে জোর দেন।
সভাপতির বক্তব্যে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি তামাক রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল করার দাবি তোলেন। কৃষি মন্ত্রণালয়কে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে আরও জোরালো ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
ড. আহমদ বলেন, পিকেএসএফ বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্পের আওতায় তামাকবিরোধী কার্যক্রম বিশেষ করে তামাকের জমিতে বিকল্প ফসল উৎপাদনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সেমিনারে বিশেষ বক্তা ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ধোঁয়াযুক্ত তামাকের ব্যবহারে যিনি সরাসরি খাচ্ছেন তার চেয়ে তার আশপাশের পরোক্ষভাবে ধোঁয়া গ্রহণকারী মানুষেরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। মহিলাদের স্তন ক্যান্সার এবং শিশুদের নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস ও হুপিং কাশির অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পরোক্ষ ধূমপান। সিগারেটের ধোঁয়ায় ৭ হাজার ৩৬৫ রকমের রাসায়নিক থাকে। যার মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক কারসিনোজেনিক (মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে এমন) রয়েছে।