আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

আধিপত্য ও আর্থিক সংশ্লেষ টিপু হত্যার বড় কারণ : ডিবিপ্রধান

আধিপত্য ও আর্থিক সংশ্লেষ টিপু হত্যার বড় কারণ : ডিবিপ্রধান
মতিঝিল এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, আধিপত্য বিস্তারের জেরে খুন হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মূল সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন সুমন সিকদার ওরফে মুসা (৪৩)। হত্যার পর তাকে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় ওমান থেকে গ্রেপ্তার করে ফিরিয়ে আনা হয়। সোমবার (৫ জুন) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের তদন্তে টিপু হত্যার মোট আসামির সংখ্যা ৩৪। তবে একজনের পরিচয় শনাক্ত করতে না পারায় তার নাম বাদ দিয়ে ৩৩ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলে তার নামও সম্পূরক হিসেবে সংযুক্ত করা হবে চার্জশিটে। তিনি বলেন, মামলায় ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ অনুসারে জবানবন্দি প্রদান করেছেন তিন জন। তারা হলেন- মাসুম মোহাম্মাদ আকাশ (৩৪), নাসির উদ্দিন মানিক ও সুমন সিকদার ওরফে মুসা (৪৩)। টিপু হত্যার তদন্ত সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, টিপু হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নে সরাসরি শ্যুটার হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন মাসুম মোহাম্মাদ আকাশ (৩৪)। তাকে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরেকজন শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম (৩৫)। তাকে গ্রেপ্তার করা হয় সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে। হারুন অর রশীদ বলেন, আধিপত্য ও আর্থিক সংশ্লেষ টিপু হত্যার বড় কারণ। তবে টিপু হত্যায় যারাই জড়িত ছিলেন তাদের কারও রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। যারাই সম্পৃক্ত বা টিপু খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেকের নাম মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করে আজ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। টিপু হত্যার মামলার তদন্ত সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, জাহেদুল ইসলাম টিপু মতিঝিলের আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন, অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। ১৪ মাস আগে টিপু খুন হন। তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর ডিবি মতিঝিল টিম তদন্ত কাজ শুরু করে। প্রথম কয়েকদিনের মধ্যে আমরা মাস্টারমাইন্ড পর্যায়ের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করি। টিপু একা খুন হননি। তাকে মার্ডার করতে আসা শ্যুটারদের গুলিতে খুন হন কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিও। আমরা প্রায় ২৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। আজ আমরা ৩৩ জন আসামির নামে চার্জশিট দাখিল করেছি। পলাতক রয়েছেন ৯ আসামি। হারুন বলেন, ঘটনা ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা শ্যুটার আকাশকে বগুড়া থেকে ও মোল্লা শামীমকে ভারত পালানোর প্রাক্কালে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তার ২৪ জনের সঙ্গে কথা বলে ও সাক্ষ্য প্রমাণে উঠে এসেছে যে, টিপু হত্যা পরিকল্পিত। টিপুকে হত্যার জন্য বিভিন্ন এলাকায় মিটিং করেছেন জড়িতরা। হত্যার পর প্রথম এক মাসে অধিকাংশ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরও যেহেতু এটা স্পর্শকাতর ঘটনা। সেজন্য কোনো ধরনের ভুল বা ত্রুটি না হয় সেজন্য তদন্তে সময় নেয়া হয়। আজ সেটার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। টিপু হত্যায় গ্রেপ্তার আসামি যারা জিসান ওরফে জিসান আহাম্মেদ ওরফে মন্টু ওরফে এমদাদুল হক (৫০), জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক (৪৫), সুমন সিকদার ওরফে মুসা (৪৩), মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ (৩৭), শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম (৩৫), মারুফ রেজা সাগর ওরফে সাগর (৪০), আরিফুর রহমান সোহেল ওরফে ঘাতক সোহেল (৪৫), জুবের আলম খান ওরফে রবিন ওরফে রেলওয়ে রবিন (৫১), হাফিজুল ইসলাম ওরফে হাফিজ (৫০), তৌফিক হাসান ওরফে বাবু ওরফে বিডি বাবু (৩৬), মাহবুবুর রহমান ওরফে টিটু (৪০), নাসির উদ্দিন ওরফে মানিক (৪৭), মশিউর রহমান ওরফে ইকরাম (৩৬), ইয়াসির আরাফাত সৈকত (৩৩), আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমাম খান ওরফে দামাল (৪৯), সেকান্দার সিকদার ওরফে আকাশ (২৬), খাইরুল ইসলাম মাতব্বর ওরফে খোকা (৪৪), আবু সালেহ শিকদার ওরফে সুটার সালে (৩৮), নাসির উদ্দিন ওরফে কিলার নাসির (৩৮), ওমর ফারুক (৫২), সোহেল শাহরিয়ার (৪১), মোহাম্মদ মারুফ খান (২৮), ইসতিয়াক আহম্মেদ জিতু (৩৯), ইমরান হোসেন ওরফে জিতু (৩২), রাকিবুর রহমান ওরফে রাকিব (৩১), ও মোরশেদুল আলম পলাশ। পলাতক আসামি যারা এনামুল ইসলাম ওরফে এক্সেল সোহেল (৪৮), রিফাত হোসেন (৩৮), রানা মোল্লা (৪০). আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব (৩৫), সামসুল হায়দার ওরফে উচ্ছল উজ্জল (৪১), কামরুজ্জামান ও বাবুল ওরফে বাবুল তালুকদার (৬২), গোলাম আশরাফ তালুকদার (৬৮) ও মারুফ আহমেদ মনসুর (৫৭)।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আধিপত্য | ও | আর্থিক | সংশ্লেষ | টিপু | হত্যার | বড় | কারণ | | ডিবিপ্রধান