আর কিছু আমাদের সঙ্গ দিক না দিক, মশা আমাদের কখনও ছেড়ে না। মশা নিয়ে ঘর সংসার। মশাই যেনো জীবন পথের সঙ্গী। তার যন্ত্রণায় রীতিমতো জীবন নাজেহাল হয়ে ওঠে। মশা মারার জন্য বাড়িতে নিত্যনতুন ওষুধের আমদানিও করতে হয়। কিন্তু একটি ওষুধ কিছুদিন চলার পর মশা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে অর্থাৎ ওষুধের সঙ্গে মানিয়ে নেয়। তখন আবার শুরু হয় নতুন কোনও ওষুধ খোঁজা। শুধু ওষুধ কেন, মশা মারার জন্য নানান রকম প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের ঘরের মধ্যে মজুত রাখতে হয়। জানলায় জাল লাগানো থেকে গায়ে বিশেষ ধরনের তেল মাখা, একেকজনের একেকরকম টোটকার উপরে ভরসা করে থাকেন। কিন্তু সবসময় তাতে রেহাই মেলে না।
তবে এবার রেহাই মিলতে পারে। তেমনটাই আশা জোগাচ্ছেন ইসরায়েলের বিজ্ঞানীরা। তাদের তৈরি বিশেষ ওষুধ গায়ে মশা বসতেই দেবে না। এমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকরা।
সম্প্রতি হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ ধরনের মশা প্রতিরোধী ওষুধ আবিষ্কার করেছেন। এই ওষুধটি গায়ে মাখলে ৯৯ শতাংশ মশা গায়ে বসার আগেই গন্ধে দূরে সরে যায়। কীভাবে কাজ করে এই ওষুধ?
হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ও এই গবেষণার প্রধান গবেষক ডক্টর জোনাথন বহবত বলছেন, প্রাথমিকভাবে এই ওষুধটি একটি বিশেষ প্রক্রিয়া যা মশা তাড়াতে সাহায্য করে। ওষুধটির নাম রাসায়নিক ক্যামোফ্লাজ। মশা তাড়ানোর পর এর মধ্যে থাকা বিশেষ সেলুলোজ পলিমার (এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ) রাসায়নিক ক্যামোফ্লাজের মতো আচরণ শুরু করে।
তিনি আরো জানান, এই বিশেষ ঔষধটি প্রাথমিকভাবে ব্যক্তির গায়ের গন্ধ লুকিয়ে রাখে। এর ফলে মশা নিজে থেকে এসে যখন বসে, তখনও সে বুঝতে পারে না কোথায় বসেছে। এরপরেই ধীরে ধীরে বিষপ্রয়োগ শুরু হয়। যার জেরে দূরে সরে যায় মশা। সাধারণত বাজারে যে সব রেপেল্যান্ট পাওয়া যায়, সেগুলি একমুখী কাজ করে। অর্থাৎ শুধু মশা তাড়ানোই তার কাজ। তবে এই ওষুধে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতেই পারবে না মশা। ফলে একরকম ছদ্মবেশ ধরে মশাকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব।