রাজধানীকে বর্জ্যমুক্ত করতে শুরু হয়েছে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণকাজ। সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় অপসারণকাজে বিঘ্ন ঘটছে।দ্রুত বর্জ্য অপসারণের জন্য তারা প্রায় ২০ হাজার কর্মী প্রস্তুত রেখেছে। ইতোমধ্যেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দুপুর ২টা থেকে শুরু করে ২৪ ঘণ্টা এবং উত্তর সিটি করপোরেশন ৮ ঘণ্টায় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করবে বলে জানিয়েছে। এছাড়া দ্রুত ও নির্ধারিত সময়েই বর্জ্য অপসারণে হটলাইন খোলা আছে এবং বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রায় ১১ লাখ প্লাস্টিক ও পলিব্যাগ সরবরাহ করেছে দুই সিটি কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পশু কোরবানি করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এরপর দুপুরের আগেই নির্ধারিত স্থানে পশুর বর্জ্য ব্যাগভর্তি করে রাখেন অনেকে। দুপুরে বর্জ্য অপসারণের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন দুই মেয়র। পরে পশুর বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা।
এর আগে দুই সিটির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্ধারিত সময়ে কোরবানির পশুর বর্জ্য এবং হাটের বর্জ্য অপসারণ করতে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সব কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বর্জ্য অপসারণের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ইনশাআল্লাহ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ করতে পারবো। গতবারও যেভাবে আমরা সফল হয়েছি, এবার তার আগেই আমরা ঢাকাবাসীকে সুফল দিতে পারবো।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কতো তাড়াতাড়ি বর্জ্যগুলো সরাতে পারবো, তা নির্ভর করবে এলাকাবাসীর ওপর। এলাকাবাসী যত্রতত্র যেন ময়লাগুলো না ফেলে রাখে। আমরা প্রত্যেককেই বায়োডিগ্রেবল পলিথিন দিয়েছি। আমি অনুরোধ করবো, প্রত্যেকেই যেন নিজ নিজ ময়লা নির্ধারিত স্থানে নিয়ে ফেলে। আমাদের প্রায় ১১ হাজার কর্মী কাজ করেছেন।
কোরবানির বর্জ্য ও সাধারণ বর্জ্য অপসারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ৩৫৭টি বিভিন্ন ধরনের যান-যন্ত্রপাতি (পে-লোডার- ১০টি, বেকহো-লোডার- ৪টি, স্কিড লোডার-১টি, টায়ার ডোজার-৭টি, চেইন ডোজার- ৩টি, ড্রাম্প ট্রাক-৯৬ টি, কম্পেক্টর- ৫৩টি, পানিবাহী গাড়ি ৯টি ইত্যাদি) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত হাতগাড়ি, বেলচা, কাটা ও টুকরিসহ অন্য প্রয়োজনীয় মালামাল ওয়ার্ড পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা (রাজউক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর) থেকে সৌজন্যমূলক ২৪টি ভারি যন্ত্রপাতি বর্জ্য অপসারণ কাজে নিয়োজিত থাকবে।
অন্যদিকে, উত্তর সিটিতে কোরবানির পশুর বর্জ্য তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণ এবং কোরবানির পশুর হাটগুলো দ্রুত পরিষ্কারের লক্ষ্যে ঈদের আগের দিন থেকে ঈদের পরবর্তী দুদিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য বর্জ্যবাহী ড্রাম্প ট্রাক/খোলা ট্রাক, ভারি যান-যন্ত্রপাতি, পানির গাড়ি, বেসরকারি এবং ভাড়ায় পিকআপভ্যানসহ সর্বমোট ৬১৫টি গাড়ি নিয়োজিত রয়েছে।
ল্যান্ডফিলে ঈদুল আজহার বর্জ্য পরিবেশসম্মত ডিসপোজাল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ৬টি এস্কেভেটর, ৪টি চেইন ডোজার, ২টি ট্যায়ার ডোজার ও ১টি পে-লোডার নিয়োজিত রাখা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ভ্যানগাড়িতে করে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।