প্রায় দুই বছর আগে নাটোর সদর উপজেলার রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের বাবুর পুকুরপাড় এলাকায় এক যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে এক যাত্রীর কাছ থেকে ১ কেজি ২৯০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। যার বাজার মূল্য এক কোটি ২৯ লাখ টাকা। কিন্তু ওই হেরোইনের প্যাকেটে মিলেছে আচারের মতো বস্তু।
বুধবার (১২ জুলাই) নাটোর জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. মো. সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) নাটোর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ উদ্দিন উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি বগুড়া জেলার পাল্লাপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল সাত্তারের ছেলে মাসুম হোসেন (৩৭)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শকের অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে তার বিরুদ্ধে মাদক মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরে মঙ্গলবার মামলার যুক্তি ও তর্কের দিন ধার্য করে আদালত। কিন্তু তার আগেই বিচারক আদালতে আলামত উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। এ সময় আলামত খোলা হলে, ১ কেজি ২৯০ গ্রাম হেরোইনের সাতটি প্যাকেটে আচারের মতো বস্তু দেখতে পান। পরে মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ১৭ জুলাই ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০২১ সালের (৪ সেপ্টেম্বর) ওই এলাকায় একটি চেকপোস্ট বসায় র্যাবের একটি দল। পরে রাজশাহী থেকে পাবনাগামী যাত্রীবাহী মাছরাঙ্গা পরিবহনে তল্লাশি চালিয়ে মাসুমকে আটক করা হয়। এ সময় তার শরীরে থাকা সাতটি পলিথিন পেপারে মোড়ানো এক কেজি ২৯০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়। যার মূল্য ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম দীর্ঘদিন ধরেই মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় হেরোইন বিক্রির উদ্দেশ্যে পাবনার দিকে যাচ্ছিল বলে জানান। ২০২১ সালে শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে অভিযুক্তকে নাটোর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে নাটোর সদর থানার তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
পিপি অ্যাড. মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, গত সোমবার (১০ জুলাই) বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত মহোদয় জেলখানা পরিদর্শনে যান। সেখানে হেরোইন মামলার আসামি মাসুম বিজ্ঞ মহোদয়কে জানান, ‘আমার জেল দেন আর ফাঁসি দেন’ আমি সব মাথা পেতে নেব। কিন্তু আমার কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামত হেরোইনের প্যাকেটটি আপনি একটি বার যাচাই করে দেখবেন। এরপর আমাকে যে আর্দেশ দেবেন তা আমি মাথা পেতে নেব। এ কথা শোনার পর বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মহোদয় তার কথা আমলে নেন। পরে তিনি মঙ্গলবার মামলার শুনানি দিনে আলামতগুলো দেখতে চান। আলামত খোলার পর দেখা যায় হেরোইন মর্মে উল্লেখ মামলায় সেই সাতটি প্যাকেটে আচারের মতো বস্তু। মামলায় আলামত কালার বাদামি রঙের উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এটা খয়েরি রঙের দেখা যায়। পরে এ বিষয়ে আদালত ব্যাখ্যা চেয়েছেন এবং আগামী ১৭ জুলাই দিন ধার্য করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন জানান, ‘উদ্ধারকৃত আলামত ল্যাবে পরীক্ষার পর হেরোইন প্রমাণিত হয়। সেই রিপোর্ট জমা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে র্যাব কর্তৃক আলামত সিলগালা অবস্থায় কোর্ট পুলিশের মালখানায় জমা দেয়া হয়’।