আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কিংবদন্তি শিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ আর নেই

কিংবদন্তি শিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ আর নেই

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিংবদন্তি শিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ। 

গতকাল রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৩ বছর। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে কিডনী রোগে আক্রান্ত হয়ে নিয়মিত ডায়ালাইসিস চলছিল তাঁর।

রবিশঙ্কর তাঁর নাচ দেখে বলেছিলেন, ‘তুমি তো লয়ের পুতুল’! কত্থকের সেই ‘মহারাজা’ আর নেই। কথক নৃত্যশিল্পীদের মহারাজ পরিবারের একজন বংশধর তিনি। সাত পুরুষ ধরে তাঁদের পরিবারে কত্থক নাচের চর্চা। তাঁর দুই কাকা শম্ভু মহারাজ এবং লচ্ছু মহারাজ ছিলেন বিখ্যাত কত্থক শিল্পী। বাবা অচ্চন মহারাজই ছিলেন বিরজুর গুরু।

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একাধিক ধারার সঙ্গে যেমন যুক্ত ছিলেন, তেমনই বহু ছবিতে কোরিওগ্রাফারের কাজও করেছেন তিনি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সত্তর দশকের মাঝামাঝি সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’-র কোরিওগ্রাফি। ছবিতে দুটো গানের কোরিওগ্রাফি করেন বিরজু। এর মধ্যে একটা ছিল ‘কানহা মে তোসে হারি’। গানটার সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা আমজাদ খান।

কলকাতার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক ছিল বিরজুর। ১৯৫২ সালে এই শহরেই জীবনে প্রথম মঞ্চে নাচেন তিনি। মন্মথ নাথ ঘোষের বাড়িতে। চৌদ্দ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে জীবনে উঠে দাঁড়াবার জন্য লড়াই করছেন বিরজু। ঠিক সে সময়ই ডাক এসেছিল কলকাতা থেকে। কাকা লচ্ছু মহারাজ তখন মুম্বইয়ে কোরিওগ্রাফির কাজ করছেন। আর এক কাকা শম্ভু মহারাজ ব্যস্ত ছিলেন লখনউতেই নিজের কাজে। তাই তাঁর মা পরিচিত এক ভাইয়ের সঙ্গে কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন বিরজুকে। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ধীরে ধীরে প্রকাশ করেছেন নিজেকে। দেশ-বিদেশে বহু অনুষ্ঠান করেছেন। রেখে গেছেন প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী।

নিজের শিল্পকর্ম এবং শিক্ষার মধ্যে দিয়েই অমরত্ব লাভ করবেন বিরজু।

অনন্যা চৈতী

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কিংবদন্তি | শিল্পী | পণ্ডিত | বিরজু | মহারাজ | আর | নেই