বৈশ্বিক জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় সমুদ্রের ভূমিকা অপরিহার্য। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মোট অক্সিজেনের অর্ধেকই আসে এখান থেকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে সামুদ্রিক প্রাণীর বাস্তুসংস্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফোরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্যমতে, বর্তমানে সমুদ্রতলের গড় তাপমাত্রা ২০ দশমিক ৯৬, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি। বাড়তে থাকা এই তাপমাত্রা সামুদ্রিক মাছ সহ অন্যান্য প্রাণীর প্রজননের ক্ষেত্রে হতে পারে বড় হুমকি। যুক্তরাজ্যের সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র বলছে, মানবসৃষ্ট দূষণ ও অতিরিক্ত মাছ শিকারের ফলে সমুদ্রের খাদ্যচক্র পড়েছে বিপর্যয়ের মুখে।
গেলো কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূলে পানির তাপ বৃদ্ধির কারণে ধ্বংস হচ্ছে প্রবাল প্রাচীর।
ইয়েল ক্লাইমেট কানেকশনসের আবহাওয়াবিদ জেফ মাস্টার্স বলেন, বর্তমানে ফ্লোরিডার কিছু এলাকায় সমুদ্রের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০১ দশমিক ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এবার যে তাপমাত্রা দেখছি তা অকল্পনীয়। এভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠ উত্তপ্ত থাকায় অন্য প্রাণীর পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে প্রবাল প্রাচীরের।
সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো, বনাঞ্চল ধ্বংস করা, অতিরিক্ত মাছি শিকারকে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন পরিবেশবিদরা। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাগর, মহাসাগর ও উপসাগরগুলোর তাপ ও গ্রিনহাউজ গ্যাস শোষণের ক্ষমতা কমবে।
যা মেরু ও শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোর হিমবাহ ও জমাট বরফের স্তর দ্রুত গলিয়ে ফেলবে। এর প্রভাবে বাড়বে সমুদ্র পৃষ্ঠার উচ্চতা ও পানির নিচে তলিয়ে যাবে বহু অঞ্চল বলছেন বিশেষজ্ঞরা।