শুরু হতে যাচ্ছে ‘সবার জন্য পেনশন’ কার্যক্রম। চারটি স্কিমে ব্যক্তির ৬০ বছর পূর্ণ হলে মিলবে এ সুবিধা। এজন্য সুবিধাভোগীকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দিতে হবে। মাসে ১ হাজার টাকা করে ২০ বছর চাঁদা দিলে অবসরের পর প্রতি মাসে দেয়া হবে ৫ হাজার টাকা। একইভাবে ২ হাজার টাকায় পাওয়া যাবে ১০ হাজার এবং ৫ হাজারে মাসে মিলবে ২৫ হাজার টাকা।
নিম্নবিত্তদের ক্ষেত্রে মাসিক চাঁদায় সহায়তা দেবে সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৮ বছর পূর্ণ হওয়া দেশের প্রতিটি নাগরিক এ পেনশন কার্যক্রমের সুবিধাভোগী হতে পারবেন। অতিদরিদ্র, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত, বেসরকারি কর্মচারী এবং প্রবাসীদের জন্য থাকছে পৃথক স্কিম।
পেনশন কার্যক্রম নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, উচ্চ আয়ের মানুষেরা এমনিতেই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। ভালো স্কুল-হাসপাতালে যায়। সরকারি অফিসে গেলে মনোযোগ পায়, বসার চেয়ার পায়। দরিদ্র মানুষগুলো গেলে ঢুকতেও পারে না। তাদের জন্য তৈরি এই পেনশন কার্যক্রম।
ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দেবার পরই মিলবে এ সুবিধা। পেনশনের সার্বিক বিষয় নিয়ে কার্যপত্র তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেখানে অতিদরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর কেউ এ সুবিধায় যুক্ত হলে তাদের মাসিক ৫০০ টাকা দিতে হবে। বাকি ৫০০ টাকা পরিশাধ করবে সরকার। এ স্কিমে ১৮ বছরের কেউ যুক্ত হলে ৬০ বছর পূর্ণ হবার পর মাসে পাবেন প্রায় ৩৫ হাজার টাকা।
একইভাবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে যারা কাজ করেন, তারা ১৮ বছর থেকে মাসে ২ হাজার টাকা করে দিলে ৬০ বছর পর মাসিক ভিত্তিতে পাবেন প্রায় ৬৯ হাজার টাকা।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম বলেন, এর মাধ্যমে ব্যক্তিখাতে আরেকটি সুযোগ তৈরি হলো। ব্যাংকে টাকা রাখা কিংবা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার বাইরে মানুষের জন্য নতুন আরেকটি আর্থিক সুবিধা পাওয়ার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে।
বেসরকারি কর্মচারিদের জন্য থাকছে প্রগতি স্কিম। এ স্কিমে যুক্ত হওয়াদের চাঁদার ৫০ শতাংশ কোম্পানির পরিশোধের সুযোগ রাখা হয়েছে। মাসিক ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত স্কিমে যোগ দেয়া যাবে। ১৮ বছর থেকে ৪২ বছর ধরে চলা স্কিমে ৬০ বছর পর মাসে পাওয়া যাবে ৬৮ হাজার ৯৩১ টাকা।
প্রবাসী স্কিমে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা রাখা যাবে। মাসে ৫ হাজার টাকা করে ৪২ বছর ধরে পরিশোধ করে বয়স ৬০ হলে মাসে পাওয়া যাবে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পেনশন অথরিটির যেন সুযোগ থাকে, সরকারের কোনো প্রকল্পে অর্থ ব্যায়ের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার। না হয় এটি সরকারের টাকা তোলা এবং ব্যায়ের একটি মাধ্যম হবে। যৌক্তিক বিবেচনায় টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেয়ার আগেই চাঁদাদাতা মারা গেলে তার জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেবে সরকার।