দিন দিন উল্লেখযোগ্য হারে কমছে ভূপৃষ্ঠের নিচে থাকা পানির স্তর। বিশ্বের অনেক দেশে মাটির ৪০-৫০ ফুট খুঁড়েও মিলছে না পানি। এ সংকট নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এনেছে ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই)।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ডব্লিউআরআইর নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের জনসংখ্যার এক–চতুথাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ চরম পানিসংকটের মধ্যে রয়েছে। অপরদিকে বছরে অন্তত এক মাস পানির সংকটে ভোগেন বিশ্বের ৪০০ কোটি মানুষ।
বুধবার (১৬ আগস্ট) প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৬০ সালে যে পরিমাণ পানির চাহিদা ছিল, বর্তমানে সেটি দ্বিগুণ হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ত্বরান্বিত হওয়ায় পানি সংকটও দিন দিন বাড়ছে।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, এখন যত সংখ্যক মানুষ খাবার পানির সংকটে রয়েছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ এর সঙ্গে আরও ১০০ কোটি মানুষ যুক্ত হবেন। বিশ্বে এখন জনসংখ্যা ৮০০ কোটি। সেই হিসেবে বর্তমানে ২০০ কোটি মানুষ পানি সংকটে রয়েছেন। ২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াবে ৩০০ কোটি।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৪০০ কোটিরও বেশি মানুষ বছরে অন্তত এক মাস চরম পানি সংকটের সম্মুখীন হন। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৬০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ২৫ শতাংশ মানুষ পানির চরম সংকটে রয়েছেন, তাদের বসবাস মাত্র ২৫টি দেশে। পৃথিবীর দুটি অঞ্চলের মানুষ বেশি পানির সংকটে রয়েছে। সেটি হলো- মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় থাকা পাঁচ দেশ হলো- বাহরাইন, সাইপ্রাস, কুয়েত, লেবানন, ওমান। স্বল্প সময়ের জন্য খরা দেখা দিলেই এই দেশগুলোতে ব্যবহার্য পানির পরিমাণ প্রায় শূন্যে নেমে আসে। এছাড়া আরও যে পাঁচটি দেশ পানি সংকটের মুখে রয়েছে সেগুলো হলো- সৌদি আরব, চিলি, স্যান ম্যারিনো, বেলজিয়াম ও গ্রিস।
গবেষকরা বলছেন, দিন-দিন ব্যবহারযোগ্য পানির চাহিদা বাড়ছে। রয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর চাপ। তবে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কোনও নীতি প্রণয়ন না করা এবং এ খাতে সবচেয়ে কম বিনিয়োগ করাটাও এ সংকেটর বড় কারণ।
সূত্র: গার্ডিয়ান ও সিএনএন