ঢাকা-ভাঙ্গায় পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গার উদ্দেশে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ট্রেনটি ভাঙ্গা পর্যন্ত ১০ স্টেশনের মধ্যে প্রথম দিন পাঁচটি স্টেশনে থামবে।
পরীক্ষামূলক ওই ট্রেনে রয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনসহ সরকারের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা।
ঢাকা-ভাঙ্গা পরীক্ষামূলক এ ট্রেন অটো সিগনাল পদ্ধতিতে চলাচল করায় আধুনিক রেল নেটওয়ার্কে নতুন মাইলফলক রচিত হলো। আগামী ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু দিয়ে আনুষ্ঠানিক ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে, বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে আটটি বগি নিয়ে বিশেষ এ ট্রেনটি পদ্মা সেতু অতিক্রম করে। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এবং নিমতলা স্টেশনে করা হয় যাত্রা বিরতি। এরপর রাত পৌনে ৮টায় রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে পৌঁছায় শীতাতপ সুবিধা সম্বলিত ট্রেনটি।
প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, কথা ছিল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কমলাপুর থেকে ট্রেনটি রওনা হবে। কিন্তু কমলাপুরে নতুনভাবে সংস্কার করা অংশ থেকে ট্রায়াল ট্রেনটি ফরিদপুরের ভাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়েছে সকাল ১০টা ৭ মিনিটে। পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের স্টেশনেই ট্রেনটির যাত্রাবিরতি করার কথা।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ জানান, পদ্মা সেতু এবং দুই পাড়ের রেলপথ প্রস্তুত এখন। ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ রেলপথে পদ্মা সেতু অতিক্রমের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুতগতির ট্রেনে চড়ে রাজধানী থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফরিদপুরের ভাঙ্গা যাওয়ার কথা। এর পরদিনই রেলপথ উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। তাই প্রকল্পজুড়ে এখন ভীষণ ব্যস্ততা। আর পদ্মা সেতুর রেলপথ চালু এবং প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে পদ্মার দুই পাড়ের মানুষ উচ্ছ্বসিত।
বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগ ফরিদপুর স্টেশন মাস্টারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নতুন এ রেলপথ দিয়ে প্রথম ঢাকা থেকে ভাঙ্গা স্টেশনে যাচ্ছে ট্রায়াল ট্রেনটি। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেলপথের উদ্বোধন করবেন। পুরো প্রকল্পে নির্মাণ হতে যাওয়া ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ১৭২ কিলোমিটার।
ফরিদপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. তাকদির হোসেন জানান, বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ট্রায়াল ট্রেনটি রাজবাড়ী থেকে ফরিদপুর এসে পৌঁছায়। এখানে এক মিনিট বিরতি শেষে ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা হয়ে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে আসে ট্রেনটি।
তিনি বলেন, এর আগে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে দশটার সময় ঈশ্বরদী থেকে ট্রায়াল ট্রেনটি রাজবাড়ী এসে পৌঁছায়। সেখানে রাত্রি যাপন শেষে রাজবাড়ী থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় ফরিদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ট্রেনটির চালক হিসেবে রয়েছেন আবুল কাশেম, আর পরিচালনার দায়িত্বে আছেন মো. সালাউল্লাহ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ভাঙ্গা থেকে রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, খুলনা, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, যশোরের বেনাপোল রুটে এমনকি ভারতে যাওয়ার মৈত্রী ট্রেনেরও পদ্মা সেতু ব্যবহারেরও প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যায়ক্রমে পায়রা বন্দরসহ আরও নতুন নেটওয়ার্ক যুক্ত হবে পদ্মা সেতুর রেললাইনে। এ ৮২ কিলোমিটার রেলপথে কোনো লেভেল ক্রসিং থাকছে না। ১২০ কিলোমিটার গতিতে রেল চলাচলে সবরকম দক্ষতা অর্জন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।