‘সাথী’! খুব সহজ যার ব্যবহার। অনায়াসেই রপ্ত করা যায় একে। একবার ব্যবহারেই যাকে ভালোবাসতে বাধ্য হবেন কর্মজীবী নারীরা।‘সাথী’ থাকলে অফিসে যাওয়া-আসাসহ বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসা কর্মজীবীদের জন্য এখন আর কষ্টের নয়।
হ্যাঁ, বলা হচ্ছে আকিজ মোটরসের নিয়ে আসা তিন চাকার ব্যাটারিচালিত ই-বাইক। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘সাথী’।
এটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, সাইকেল বা মোটরসাইকেল চালানো না শিখেও খুব সহজে চালানো যাবে। বাইকটিতে ৬০০ ওয়াটের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। এত একবার পূর্ণচার্জে ই-বাইকটি শহরে ৫০-৫৫ কিলোমিটার এবং হাইওয়েতে ৬০-৬৫ কিলোমিটার যেতে পারে। ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। ব্যাটারি ক্ষমতা ৬০ ভোল্ট ও ২০ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার। ৪-৬ ঘণ্টা চার্জে সারাদিন চলার নিশ্চয়তা মিলে তিন চাকার এই আকর্ষণীয় ই-বাইকে।
নিরাপত্তার জন্য ‘সাথী’র তিন চাকাতেই রয়েছে হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক। ৩০০-১০ সাইজের চাকা এবং যথেষ্ট গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স থাকাতে উঁচু-নিচু বা, গতিরোধকগুলোও ‘সাথী’ সহজে টপকে যাবে। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য ই-বাইকটির পিছনের দুই চাকাতেই শক অ্যাবসর্ভার রয়েছে। শব্দ ও জ্বালানিবিহীন এসব ই-বাইকে শক্তিশালী ও উন্নতমানের জেল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে।
‘সাথী’তে সিটের মাঝখানে জিনিসপত্র রাখার সুপরিসর জায়গা রয়েছে। এছাড়া সিটের নিচের অংশে অনায়াসে নিজের হেলমেট থেকে শুরু করে আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র লক করে রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে। সিটের হেলান দেয়ার পেছনের অংশেও রয়েছে খাঁচাসদৃশ স্টোরেজ। মোটকথা নিজের প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র অনায়াসে এই ই-বাইকে নিয়ে চলে যেতে পারবেন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়।
ই-বাইকটিতে থ্রটলের নিচে সুইচে রয়েছে গিয়ার। তিন পুশ গিয়ার সমৃদ্ধ এই সাথীতে সহজে গিয়ার চেঞ্জ করে যেকোনো প্রতিকুল রাস্তাও অনায়াসে পাড়ি দেয়া যাবে। গিয়ার সুইচের পরেই রয়েছে ব্যাক গিয়ার। সুইচটি চেপে বাইক থেকে না নেমে মোটরের সাহায্যে সহজে ই-বাইকটিকে পেছনে নেয়া যাবে।
এই বাইকে পায়ের কোন কাজ নেই। দুই হাতে ব্রেক রয়েছে। কোথাও পার্ক করে রাখার জন্য রয়েছে ব্রেক লকার। ‘সাথী’র ডান হাতে রয়েছে থ্রটল। থ্রটল যত ঘোরানো হবে ততই গতি বাড়বে। থ্রটল ছেড়ে দিলে ধীরে ধীরে বাইকের গতি কমে আসবে। এতে রয়েছে ডিজিটাল স্পিডো মিটার।
ই-বাইকটির গতি, ব্যাটারির চার্জ, হাইবিম ইন্ডিকেটরসহ নানাবিধ তথ্য এতে প্রদর্শিত হবে। স্পিডো মিটারের সামনে উইন্ড শিল্ড রয়েছে। সামনের অংশে রয়েছে আকর্ষণীয় হেড এবং সাইড লাইট। চুরির হাত থেকে ই-বাইকটিকে রক্ষা করতে বাইকটিতে কি লকের পাশাপাশি রিমোট লক ব্যবহার করা হয়েছে।
বাইকটির হ্যান্ডেল বারের ঠিক নিচেই রয়েছে পানির বোতল, মোবাইল ফোন, ওয়ালেট বা ছোট খাট জিনিসপত্র রাখার ঝুড়ি। পেছনের যাত্রীর পা রাখার জন্য বাইকটিতে অতিরিক্ত ফুট রেস্ট বা পাদানি সংযোজন করা হয়েছে।
আকিজ মটরসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, যানজটের এই শহরে নারীদের বাসে ভ্রমণ এক দুঃসহ যন্ত্রণা। কিন্তু ‘সাথী’ থাকলে অফিসে যাওয়া-আসাসহ বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসা কর্মজীবীদের জন্য এখন আর কষ্টের নয়। নেই কোনো বাইক রেজিস্ট্রেশনের ঝামেলা। জীবন হবে অনেক সহজ।
আকিজ মটরসের ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ফারুক জানান, পরিবেশ বান্ধব এই ই-বাইকটি ২৫০ কেজি পর্যন্ত ধারণ করতে পারে। সম্পূর্ণ মেইন্টেনেন্স মুক্ত ড্রাইসেলের ব্যাটারি ব্যবহার করাতে ই-বাইকটি আলাদা কোন যত্নের প্রয়োজন নেই।
তাসনিয়া রহমান