কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলার জনগণের দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চিলমারী উপজেলার রমনা ফেরিঘাটে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন এবং চিলমারী নদীবন্দর উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বচর) কুড়িগ্রামের চিলমারী (রমনা) ফেরিঘাটে ‘চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন এবং চিলমারী নদীবন্দর উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন তিনি। বিআইডব্লিউটিসির 'কুঞ্জলতা' ফেরি দিয়ে চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। এর ফলে ব্রহ্মপুত্র নদ বিধৌত রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলার মানুষদের জেলা শহরে যাতায়াতে ভোগান্তি কমে আসবে। চিলমারী-রৌমারী রাজিবপুর রুট ছাড়াও কুড়িগ্রামের সাথে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে, যাতায়াত খরচও কমে যাবে। পরবর্তিতে আরো একটি ফেরি এ রুটে যুক্ত হবে। এই ফেরি রুটের নাব্যতা বজায় রাখার জন্য দু’টি ড্রেজার থাকবে। ফেরি সার্ভিস চলাচলের মধ্য দিয়ে নদী পথে যোগ হলো যোগাযোগের নতুন মাত্রা।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে অবদান তা কেড়ে নেয়া যাবে না। ১৫ বছর ধরে ফখরুলরা বলছেন- সরকারকে ফেলে দিচ্ছে; কিন্তু তারা সেটা পারেনি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কুড়িগ্রামের বাসন্তীকে নিয়ে যারা দুর্ভিক্ষের চিত্রধারণ করেছিল, তারা তাদের ফায়দা নিয়েছে। দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করেনি। শেখ হাসিনা বাসন্তীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, তাকে ঘর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রৌমারীকে মূল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত করে দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এর চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান শাহীন, চিলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম লেছু, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী শোভন ও প্রকল্প পরিচালক সাজিদুর রহমান ।
উল্লেখ্য, চিলমারী নদীবন্দর উন্নয়নে ২শ ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে এর কার্যক্রম শেষ হবে।
অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদ জেলার রৌমারী-রাজীবপুর এ দুই উপজেলাকে আলাদা করে রেখেছে। এ দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে জেলা শহরে যাতায়াত করতে একমাত্র নৌকার ওপর ভরসা করতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে আটকে যায় নৌকা। চিলমারী-রৌমারী নৌপথের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এ পথের দৈর্ঘ্য ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটারে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে বিআইডব্লিউটিএ।
এদিকে চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল উদ্বোধনের দিন চিলমারী বন্দরে এক সুধী সমাবেশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ফেরি পারা পারের ভাড়া কমানোর জন্য জনগণের দাবি সমর্থন করেছেন।
পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সর্বসাধারণের সুবিধার জন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রস্তাবিত ভাড়া থেকে কমিয়ে সিএনজি চালিত বেবী ট্যাক্সি বা অটোরিক্সা ৬শ ৬০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩শ টাকা, মটর সাইকেল ২শ ২০ টাকা থেকে কমিয়ে ১শ টাকা, বাই সাইকেল ১শ ২০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা, জনসাধারণের জন্য প্রস্তাবিত ৮০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা ও এম্বুলেন্স এর কোন ভাড়া লাগবে না। অন্যান্য যানের ক্ষেত্রে ভাড়া শতকরা পনের ভাগ কমানো হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
এএম/