আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ত্রিভূবনজয়ী সত্তা নারী

ত্রিভূবনজয়ী সত্তা নারী

কন্যা হয়ে যার জন্ম, স্ত্রীতে তার রুপান্তর, জননী হয়ে যার পূর্ণতা। তিনিই হলেন নারী। ত্রিভূবনজয়ী সত্তা নারী। আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

এ বছর মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য।’

বিশ্বে এক’শ বছরের বেশি সময় ধরে পালিত হয়ে আসছে দিবসটি। এই নারী দিবসটি কি? এর শুরু কবে কখন? এটি কি উৎসব নাকি বিক্ষোভ? এসব কি সকলের জানা?

ইতিহাস আজীবন কথা বলে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসের। এমনই এক ইতিহাসের গুরুত্ব বহণ করে ৮ই মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

শ্রম আন্দোলন থেকে শুরু হয়ে নারী দিবস এক সময় জাতিসংর্ঘের স্বীকৃতি লাভ করে।

১৮৫৭ সালে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্টকরণ, কাজের অমাণবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় নেমেছিলেন পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকরা। সেই আন্দোলনে নারীরা স্বীকার হয় পুলিশি নির্যাতনের। গ্রেপ্তার হন অনেক নারী শ্রমিক।

১৯০৮ সালে একই দিনে প্রায় ২০ হাজার নারী কর্মঘণ্টা কমানো, মজুরী বাড়ানো আর ভোটাভিকারের দাবীতে নিউইয়র্কের রাস্তায় ১৪ দিন ধরে বিক্ষোভ করে।  

নানা ঘটনার পর ১৯০৮ সালে জার্মানিতে এ দিনটি স্মরণে প্রথম নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছিলেন। এ সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ও রাজনীতিবিদ ক্লারা জেটকিন প্রতি বছর ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেন।

নারী দিবস উদযাপনে ক্লারা যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাতে কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ ছিলো না। ১৯১৭ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে রুশ নারীরা ‘রুটি ও শান্তির’ দাবিতে বিক্ষোভ করার পর এর তারিখ নির্ধারিত হয়। চারদিন ধরে চলা ওই বিক্ষোভের পর প্রাদেশিক সরকার নারীদের ভোটাধিকার দেয়।

রাশিয়ায় ব্যবহৃত জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখটি ছিলো ২৩ শে ফেব্রুয়ারি রোববার। আর গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখটি ছিলো ৮ মার্চ। এ কারণেই বর্তমানে ৮ই মার্চ নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়।    

দিনটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রথম উদযাবিত হয় ১৯১১ সালে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে।

১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়।

বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের আগে থেকে ব্যক্তি উদ্যোগে ও বেসরকারিভাবে ক্ষুদ্র পরিসরে নারী দিবস পালিত হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে সরকারিভাবে এদেশে আন্তজার্তিক নারী দিবস পালন শুরু হয়।

দিবসটির শতবার্ষিকী পালিত হয় ২০১১ সালে। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে আমরা পালন করছি দিবসটির ১১১ তম বার্ষিকী।

 

 

  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ত্রিভূবনজয়ী | সত্তা | নারী