ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। গেলো ৭ অক্টোবর থেকে হামাসের হামলার জবাবে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে মসজিদ, স্কুল, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার খাদ্য গুদামও রক্ষা পায়নি ইসরায়েলি হামলা থেকে।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদুলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, গেলো প্রায় দুই সপ্তাহে গাজার ২৬টি মসজিদ একেবারে গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল।
শনিবার (২১ অক্টোবর) গাজা-ভিত্তিক এনডাউমেন্টস অ্যান্ড রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স মিনিস্ট্রি এসব তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার বেশিরভাগ এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও কয়েক ডজন মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এতে বলা হয়, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর, মন্ত্রণালয়ের কোরআন রেডিও স্টেশন এবং একটি গির্জাও ধ্বংস করেছে।
গাজার ওপর আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং ইসরায়েলকে বেসামরিক মানুষ, মসজিদ এবং গীর্জায় অপরাধমূলক আচরণে দায়বদ্ধ করার এবং তাদের বিরুদ্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গাজার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গেলো ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আল আকসা ফ্লাড অভিযান শুরু করেছে হামাস। তারা জানিয়েছে যে, আল-আকসা মসজিদে ঝড় ও ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
হামাসের হামলার জবাবে নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় অপারেশন সোর্ডস অব আয়রন শুরু করে তারা।
গাজায় হামলার পাশাপাশি সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করেছে ইসরায়েল। তাদের হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। প্রতিদিনই মৃত্যু, আহত এবং বাস্তুচ্যুতির সংখ্যা বাড়ছে। এমন ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আরও প্রকট সংকটের মুখে পড়তে পারে গাজাবাসী। সেখানে দেখা দিতে পারে, ডায়রিয়া, কলেরার মতো সংক্রামক রোগ।
অক্সফাম ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় কলেরাসহ পানিবাহিত অন্য মারাত্মক সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে সেখানে। দ্রুত জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া না হলে গাজায় জনস্বাস্থ্যে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হবে।
এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি।
শনিবার মিসরের রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর সেখান দিয়ে ২০টি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে গাজায়। খাবার, পানি ও ওষুধ ছাড়াও এসব ট্রাকের একটিতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কফিনও। কিন্তু গাজার বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য মাত্র এই ২০ ট্রাক ত্রাণ সাহায্যকে ‘মহাসাগরে এক ফোঁটা পানির’ সঙ্গে তুলনা করেছে জাতিসংঘ।