নাশকতার নতুন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)। বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিরা এটি ব্যবহার করলেও, এবার হরতাল অবরোধ এর মত রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও এই বোমা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময় নিয়ন্ত্রিত এই বোমা মূলত নির্ধারিত সময়ে বাসে আগুন ধরানোর জন্য ব্যবহার করছে দুর্বৃত্তরা।
গেলো বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের প্রধান উপকমিশনার রহমত উল্লাহ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এর আগে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিরা আইইডি ব্যবহার করলেও এই প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে নাশকতায় এটি পাওয়া গেলো। বাসের ভেতর আইইডি রেখে জ্বালাও–পোড়াওয়ের চেষ্টা চালানো দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
৩০ নভেম্বর দুপুরে ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজের ওপর দিশারী পরিবহনের একটি বাসের পিছনের দিকে বোমাসদৃশ বস্তু দেখা যায়। সেটি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে ভয়ে যাত্রীরা দ্রুত নেমে যান। বাসের কন্ট্রাক্টর ফাঁকা বাসটিকে নয়াবাজার ঢালে পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি নিয়ে যান।
খবর পেয়ে কোতয়ালি থানার ওসি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং সিটিটিসির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলকে জানান। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে সেখানে যায় সিটিটিসির বোমা বিশেষজ্ঞ দল। দলের এক সদস্য বাসের মাঝখানের দিকের আসনের নিচে থাকা একটি আইইডি উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করেন।
এর আগে ২০ নভেম্বর সকালে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে উদ্ধার করা আইইডির সঙ্গে এর হুবহু মিল পাওয়া গেছে। দুটি ঘটনায় উদ্ধারকৃত আইইডি এর গঠনশৈলী এক হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে। একই চক্র এবং বোমা তৈরিতে দক্ষ কেউ এগুলো বানিয়েছে বলে সিটিটিসি সূত্র জানায়।
সিটিটিসি আরও জানায়, আইইডি পর্যালোচনায় দেখা যায়, এটি সময় নিয়ন্ত্রিত। এতে উচ্চমাত্রার কোনো বিস্ফোরকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। সময় নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি টেবিল ঘড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে নাশকতাকারী যাতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে পারে সে কারণেই নতুন এই অস্ত্রটি ব্যবহার করছে। নতুন এই অস্ত্রকে মারাত্মক ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।