আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান আদালতে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাব দিয়েছেন।
রবিবার(৩ ডিসেম্বর) শোকজের জবাব দিতে আদালতে যান শামীম ওসমান। এদিন সকালে তিনি নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তা এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ কাজী ইয়াসিন হাবিবের আদালতে হাজির হয়ে জবাব দেন।
এর আগে, শনিবার (২ ডিসেম্বর) নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয় নির্বাচন কমিশন।
শোকজের জবাব দিয়ে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কে এম শামীম ওসমান বলেন,‘নির্বাচন কমিশন আমাকে নোটিশ দিয়েছে, গত পরশু নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এবং সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তির মিছিল হয়েছে। যেহেতু সারা দেশে বিএনপি জামায়াত এবং জঙ্গিরা জ্বালাওপোড়াও করছে, মানুষকে হত্যা করছে এবং রাজনীতির নামে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমার নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্বে মহল্লায় মহল্লায় শান্তি মিছিল করা হয়েছে। সেই শান্তির প্রতীক নৌকার পক্ষে মিছিল করেছে। সেই দৃষ্টিতে এই প্রোগ্রামটি রাজনৈতিক প্রোগ্রাম তাই নির্বাচন কমিশন আমাকে শোকজ নোটিশ দিতে পারে।
নির্বাচন কমিশনকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘অনেকের মুখে চুনকালি দিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আমি এর আগে কখনও দেখিনি, একটি বা দুটি পত্রিকার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রার্থীকে তলব করা হয়। যদিও প্রার্থী সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। সে হিসেবে আমার দুঃখ পাওয়ার কথা। কিন্তু আমি দুঃখ না পেয়ে আনন্দ পেয়েছি। নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছেন, তারা যথেষ্ট শক্তিশালী তাদের পরিপক্বতা আছে। এই বাংলাদেশে তারা সুষ্ঠু সুন্দর একটি নির্বাচন তারা উপহার দিতে পারবেন। আপনারা দেখেছেন, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় আমার ছেলেসহ আমি এসেছিলাম। নির্বাচন কমিশনের আইন মানার চেষ্টা করেছি।’
এসময় তিনি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন,‘জেলা দায়রা জজের (২য়) মাধ্যমে আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছি, যারা নির্বাচনকে বন্ধ করার জন্য সারা দেশে জ্বালাওপোড়াও অগ্নিসংযোগ করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। যাতে জনগণ তাদের ইচ্ছেমতো ভোট কেন্দ্রে দিয়ে ভোট দিতে পারে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার (২ ডিসেম্বর) নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় নির্বাচন কমিশনের কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, ‘গত ১ ডিসেম্বর জাতীয় পত্রিকার অনলাইনে ও ২ ডিসেম্বর প্রিন্ট ভার্সনে সচিত্র সংবাদ অনুযায়ী শুক্রবার শহরের তল্লা এলাকায় আপনার পক্ষে নৌকা প্রতীকের ফেস্টুন ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে মিছিল ও পথসভা করা হয়। যার ফলে যানবাহন ও পথচারীদের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এরূপ কার্যক্রম প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ৬ এর (খ) এবং ১২ ধারা বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আগামী ৩ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে ব্যক্তিগতভাবে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে ব্যাখ্যাসহ কারণ দর্শানোর অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে নির্বাচন পূর্ব সময়ে আচরণবিধি মেনে চলার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হলো।’