বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোনো কিছুই ভাবছে না-বা অনুমান করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশি সাংবাদিক ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিবের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন সরকারের অবস্থান এভাবে আবারও স্পষ্ট করলেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মূখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। সাফ জানিয়ে দিলেন-তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) চাওয়া বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।যুক্তরাষ্ট্রের এই চাওয়াটা বাংলাদেশের জনগণও চায়।এসময় আবারও প্রশ্ন করার সময় বিরক্ত হয়ে ওই বাংলাদেশি সাংবাদিকের মাইক বন্ধ করে তাকে থামিয়ে দেন ম্যাথিউ মিলার।
সোমবার(৪ ডিসেম্বর)যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটসের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা বলেন। বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড় চলছে।এরই মধ্যে প্রার্থীদের বাছাই সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল। আসছে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই নির্বাচন।সোমবার(৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তার প্রশ্নটি ছিল, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে—যেখানে সরকার নজিরবিহীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার চেষ্টা করছে।২০ হাজারেরও বেশি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ছয় দিনে তিনজন বিরোধী কর্মী মারা গেছেন। নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের না পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করার মতো ঘটনা ঘটছে।নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য কিংস পার্টিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ সব প্রধান রাজনৈতিক দল নির্বাচন বয়কট করছে—মার্কিন সরকার বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশের সম্ভাবনাকে কীভাবে মূল্যায়ন করে?
বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিক ফজল আনসারীর দ্বিতীয় এমন প্রশ্নে বেশ বিরক্ত বোধ করেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণাণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
তিনি বলেন,‘আবারও আমাকে। আমি নই। তারপরও আমাকে বলতে হবে! এই প্রশ্নের পর আর নয়। আমি এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের হাতে খুব কম সময়। এই সময়ের মধ্যে আপনাদের অনেকের প্রশ্ন আছে এবং তাদের জবাব দিতে হবে। আমরা বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফল অনুমান করতে চাই না। আমরা এখনও তাই বলবো যা আগেও আমরা বেশ কয়েকবার বলেছি। আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে যা দেশটির জনগণেরও চাওয়া।আমরা বলেছি ,সরকার, বিরোধীদল,সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তাদেরকে আহ্বান জানাতে থাকবো তারা যেনো বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা পূরণে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে কাজ করে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে এর আগে খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিক ম্যাথিউ মিলারকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে একজন শিখ নেতাকে টার্গেট করার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ম্যাথিউ মিলার বলেন,‘আমরা বহুজাতিক নিপীড়নের বিরোধী। তা সেটা যেখানেই বা যে-ই ঘটাক না কেন। সুনির্দিষ্টভাবে ভারতকে লক্ষ্য করে এ মন্তব্য নয়। এটা বিশ্বের যেকোনো দেশের জন্য।দ্বিতীয়ত এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রয়োগকারীরা দেখছে।এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে এটা নিয়ে কথা বলবো না।
’
মূলত ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটসের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এই সাংবাদিক বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রায়ই মার্কিন সরকারের অভিপ্রায় ও মূল্যায়ন জানতে চান।এমন পরিস্থিতিতে সোমবার একই প্রশ্নের জবাবে শেষে আরেকটি প্রশ্ন করতে গেলে ওই সাংবাদিকের মাইক বন্ধ করে দিয়ে তাকে থামিয়ে দেন।