প্রায় দুই বছর ধরে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান চলছে। রুশ এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা এবার বেঁকে বসায় মার্কিন সহায়তা তহবিলে টান পড়েছে।
আর এতেই বেশ সোচ্চার হয়ে উঠেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার দাবি, ইউক্রেনকে সাহায্য দেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিলম্ব রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘স্বপ্ন’ পূরণ করেছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার ওয়াশিংটনে দেয়া এক বক্তৃতায় মার্কিন সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য আবেগপ্রবণ আবেদন জানান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি সতর্ক করে বলেন, রাশিয়ার আক্রমণকে পরাস্ত করতে সহায়তায় ব্যর্থ হলে তা আসলে ইউরোপে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার বিষয়ে ক্রেমলিনের ‘স্বপ্ন’ পূরণ করবে।
গেলো সপ্তাহে ইউক্রেনের জন্য বিপুল অংকের একটি সহায়তা প্রস্তাব আটকে দেয় মার্কিন রিপাবলিকানরা। যদিও বাইডেন প্রশাসন আগেই সতর্ক করে দেয় যে, অনুমোদন দেয়া না হলে ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সহায়তা তহবিল শিগগিরই শেষ হয়ে যেতে পারে।
এই অবস্থায় ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা আটকে দেয়া রিপাবলিকানদের কার্যত তিরস্কার করে জেলেনস্কি বলেন, রাজনীতিবিদদের ‘সৈনিকের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা উচিত নয়’। তার দাবি, মার্কিন সাহায্যের তহবিল শেষ হয়ে আসায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উল্লাস করছেন।
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ ক্যাপিটল হিলে অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর কারণে অনুপ্রাণিত হয়ে থাকে তবে তা কেবল পুতিন এবং তার অসুস্থ চক্র। সহায়তায় বিলম্ব হতে দেখলে তারা তাদের স্বপ্ন সত্যি হতে দেখে।’
জেলেনস্কি বলেন, ‘আপনি ইউক্রেনের ওপর নির্ভর করতে পারেন এবং আমরা আশা করি ঠিক ততটাই আমরা আপনার ওপর নির্ভর করতে সক্ষম হব। পুতিনকে হারাতে হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই সফরে মঙ্গলবার জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান নেতা ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার মাইক জনসনসহ উভয় দলের কংগ্রেস নেতাদের সাথে তার দেখা করার কথা রয়েছে।
হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, জেলেনস্কির এই সফরটি ‘গুরুত্বপূর্ণ সময়ে’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং বাইডেন এটি স্পষ্ট করে দেবেন যে, ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে তিনি তার প্রতিশ্রুতির ওপর ‘অটল’ রয়েছেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধানের সাথেও দেখা করবেন জেলেনস্কি। মূলত সর্বাত্মক যুদ্ধের মধ্যেও দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে চান ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট।