আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

দুই প্রেমিকাকে স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেছেন রনি

দুই প্রেমিকাকে স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেছেন রনি

প্রেমের কারনে মানুষ কত কিছুইনা করে। সেই প্রাচিন কাল থেকেই লাইলি-মজনু, শিরি-ফরহাদ কিংবা রাধা-কৃষ্ণের প্রেম কাহিনীর মত যুগ যুগ ধরে প্রেমের অনেক কাহিনিই মঞ্চস্থ হয়ে আসছে নাকটে, মঞ্চে, টেলিভিশনে বা সিনেমায়।

বাস্তব জীবনেও এমন অনেক প্রেমের কাহিনি রয়েছে যা আলোচিত-সমালোচিত হয় প্রতিনিয়ত, ছড়িয়ে পড়ে দেশ থেকে সারা দুনিয়ায়। প্রেমের কারনে আত্ম ত্যাগের যেমন বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে তেমনি রয়েছে প্রতারনারও। তবে, ভালোবাসার স্বীকৃতি দিতে একই সাথে দুজনকে বিয়ে করে ঘরে তোলার মত দৃষ্টান্ত বোধহয় নেই তেমন নজির। ঠিক এমনই একটি ঘটনার জন্ম দিয়ে বর্তমানে ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন পঞ্চগড়ের এক যুবক। দুই প্রেমিকাকে পাশাপাশি বসিয়ে বিয়ে করেছেন রোহিনী চন্দ্র বর্মন রনি (২৫) নামের সেই যুবক। পরে একসঙ্গেই দুই বউকে ঘরেও তুলেছেন তিনি। মুহুর্তে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া তার এ ব্যাতিক্রমি বিয়ে নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকা জুড়ে। 

হাসি মুখেই দুই নববধুকে গ্রহন করেছেন রনির পরিবার। এতে খুশি এলাকাবাসীও। ঘটনাটি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষীদ্বার এলাকার। রোহিনী চন্দ্র বর্মন ওই এলাকার যামিনী চন্দ্র বর্মনের ছেলে। বুধবার রাতে রোহিনী চন্দ্র বর্মনের বাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিয়ে হয়। স্থানীয়রা জানান, একই ইউনিয়নের গাঠিয়াপাড়া এলাকার গিরিশ চন্দ্রের মেয়ে ইতি রানীর (২০) সঙ্গে রোহিনীর প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এক পর্যায়ে তারা মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন দুজনই। এরমধ্যে নতুন করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন লক্ষীদ্বার গ্রামের টোনোকিসর রায়ের মেয়ে মমতা রানীর (১৮) সঙ্গে।

প্রেমের সূত্রে মমতা রানীর সঙ্গে গত ১২ এপ্রিল রাতে দেখা করতে যান রোহিনী। সেখানে দুজনকে একত্রে দেখে ফেলেন মমতার পরিবারের লোকজন। আটকে রাখেন রোহিনীকে। পরে ১৩ এপ্রিল বিয়ের ব্যবস্থা করেন তাদের। এদিকে, রোহিনী বর্মনের বিয়ের খবর শুনে তার বাড়িতে এসে অনশন শুরু করেন ইতি রানী। পরে বুধবার (২০ এপ্রিল) রাতে রোহিনীর বাড়িতে পূণরায় আনুষ্ঠানিক ভাবে এক বরের সাথে দুই কন্যার বিয়ে একসঙ্গে সম্পন্ন হয়। 

এ বিষয়ে গতকাল শুক্রবার রোহিনী বর্মন এর সাথে তার বাড়িতে কথা হয়। তিনি বলেন, ইতি রানির সাথে  বহুদিনের সম্পর্ক তার। গোপনে মন্দিরে বিয়ের করি। মাঝে কিছুদিন কথা কাটাকাটির জেরে যোগাযোগ সেভাবে হয়নি তার সাথে। এর মধ্যেই মমতার সাথে প্রণয়।

রনি বলে, ওদের দুজনকেই ভালোবাসি তাই ওদের কারো সাথে প্রতারনা করতে পারিনি। যদিও এখনও আমি বেকার তবুও আমি আমার দ্বায়িত্ব এড়াতে পারিনি। ওদের দুজনার মত নিয়ে এবং আমাদের ৩টি পরিবারের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। একটা আয়রোজগারের পথ পেলে উপকৃত হতাম। আমাদের জন্য সবাই দোয়া ও আশির্বাদ করবেন আমরা যেন সুখী হতে পারি।   রোহিনীর বাবা যামিনী চন্দ্র বর্মন বলেন, দুইজনকে একসঙ্গে ঘরে তুলতে আমাদের আপত্তি ছিলোনা। তবে আগের বিয়ে গুলোর বিষয়ে যেহেতু জানা ছিলোনা, তাই নতুন করে আমি আবার বিয়ের আয়োজন করেছি।  

ইতি রানীর বাবা গিরিশ চন্দ্র বলেন, আমাদের কোন অভিযোগ নেই। রোহিনীর বাড়িতে আনুষ্ঠানিক বিয়েতে আমরা তিন পরিবারের লোকজনই ছিলাম।   বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিয়ের বিষয়টি আমি শুনেছি। 

 

এসআই/
 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন দুই | প্রেমিকাকে | স্ত্রী | হিসেবে | ঘরে | তুলেছেন | রনি