১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে সরকার গঠন করলেও তখনকার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন বেগবান হতে থাকে। জোরালো হতে থাকে এরশাদের পদত্যাগের দাবি। অন্যদিকে স্বৈরশাসক এরশাদ যে কোন উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেন। এভাবে চলতে থাকার এক পর্যায়ে ১৯৮৭ সালের নভেম্বর মাসে বিরোধী দলগুলো জাতীয় সংসদ থেকে একযোগে পদত্যাগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৭ নভেম্বর দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এরশাদ। ৬ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হয়।
এরপর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার প্রয়োজনে ১৯৮৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ধার্য করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পরে তা পিছিয়ে ৩ মার্চ করা হয়। এ নির্বাচনে জনগণের আগ্রহ ছিল না। একারণে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশ গ্রহণ ১৯৮৬ সালের নির্বাচন থেকে কম ছিল। তেমন কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সাজানো একটা সমন্বিত প্রতিদ্বন্দ্বী জোট গঠন করা হয়। বিরোধী দলবিহীন সেই নির্বাচনে একতরফাভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে জাতীয় পার্টি।
মাত্র ৮ টি দল নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টি আসন পায় ২৫১টি। এই দল ১ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার ১৩৩ টি ভোট পায়। এই হার ছিল মোট প্রদানকৃত ভোটের ৬৮.৪৪ শতাংশ।
১৯৮৮ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, জাসদ একাংশের সভাপতি আ. স. ম. আবদুর রবের নেতৃত্বে সম্মিলিত বিরোধী দল প্রতিদ্বন্দিতা করে। এই জোট ১৯টি আসনে জয়ী হয়। তারা পেয়েছিলো ৩২লাখ ৬৩হাজার ৩৪০টি ভোট। এই হার মোট প্রদানকৃত ভোটের ১২.৬৩ শতাংশ ।
৮৮’র নির্বাচনে শাহজাহান সিরাজের নেতৃত্বে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ অংশ নেয়। এই দলটি ৩ টি আসনে জয়ী হয়। তারা ভোট পায় ৩ লাখ ৯ হাজার ৬৬৬ টি। এই হার মোট প্রদানকৃত ভোটের ১.২ শতাংশ।
চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ফ্রিডম পার্টি প্রতিদ্বন্দিতা করে ২ টি আসনে জয়ী হয়। এই দলটি ভোট পায় ৮ লাখ ৫০ হাজার ২৮৪টি। এই হার ছিল ভোট প্রদানকৃত ভোটের ৩ দশকি ২৯ শতাংশ।
৮৮ নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫টি আসনে জয়লাভ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এই ২৫ জন সংসদ সদস্য ভোট পান সব মিলিয়ে ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৭ টি। এই হার মোট প্রদানকৃত ভোটের ১৩. ৫ শতাংশ।
৮৮ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার ৮শ ২৯ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ছিল ২ কোটি ৬৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯শ ৪৪ জন। আর নারী ভোটার ছিলেন ২ কোটি ৩৪ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৫ জন।
এএম/