পদত্যাগ করেছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যেই পদত্যাগ করলেন তিনি। চলতি বছরের শেষের দিকে ইউরোপীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার শীর্ষ দলে রদবদল করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবেই হয়তো প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন এলিজাবেথ।
একটি বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, বোর্ন দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে তার কাজে সাহস, প্রতিশ্রুতি এবং সংকল্প দেখিয়েছিলেন। তার উত্তরসূরি হিসেবে কাকে নিযুক্ত করা হবে তা এখনো জানা যায়নি। তবে এলিসি প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত বোর্ন এই পদেই থাকবেন।
তিনি হলেন ফ্রান্সের দ্বিতীয় নারী দীর্ঘতম দায়িত্ব পালনকারী প্রধানমন্ত্রী। ফ্রান্সের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এডিথ ক্রেসন। তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফ্রাঁসোয়া মিটাররান্ড।
সাম্প্রতি ফরাসি সরকারে রদবদলের খবর ছড়িয়ে পড়েছে। সামনের জুনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনের আগেই নিজের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। ওই একই সময়ে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের কেন্দ্রস্থল হবে ফ্রান্স।
আরও তিন বছর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ম্যাক্রোঁ। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশজুড়ে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু বিতর্কিত নীতি এবং আইনী পরাজয়ের কারণে ধারাবাহিক ভাবে যে বিক্ষোভ হয়েছে তাতে তার সরকারের অবস্থানকে আরও জোরালো করলে কিছু সংশোধণ আনা প্রয়োজন।
গত ডিসেম্বরে অভিবাসন আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে বড় ধরনের পরাজয়ের সম্মুখীন হয়। এই ঘটনাকে ম্যাক্রোঁ সরকারের জন্য ব্যাপকভাবে সংকটের মুহূর্ত হিসাবেই দেখা হয়েছে। তবে ডানপন্থী বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে ছাড় দেওয়ার পর ওই আইন শেষ পর্যন্ত পাস করা সম্ভব হয়। তবে ম্যাক্রোঁর দল এখনও ইউরোপীয় ভোটে একটি শক্তিশালী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারের রদবদলে বোর্নের পদত্যাগকে গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সরকারের বেশ কয়েকজন শীর্ষ ব্যক্তি তাকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রান্সের ৩৪ বছর বয়সী শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল হয়তো পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তাকে দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি হবেন ফ্রান্সের সর্বকনিষ্ঠ এবং প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী।
৩৭ বছর বয়সী সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু এবং দেশটির সাবেক কৃষিমন্ত্রী জুলিয়েন ডেনরম্যান্ডিকেও এই পদের জন্য সম্ভাব্য বিকল্প হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।